কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র ফরিদপুরে ভাঙ্গায় ঢাকা–খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সোয়াদী ও পুলিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা অবস্থান নেন।

এতে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। এ ছাড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাধবপুর এলাকায়ও টায়ারে আগুন দেওয়া হয়েছে।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

রোকিবুজ্জামান বলেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাধবপুরে অবরোধকারীরা অবরোধ করতে পারেননি। তবে ভাঙ্গার পুলিয়া এলাকায় অবরোধ করা হলেও সেটি এক ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। পুলিশ অবরোধ সরিয়ে নিতে নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। অবরোধকারীরা সড়ক ও এর আশপাশেই অবস্থান করেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সেনাসদস্যরা পুখড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেন। সকাল ১০টার দিকে ভাঙ্গার মনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধকারীদের সরিয়ে দেন পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা। তবে সোয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধকারীরা মহাসড়কেই ছিলেন।

ফরিদপুরের পরিবহনমালিক ও শ্রমিক পক্ষ আজ সকাল থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

গোল্ডেন লাইন বাস কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সকাল ছয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

ফরিদপুর বাসমালিক গ্রুপের নেতা কামরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বাস চালাতে চাই। তবে যাত্রী না পেলে তো বাস চালানো সম্ভব নয়।’

ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের সোয়াদী এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করা হয়েছে। আজ সকাল সাতটার দিকে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা, চলছে তল্লাশি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে ও  বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে চলতি মানুষদের তল্লাশি করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সড়কে টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে ঢাকার সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে। তবে সকাল থেকে সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার দাপট থাকলেও সীমিত পরিসরে চলছে গণপরিবহন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও উপস্থিতির হার কিছুটা কম। 

ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সাঁজোয়া যানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়া, যেকোনো অপতৎপরতা মোকাবিলায় সড়কে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির নেতা–কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। 

সকাল থেকে রামপুরা, খিলগাঁও, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল ও পল্টন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। 

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে করা একটি মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশ এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার অন্তত তিন দিন আগে থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে ঢাকা ও এর আশেপাশে বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসব নাশকতা ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তবে এ অবস্থায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া এড়িয়ে চলছেন। তবে মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২০টি চোরাগোপ্তা হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ব্যাংক, ১০ বাস, এক ট্রেন ও এক অটোরিকশায় আগুন, পাঁচ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও দুই স্থানে পেট্রোল বোমা হামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরা এলাকার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের প্রধান কার্যালযয়ের সামনে দায়িত্বর রামপুরা ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এ কে এম নছরুত হাসান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘সকাল থেকে কোনা ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে সড়কে যানচলাচল একটু কম রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ দিনের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক জানান, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠবো।’

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ