ওয়াটসন যোগ দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে
Published: 13th, November 2025 GMT
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনকে আসন্ন আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। তিনি কাজ করবেন নতুন প্রধান কোচ অভিষেক নায়ার ও পরামর্শদাতা ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে।
জানা গেছে, কেকেআরের কোচিং স্টাফে এবার বড় রদবদল এসেছে। দলটি গত মৌসুমে সপ্তম স্থানে শেষ করার পর নতুন করে সাজানো হয়েছে পুরো সেটআপ। ওয়াটসনের পাশাপাশি নিউ জিল্যান্ডের সাবেক গতিময় বোলার টিম সাউদিও এবার যুক্ত হচ্ছেন কোচিং প্যানেলে। গত ছয় মাস ধরে সাউদি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলার পাশাপাশি ইংল্যান্ড দলের পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচ জিতে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ নিউ জিল্যান্ডের
আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত রানার
ওয়াটসন বলেন, “এমন একটি ঐতিহ্যবাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ হতে পারা আমার জন্য দারুণ সম্মানের। আমি সবসময় কেকেআর সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ও দলের উৎকর্ষের প্রতি অঙ্গীকারকে শ্রদ্ধা করি। কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। লক্ষ্য একটাই- কলকাতায় আরেকটি শিরোপা ফিরিয়ে আনা।”
কেকেআরের সঙ্গে এটিই ওয়াটসনের দ্বিতীয় কোচিং দায়িত্ব আইপিএলে। এর আগে তিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রধান কোচ রিকি পন্টিংয়ের সহকারী ছিলেন ২০২২ ও ২০২৩ মৌসুমে। সম্প্রতি তিনি মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি) তিন মৌসুম ধরে কাজ করা সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নসের প্রধান কোচের পদ ছাড়েন। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি চেয়েছিল তিনি পূর্ণকালীন দায়িত্বে থাকুন। তবে ওয়াটসন নিজের সম্প্রচার ও অন্যান্য কোচিং কমিটমেন্টের কারণে সেই প্রস্তাব নেননি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অন্যতম সফল খেলোয়াড় হিসেবে খ্যাত ওয়াটসন আইপিএল, বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) ও পিএসএল- সব জায়গাতেই শিরোপাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে উদ্বোধনী আসরে শিরোপা জয়ের পথে তিনি ছিলেন সেই মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়। পরে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএল ক্যারিয়ার শেষ করেন তিনি। ২০১৮ সালে চেন্নাইয়ের শিরোপাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ওপেনার ওয়াটসন। ১৫ ইনিংসে করেন ৫৫৫ রান, যা দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এবং ফাইনালে এক দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও করেন।
এর আগে তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ২০১৬ ও ২০১৭ মৌসুমে খেলেছিলেন।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে রাষ্ট্রপতির সই
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’-এর গেজেট প্রকাশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
আরো পড়ুন:
সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা
ইউনূস সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা চলা শুরু করেছে: নাসীরুদ্দীন
এর মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার ও গণভোট আয়োজনের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো বলে জানিয়েছে আইন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ অনুমোদন দিয়েছে সরকার। জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে। জনগণই নির্ধারণ করবেন, আমরা কোন পথে এগোব?”
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ না থাকলে জাতি এক মহাবিপদের মুখে পড়বে। প্রায় দেড় যুগ ধরে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। এখন তারা নতুন গণতান্ত্রিক সূচনার অপেক্ষায়।
জুলাই সনদের পটভূমি
গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল বহুল প্রত্যাশিত ‘জুলাই সনদ’-এ স্বাক্ষর করে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও তাতে স্বাক্ষর করেন।
এই সনদের মূল লক্ষ্য ছিল— সংবিধান সংস্কার, নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নির্ধারণ এবং জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেয়, যার একটি এখন রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ও গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আইনি রূপ পেল।
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও গণভোট আয়োজনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
ভাষণে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে যে ঐক্য দেশবাসী দেখিয়েছিল, আমরা যেন তা লঘু বিবাদে ভেঙে না ফেলি। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবিক ন্যায়বিচারের লড়াই এখনই শেষ হয়নি।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে, এমনটাই সরকারের পরিকল্পনা।
রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে ‘জুলাই সনদ’ এখন আইনি রূপ পেল, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম গণভোটভিত্তিক সংবিধান সংস্কারের পথ খুলে দিচ্ছে।
ঢাকা/এএএম/রফিক