সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিকে দূষিত সুন্দরবন
Published: 17th, October 2025 GMT
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন এখন সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যে বিপর্যস্ত। বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা বোতল, পলিথিন, প্যাকেট ও প্লাস্টিক সামগ্রী জমে থাকছে বনের বিভিন্ন খাল, চর ও তীরবর্তী এলাকায়। ফলে শুধু বনাঞ্চলের সৌন্দর্যই নষ্ট হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাণী ও পুরো বনের বাস্তুতন্ত্র।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। ইতোমধ্যে তারা পূর্ব সুন্দরবনের ডিমের চর ও কচিখালী এলাকায় শুরু করেছে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম।
আরো পড়ুন:
সুন্দরবনে দস্যুদের আস্তানা থেকে ৪ জেলে উদ্ধার
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বনের বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য জমে আছে। এগুলো পরিবেশ এবং বনের প্রাণীদের জন্য ভয়াবহ হুমকি।”
তিনি বলেন, “ডিমের চর ও কচিখালীর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় বনকর্মীরা চলতি মাসের শুরুতে প্লাস্টিক অপসারণ করেছেন। প্রতি মাসের প্রথম তিন দিনের যেকোনো একদিন বন বিভাগের কর্মীরা বনের অন্য এলাকাগুলোতেও প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের কাজ করবেন। এসব সংগ্রহ করা বর্জ্য খুলনায় নিয়ে রিসাইকেল করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে একদিকে বন পরিচ্ছন্ন থাকবে, অন্যদিকে পরিবেশও কিছুটা সুরক্ষিত থাকবে।”
বঙ্গোপসাগরে চলাচলকারী জাহাজ, ট্রলার ও পর্যটকবাহী নৌযান থেকে ফেলা বর্জ্যই মূলত সমুদ্রপথে ভেসে সুন্দরবনে ঢুকছে। জোয়ারের পানিতে এসব বর্জ্য মাইলের পর মাইল ছড়িয়ে পড়ে।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করা সংগঠন সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান ড.
তিনি মনে করেন, “সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। পাশাপাশি পর্যটকবাহী নৌযানগুলোতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা জরুরি।”
বন বিভাগ জানিয়েছে, সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখার এই উদ্যোগে স্থানীয় জনগণ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও পর্যটকদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এই বিশাল জীববৈচিত্র্যমণ্ডিত বনকে দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন স ন দরবন বর জ য এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ৫০ ফাঁদ ও কাঠ জব্দ
সুন্দরবনের ঢাংমারী স্টেশনের ঘাগড়ামারী ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫০টি হরিণ শিকারের ফাঁদ ও ২০ টুকরা কাঠ জব্দ করেছে বন বিভাগ। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে কুলতলী খাল সংলগ্ন জঙ্গল থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
ঢাংমারী স্টেশনের ঘাগড়ামারী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘নিয়মিত টহলের সময় জঙ্গলে সন্দেহজনক নড়াচড়া চোখে পড়ে। পরে অনুসন্ধান চালিয়ে হরিণ শিকারের জন্য পাতা ৫০টি ছিটকা ফাঁদ ও ২০ টুকরা কাঠ জব্দ করা হয়।’’
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে দুজন শিকারি ও কাঠ চোরকে শনাক্ত করা হয়েছে। বনকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তারা পূর্বে একই এলাকায় হরিণ শিকারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খেটেছিল। বনের সম্পদ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা/শহিদুল/রাজীব