ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় অভিনয় করেন আবুল হায়াত। ১৯৭২ সালে কালজয়ী এই সিনেমার শুটিং শুরু হয়। ছবিটির প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান। গতকাল ৪ নভেম্বর ছিল ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই বছর আগে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রথম আলোকে শোনান আবুল হায়াত। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো

প্রথমে বলতে হয়, প্রথম সিনেমা হিসেবে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে কাজ করার খবরে বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। সেই ১৯৬৮ সাল থেকে ‘রক্তকরবী’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে হাসান ইমাম ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক। তাঁর কারণেই ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ। ১৯৭২ সালে হাসান ভাই প্রস্তাব দিলেন, সিনেমায় অভিনয় করব কি না। আমি তো লাফিয়ে উঠলাম। ঋত্বিকবাবুর নাম শুনে তো আমি আরও বেশি উত্তেজিত। তিনি আমাকে এফডিসিতে ডাকলেন। সেখানে অন্য দৃশ্যের কাজ চলছিল। এফডিসিতে আমাকে নিয়ে গিয়ে মাথায় চুল লাগিয়ে মেকআপ দিয়ে টেস্ট করে ঋত্বিকবাবুর সামনে নেওয়া হলে একসময় বললেন, ‘চুলটুল লাগবে না। এমনিতেই তোমারে জমিদারের মতো লাগতেছে। তুমি এমনিতেই পাস।’ স্মৃতিটা আজও ভুলিনি।

আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচায়। আমি, গোলাম রাব্বানী ভাই, দিলীপ চক্রবর্তী—আমাদের নাটকের সঙ্গী, তিনজন মিলে গেলাম। ভোর পাঁচটায় ঢাকা থেকে নিয়ে গেছে ইউনিটের গাড়িতে করে। ঢাকা থেকে আরিচা পর্যন্ত যেতে তখন তিনটা ফেরি ছিল। গিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইলাম। সারা দিন ওয়েট করলাম। আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, এ-ই হচ্ছে তোমার সিন। ওই হচ্ছে তোমার সিন। এসব করতে করতে সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা।’ আমার তো তখন মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। ছুটি নিয়ে গেছি। এক দিনের ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে আরেক দিন! অনেক হাতেপায়ে ধরে বললাম, আমাকে মাফ করে দেন।

আবুল হায়াত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে কাজ করাটা সারা জীবন মনে রাখার মতো স্মৃতি: আবুল হায়াত

ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় অভিনয় করেন আবুল হায়াত। ১৯৭২ সালে কালজয়ী এই সিনেমার শুটিং শুরু হয়। ছবিটির প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান। গতকাল ৪ নভেম্বর ছিল ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই বছর আগে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রথম আলোকে শোনান আবুল হায়াত। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো

প্রথমে বলতে হয়, প্রথম সিনেমা হিসেবে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে কাজ করার খবরে বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। সেই ১৯৬৮ সাল থেকে ‘রক্তকরবী’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে হাসান ইমাম ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক। তাঁর কারণেই ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ। ১৯৭২ সালে হাসান ভাই প্রস্তাব দিলেন, সিনেমায় অভিনয় করব কি না। আমি তো লাফিয়ে উঠলাম। ঋত্বিকবাবুর নাম শুনে তো আমি আরও বেশি উত্তেজিত। তিনি আমাকে এফডিসিতে ডাকলেন। সেখানে অন্য দৃশ্যের কাজ চলছিল। এফডিসিতে আমাকে নিয়ে গিয়ে মাথায় চুল লাগিয়ে মেকআপ দিয়ে টেস্ট করে ঋত্বিকবাবুর সামনে নেওয়া হলে একসময় বললেন, ‘চুলটুল লাগবে না। এমনিতেই তোমারে জমিদারের মতো লাগতেছে। তুমি এমনিতেই পাস।’ স্মৃতিটা আজও ভুলিনি।

আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচায়। আমি, গোলাম রাব্বানী ভাই, দিলীপ চক্রবর্তী—আমাদের নাটকের সঙ্গী, তিনজন মিলে গেলাম। ভোর পাঁচটায় ঢাকা থেকে নিয়ে গেছে ইউনিটের গাড়িতে করে। ঢাকা থেকে আরিচা পর্যন্ত যেতে তখন তিনটা ফেরি ছিল। গিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইলাম। সারা দিন ওয়েট করলাম। আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, এ-ই হচ্ছে তোমার সিন। ওই হচ্ছে তোমার সিন। এসব করতে করতে সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা।’ আমার তো তখন মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। ছুটি নিয়ে গেছি। এক দিনের ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে আরেক দিন! অনেক হাতেপায়ে ধরে বললাম, আমাকে মাফ করে দেন।

আবুল হায়াত

সম্পর্কিত নিবন্ধ