দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল সমঝোতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা সুদূরপরাহত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে; কিন্তু তা হয়নি।

সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ধার্য করার প্রাক্কালে সেই পুরোনো দিনের মতোই লকডাউনের নামে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কা, সংশয় তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ রকম অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এটি হচ্ছে দুই ভাবে। একটি হলো সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, আরেকটি হলো নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুনস্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়২৭ মিনিট আগে

এ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল, সরকার একটি কঠিন বার্তা দেবে, যাতে সাধারণ জনগণ আস্থা পাবে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ভয় পাবে। কিন্তু সে জায়গায় সরকার কঠিন কোনো বার্তা দিতে পারেনি। এ রকম হলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সমাজে যে দুর্বৃত্তরা রয়েছে, তারাও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। হত্যা, খুন, গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা, বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা নানা জায়গায় ঘটে চলেছে। বিগত দিনে স্বৈরাচারী সরকার যে রকম কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিত, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসছে। এ ধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহী করে তোলে।

এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে।

নূর খান: মানবাধিকারকর্মী

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক পর স থ ত এ রকম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আমিনবাজারে পুলিশের চেকপোস্ট, যানচলাচল স্বাভাবিক

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশপথ আমিনবাজারে চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা জেলা পুলিশের এই তল্লাশি কার্যক্রম চলতে দেখা যায়। এর আগে, গতকাল বুধবারও দিনব্যাপী এ তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে এই চেকপোস্ট বসানো হয়।

সকাল থেকে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের মতো সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। গণপরিবহনসহ ব্যক্তিগত পরিবহনও চলছে স্বাভাবিকভাবেই। যদিও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গণপরিবহন কম দেখা যায়।

সরেজমিনে আমিনবাজারে পরিচালিত পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী বিভিন্ন গণপরিবহন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ সড়কে চলাচলকারী পথচারীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগসহ মালপত্র তল্লাশি করছে পুলিশ। এসময় যাত্রীদের গন্তব্য এবং কোথা থেকে এসেছেন সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হচ্ছে। 

গতকাল চেকপোস্টের প্রথম দিনের তল্লাশিতে যাত্রীদের মুঠোফোন ও মুঠোফোনের গ্যালারি চেক করতে দেখা গেলেও আজ এমন কিছু লক্ষ্য করা যায়নি। 

চেকপোস্ট পরিচালনায় থাকা সাভার মডেল থানার আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফয়সাল আলম বলেন, “আমাদের চেকপোস্ট কার্যক্রম চলমান আছে। কেউ যেন কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কিংবা কোনো নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সেই লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”

তবে এখন পর্যন্ত চেকপোস্ট থেকে সন্দেহভাজন কেউ আটক বা গ্রেপ্তার নেই বলেও জানান তিনি।

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে গত কয়েকদিন ধরে আমাদের পিকেট ডিউটিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা কিংবা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”

ঢাকা/সাব্বির/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ