এক নজিরবিহীন কূটনৈতিক ঘটনা হিসেবে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একসময় যা অকল্পনীয় বলে মনে হতো, সেই বৈঠক এখন বাস্তবতা।

আল-শারা একসময় আল-কায়েদার কমান্ডার ছিলেন। তাঁকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে ওয়াশিংটন তাঁর মাথার এক কোটি ডলার দামও ঘোষণা করেছিল। সেই শারাই সোমবার ট্রাম্পের পাশে দাঁড়ালেন। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ার স্বাধীনতার পর (১৯৪৬ সালের পর থেকে) প্রথমবারের মতো দেশটির কোনো প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউস সফর হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিল এ ঘটনা।

বৈঠকে আল-শারার নিজস্ব অগ্রাধিকারের বিষয়ও ছিল। তিনি চান, যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। নিষেধাজ্ঞাগুলো আসাদ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।

এ সফর এমন এক সময় হয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা আরও ১৮০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সফরে ট্রাম্প–শারা বৈঠকের একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প মজা করে আল-শারাকে এক বোতল পারফিউম উপহার দিচ্ছেন। নিজেই সেটি তাঁর গায়ে ছিটিয়ে বলছেন, ‘এটাই সেরা ঘ্রাণ…আরেকটা তোমার স্ত্রীর জন্য।’ এরপর হঠাৎ হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কয়জন স্ত্রী?’

এ সময় আল-শারা জবাব দেন, ‘একজন’। তখন হাসির রোল পড়ে। ট্রাম্প তখন ঠাট্টা করে বলেন, ‘তুমি জানো না, ভবিষ্যতে কী হয়!’

আরও পড়ুনট্রাম্প–শারা বৈঠক শেষে ঘোষণা: আইএসবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া১১ নভেম্বর ২০২৫

সফরের সময় আল-শারা জানান, তিনি ট্রাম্পকে সিরিয়ার প্রাচীন ইতিহাসের প্রতীকী কিছু উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে ছিল প্রাচীন নিদর্শনের প্রতিলিপি, যেমন ইতিহাসের প্রথম বর্ণমালা, প্রথম ডাকটিকিট, সংগীতের প্রথম নোট, প্রথম শুল্ক করের তালিকা।

আমাদের সবারই জীবনে কঠিন সময় গেছে। কিন্তু তাঁরটা (আল–শারা) সত্যিই কঠিন ছিল।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

আল-শারার অস্থির অতীত প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সবারই জীবনে কঠিন সময় গেছে। কিন্তু তাঁরটা সত্যিই কঠিন ছিল।’ তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, যদি তোমার অতীতটা এমন না হতো, তবে হয়তো আজকের সুযোগও পেতে না।’

৪৩ বছর বয়সী শারা গত বছর ক্ষমতায় আসেন। তাঁর ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঝোড়োগতির অভিযান চালিয়ে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদকে উৎখাত করে।

বৈঠকে আল-শারার নিজস্ব অগ্রাধিকারের বিষয়ও ছিল। তিনি চান, যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। নিষেধাজ্ঞাগুলো আসাদ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।

৪৩ বছর বয়সী শারা গত বছর ক্ষমতায় আসেন। তাঁর ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঝোড়োগতির অভিযান চালিয়ে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে।

বর্তমানে ‘সিজার অ্যাক্ট’–এর অধীন আরোপিত ওই নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসন সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে। তবে এটি পুরোপুরি বাতিল করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে।

আরও পড়ুন‘সন্ত্রাসী’ তকমা কাটানোর পরদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন আল–শারা০৯ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার নাম ‘সন্ত্রাসী’ তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র০৭ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর প ত আল শ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘কয়জন স্ত্রী’—শারার গায়ে পারফিউম ছিটিয়ে ট্রাম্পের প্রশ্ন, কী জবাব পেলেন

এক নজিরবিহীন কূটনৈতিক ঘটনা হিসেবে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একসময় যা অকল্পনীয় বলে মনে হতো, সেই বৈঠক এখন বাস্তবতা।

আল-শারা একসময় আল-কায়েদার কমান্ডার ছিলেন। তাঁকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে ওয়াশিংটন তাঁর মাথার এক কোটি ডলার দামও ঘোষণা করেছিল। সেই শারাই সোমবার ট্রাম্পের পাশে দাঁড়ালেন। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ার স্বাধীনতার পর (১৯৪৬ সালের পর থেকে) প্রথমবারের মতো দেশটির কোনো প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউস সফর হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিল এ ঘটনা।

বৈঠকে আল-শারার নিজস্ব অগ্রাধিকারের বিষয়ও ছিল। তিনি চান, যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। নিষেধাজ্ঞাগুলো আসাদ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।

এ সফর এমন এক সময় হয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা আরও ১৮০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সফরে ট্রাম্প–শারা বৈঠকের একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প মজা করে আল-শারাকে এক বোতল পারফিউম উপহার দিচ্ছেন। নিজেই সেটি তাঁর গায়ে ছিটিয়ে বলছেন, ‘এটাই সেরা ঘ্রাণ…আরেকটা তোমার স্ত্রীর জন্য।’ এরপর হঠাৎ হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কয়জন স্ত্রী?’

এ সময় আল-শারা জবাব দেন, ‘একজন’। তখন হাসির রোল পড়ে। ট্রাম্প তখন ঠাট্টা করে বলেন, ‘তুমি জানো না, ভবিষ্যতে কী হয়!’

আরও পড়ুনট্রাম্প–শারা বৈঠক শেষে ঘোষণা: আইএসবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া১১ নভেম্বর ২০২৫

সফরের সময় আল-শারা জানান, তিনি ট্রাম্পকে সিরিয়ার প্রাচীন ইতিহাসের প্রতীকী কিছু উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে ছিল প্রাচীন নিদর্শনের প্রতিলিপি, যেমন ইতিহাসের প্রথম বর্ণমালা, প্রথম ডাকটিকিট, সংগীতের প্রথম নোট, প্রথম শুল্ক করের তালিকা।

আমাদের সবারই জীবনে কঠিন সময় গেছে। কিন্তু তাঁরটা (আল–শারা) সত্যিই কঠিন ছিল।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

আল-শারার অস্থির অতীত প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সবারই জীবনে কঠিন সময় গেছে। কিন্তু তাঁরটা সত্যিই কঠিন ছিল।’ তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, যদি তোমার অতীতটা এমন না হতো, তবে হয়তো আজকের সুযোগও পেতে না।’

৪৩ বছর বয়সী শারা গত বছর ক্ষমতায় আসেন। তাঁর ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঝোড়োগতির অভিযান চালিয়ে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদকে উৎখাত করে।

বৈঠকে আল-শারার নিজস্ব অগ্রাধিকারের বিষয়ও ছিল। তিনি চান, যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। নিষেধাজ্ঞাগুলো আসাদ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।

৪৩ বছর বয়সী শারা গত বছর ক্ষমতায় আসেন। তাঁর ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঝোড়োগতির অভিযান চালিয়ে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে।

বর্তমানে ‘সিজার অ্যাক্ট’–এর অধীন আরোপিত ওই নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসন সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে। তবে এটি পুরোপুরি বাতিল করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে।

আরও পড়ুন‘সন্ত্রাসী’ তকমা কাটানোর পরদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন আল–শারা০৯ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার নাম ‘সন্ত্রাসী’ তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র০৭ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ