ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা, চলছে তল্লাশি
Published: 13th, November 2025 GMT
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে ও বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে চলতি মানুষদের তল্লাশি করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সড়কে টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে ঢাকার সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে। তবে সকাল থেকে সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার দাপট থাকলেও সীমিত পরিসরে চলছে গণপরিবহন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও উপস্থিতির হার কিছুটা কম।
ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সাঁজোয়া যানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়া, যেকোনো অপতৎপরতা মোকাবিলায় সড়কে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির নেতা–কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
সকাল থেকে রামপুরা, খিলগাঁও, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল ও পল্টন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে করা একটি মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশ এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার অন্তত তিন দিন আগে থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে ঢাকা ও এর আশেপাশে বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসব নাশকতা ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তবে এ অবস্থায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া এড়িয়ে চলছেন। তবে মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২০টি চোরাগোপ্তা হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ব্যাংক, ১০ বাস, এক ট্রেন ও এক অটোরিকশায় আগুন, পাঁচ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও দুই স্থানে পেট্রোল বোমা হামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরা এলাকার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের প্রধান কার্যালযয়ের সামনে দায়িত্বর রামপুরা ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এ কে এম নছরুত হাসান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘সকাল থেকে কোনা ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে সড়কে যানচলাচল একটু কম রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ দিনের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক জানান, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠবো।’
ঢাকা/এনটি/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাস্তার পাশে তেল বিক্রি কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে। এই তেল দিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।
বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুনের ঘটনার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এমন কথা বললেন।
ট্রাইব্যুনাল, মেট্রোরেল ও রেলওয়েতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কেপিআই স্থাপনায় (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এসব আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বড় ধরনের কোনো মিছিল হচ্ছে না। বাসে আগুন ও কয়েকটা জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এগুলো যাতে আর ঘটাতে পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১৩ নভেম্বর সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থানে আছে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য তাঁরা জনগণকে অনুরোধ করছেন। সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসীরা যেন সহজে জামিন না পায়, সে জন্য তাঁরা যাঁরা জামিন দেন, তাঁদের অনুরোধ করছেন।
নির্বাচনের প্রস্তুতি সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সাড়ে ৫ লাখ আনসার, দেড় লাখ পুলিশ, এক লাখ সেনাবাহিনী, ৩৫ হাজার বিজিবি ও ৪ হাজারের মতো কোস্টগার্ড সদস্য নির্বাচনে মোতায়েন থাকবেন।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান বেগবান করা হবে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কিছু কিছু (অস্ত্র) রয়ে গেছে বাইরে। এগুলো যেন তাড়াতাড়ি উদ্ধার করা যায়, সে চেষ্টা চলছে।
মিয়ানমার থেকে মাদক আসা কিছুটা কমলেও তা আশাব্যঞ্জক না বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, গ্রামেগঞ্জে মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। মাদক নির্মূলে সবার দায়িত্ব নিতে হবে।
প্রকাশ্যে গুলির দুটি ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই দুটি ঘটনা সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে হয়েছে। জড়িতদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো সন্ত্রাসী বাইরে থেকে দেশে ঢুকতে না পারে।