বদরুদ্দীন উমর সমগ্র জীবন সর্বহারা শ্রমিক-কৃষকদের মুক্তিসংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। কমরেড লেলিনের উত্তরসূরি হিসেবে জনগণকে সংগঠিত করে পার্টি ও সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। দেশীয় ও বৈশ্বিক রাজনীতির গতিধারা, প্রবণতা বিশ্লেষণ করে জনতার মুক্তিসংগ্রামের পথনির্দেশনা দিয়েছিলেন।

আজ শনিবার পাবনা প্রেসক্লাবে লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের স্মরণসভায় এভাবে বদরুদ্দীন উমরের জীবন ও কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন তাঁর সহযোদ্ধারা।

সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, বদরুদ্দীন উমরের জীবন ও কর্ম বিশ্লেষণ করতে গেলে তাঁর সময় ও ভূমিকাকে বুঝতে হবে। তিনি সারা জীবন সর্বহারা শ্রেণির মুক্তিসংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

কমরেড লেনিনের যোগ্য অনুসারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন উল্লেখ করে ফয়জুল হাকিম বলেন, উমর শ্রমিক-কৃষক ও জাতিসত্তার জনগণকে সংগঠিত করেছেন, পার্টি ও সংগঠন গড়ে তুলেছেন এবং দেশীয়-আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংগ্রামের পথ দেখিয়েছেন। বিপ্লবী তত্ত্ব নির্মাণে তাঁর লেখা অসংখ্য গ্রন্থ আজও প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের দক্ষিণাঞ্চলের সভাপতি সজীব রায় বলেন, বদরুদ্দীন উমর সাহসের সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে, শ্রমিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছেন তিনি।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের উত্তরাঞ্চলের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, উমর ছিলেন চিন্তাবিদ ও সংগঠক—একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা আসবে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই। তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে তখনই, যখন আমরা সংগঠন গড়ে তুলে বিপ্লবী গণ–অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।

পাবনার শাহজাদপুর অঞ্চলের সংগঠক রাসেদুল হক রাসু উমরের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে এক দফার আন্দোলনের আহ্বান প্রথম তুলেছিলেন বদরুদ্দীন উমর। তাঁর ভাষায়, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে বিদায় করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন উমর।

অন্যদের মধ্যে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক ও গ্রামীণ মজুর ফেডারেশনের পাবনা অঞ্চলের সংগঠক আমজাদ হোসেন, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক আবদুস শাকুর, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের পাবনা জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন বিশ্বাস এবং জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল পাবনা অঞ্চলের সংগঠক ফারুক আহমেদ। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল উত্তর অঞ্চলের সভাপতি মজিবর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বদর দ দ ন উমর ক উন স ল র জন ত স গঠক উমর র

এছাড়াও পড়ুন:

ভোট নিয়ে জনসচেতনতায় গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাঁধা হয়েছে ৩৪টি গান

একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আগে কখনো হয়নি দেশে, ফলে মানুষের বিভ্রান্তি হতে পারে ধরে নিয়ে তা বোঝানোর উদ্যোগ নিয়েছে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর। ‘হ্যাঁ/না’ ভোট বোঝাতে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি নির্বাচনে কী করা যায়, কী করা যায় না, তা বোঝানো হবে গানে গানে।

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ বুধবার মাঠপর্যায়ের প্রচার কৌশল সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিতে জেলা তথ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সভায় এই তথ্য জানানো হয়।

এ সভায় বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন বা গ্রাম পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে অবহিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তথ্য কর্মকর্তারা এই চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করবেন বলেই তিনি আশাবাদী।

অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় করে ৩৪টি গান প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলো আঞ্চলিক ভাষায় গেয়ে নির্দিষ্ট অঞ্চলে পরিবেশন করা হবে। গ্রামের হাটবাজারে কেমন করে ‘হ্যাঁ/না’ ভোট দিতে হয়, তার ডেমো জনগণকে দেখানো হবে।

ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এই সভায় মাঠপর্যায়ের কৌশল সম্পর্কে দিকনির্দেশনা পেতে যুক্ত হন অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের ৬৮টি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে জনমুখী ও উদ্ভাবনী প্রচার কৌশল নিতে জেলা তথ্য কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন মাহবুবা ফারজানা। আজ থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার জন্য জেলা তথ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

তথ্যসচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী, অতীতের সব নির্বাচনের চেয়ে স্বতন্ত্র ও অভূতপূর্ব নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী নির্বাচন। এ নির্বাচনে জেলা তথ্য অফিসগুলো ব্যাপক জনসংযোগ বা জনমত গঠনের মূল দায়িত্ব পালন করবে।

নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে কাজ করবে বলে জানান সচিব মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, গুজব ও ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য পিআইবির নেতৃত্বে বাংলা ফ্যাক্টের সঙ্গে তথ্য কর্মকর্তাদের সংযোগ স্থাপন করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তথ্য কর্মকর্তাদের একটি ইনোভেটিভ টিম হিসেবে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গেও সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম, যুগ্ম সচিব মাহফুজা আখতার, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন এবং সৈয়দ এ মু’মেন বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোট নিয়ে জনসচেতনতায় গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাঁধা হয়েছে ৩৪টি গান
  • হলো না ছাপা ধর্মেন্দ্রর কবিতার বই, আফসোস হেমার