দীর্ঘ ৯ বছর মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল অভিনেতা সালমান খান ও সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিংয়ের। ২০২৩ সালে এ বিরোধের অবসান ঘটে। যদিও এ নিয়ে কখনো কথা বলতে দেখা যায়নি সালমান খানকে। তবে এবার সালমান খান এই বিরোধ অবসানের কথা স্বীকার করলেন এবং নিজের ভুল স্বীকার করলেন।  

বিতর্কিত টিভি রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’। বরাবরের মতো এ শোয়ের উনিশতম আসরও সঞ্চালনা করছেন সালমান খান। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন গায়ক অরিজিৎ সিং। সেখানে প্রসঙ্গটি তুলেন আরেক অতিথি কমেডিয়ান রবি গুপ্তা।

আরো পড়ুন:

সালমানের খামারবাড়িতে কী হয়, ফাঁস করলেন অভিনেতা

৫৮ বছর বয়সে বাবা হলেন আরবাজ

এ পরিস্থিতিতে সালমান খান বলেন, “অরিজিৎ আর আমি ভালো বন্ধু। ওটা একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আর সেটা আমার দিক থেকেই হয়েছিল। এরপর ও আমার জন্য গানও গেয়েছে। ‘টাইগার থ্রি’ সিনেমার জন্য গেয়েছে, এখন ‘ব্যাটল অব গালওয়ান’ সিনেমার জন্য গান করছে অরিজিৎ।”

২০১৪ সালে একটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সালমানের সঙ্গে অরিজিতের ঝামেলার সূত্রপাত। অনুষ্ঠানটি সালমানের সঙ্গে সঞ্চালনা করছিলেন রীতেশ দেশমুখ। অরিজিতের ক্যারিয়ার তখন গোড়ার দিকে। একটি গানের সম্পাদনার কাজ নিয়ে কলকাতায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি। টানা ১২-১৩ ঘণ্টা কাজের পর মুম্বাই উড়ে যান অরিজিৎ। হোটেলে না গিয়েই সোজা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে পৌঁছান। 

পুরস্কার নিতে অরিজিৎ যখন মঞ্চে যান, তখন তার পায়ে ছিল চপ্পল, পরনে ছিল ক্যাজুয়াল শার্ট। ঘুম চোখে মঞ্চে উঠার পর সালমান স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রশ্ন করেন, “ঘুমিয়ে গিয়েছিলে?” জবাবে অরিজিত মজা করে বলে বসেন, “কী করব, আপনারা ঘুম পাড়িয়ে দিলেন।” অরিজিতের এ জবাব সহজভাবে নেননি সালমান। বরং তার মনে হয়েছিল অরিজিৎ তার সঞ্চালনা নিয়ে বাঁকা জবাব দিয়েছেন। আর তাতেই অসম্মানিত বোধ করেছিলেন ‘দাবাং’খ্যাত সালমান।

এমনকী সেদিন ক্যামেরার সামনেও সেই অভিব্যক্তি লুকিয়ে রাখেননি ভাইজান। সালমান পাল্টা বলেছিলেন, “এ রকম গান গাইলে লোকে ঘুমিয়েই যাবে।” এ ঘটনার পর থেকে সালমান-অরিজিতের মাঝে তৈরি হয় দূরত্ব। যদিও বিষয়টি নিয়ে সালমানের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন অরিজিৎ। কিন্তু তাতে মন গলেনি সালমানের। সর্বশেষ সব ভুলে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর সালমান খানের বাড়িতে হাজির হন জনপ্রিয় এই গায়ক। আর এবার সালমান নিজের ভুল স্বীকার করে দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত ইতি টানলেন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র স ব ক র কর অর জ ত র অর জ ৎ করল ন

এছাড়াও পড়ুন:

আয়ের চেয়ে খরচ বেশি, ১২৫ কোটি টাকা লোকসানে ডেসকো

বড় অঙ্কের লোকসানের কারণে পরপর দুই বছর শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিপরীতে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, এ বছরও কোম্পানিটি লোকসান করেছে, যা পরিমাণে ১২৫ কোটি টাকার বেশি।

গত শনিবার ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানির পর্ষদ সদস্যরা গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লোকসান করার তথ্য ও লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর শেষে ডেসকো ১২৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। তবে তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডেসকোর লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডেসকোর লোকসান ৩৮০ কোটি টাকা বা ৭৫ শতাংশের বেশি কমেছে।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি এই কোম্পানিটির বড় ধরনের লোকসানের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কোম্পানিটির আয়ের তুলনায় বেতন-ভাতাসহ প্রশাসনিক খরচ বেশি। এ ছাড়া সুদ পরিশোধসহ বড় অঙ্কের আর্থিক খরচ ও ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কোম্পানিটির।

* লোকসান ও লভ্যাংশ না দেওয়ার খবরে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৪% কমে ২১ টাকায় নামে।
* ডেসকো সর্বশেষ ২০২৩ সালে শেয়ারধারীদের ১০% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর কোম্পানিটির বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কমিশনবাবদ আয় করে ৩৫৫ কোটি টাকা। তার বিপরীতে বেতন-ভাতাসহ কোম্পানিটির প্রশাসনিক ব্যয় ছিল ৩৫৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ খরচ ছিল ৩২৫ কোটি টাকা। ওই বছর বেতন-ভাতাসহ কর্মীদের পেছনে কোম্পানিটির খরচ ছিল ২৯২ কোটি টাকা। সুদ পরিশোধসহ অন্যান্য খাত মিলিয়ে আর্থিক খরচের পরিমাণ ছিল ১৮০ কোটি টাকা। এর বাইরে ওই বছর ডলারের বিনিময়মূল্যের কারণে কোম্পানিটির ২৪৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। এসব কারণেই মূলত ডেসকোকে কয়েক বছর ধরে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই লোকসানের পরিণতি সাধারণ শেয়ারধারীদেরও ভোগ করতে হচ্ছে। কারণ, কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে দুই বছর ধরে কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না তাঁরা। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২৩ সালে শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

এদিকে লভ্যাংশ না দেওয়ায় ও লোকসানের খবরে রোববার কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এ দিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৪ শতাংশ কমে ২১ টাকায় নেমে আসে। ৩৯৭ কোটি টাকা মূলধনের এই কোম্পানির শেয়ারের ৬৭ শতাংশের মালিকানা রয়েছে সরকারের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৪ শতাংশ ও ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রায় ৯ শতাংশ শেয়ার আছে।

পরপর দুই বছর শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি মালিকানাধীন এই কোম্পানিকে আজ সোমবার থেকে দুর্বল মানের কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে আজ থেকে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি এই শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তিতেও বেশি সময় লাগবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে, তারা কারা
  • আয়ের চেয়ে খরচ বেশি, ১২৫ কোটি টাকা লোকসানে ডেসকো