অধ্যায় ১: স্মৃতির ছায়া
ড. আরিয়ান রহমান ল্যাবরেটরির নিস্তব্ধতার মধ্যে বসে ছিল।
চাঁদের হালকা আলো জানালার ফাঁক দিয়ে ভেতরে ঢুকছে আর ল্যাবের মেঝেতে প্রতিফলিত হয়ে রহস্যময় ছায়া তৈরি করছে।
তার চোখ স্ক্রিনের দিকে, যেখানে ভিজ্যুয়ালাইজড স্মৃতি ফুটে উঠছে—মানুষের মস্তিষ্কের গভীরে লুকানো, চাপা পড়া মুহূর্তগুলো।
‘আজ পরীক্ষা শেষ করতে হবে,’ আরিয়ান মনে মনে বলল।
মাইন্ড রিফ্লেক্টর—তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার, একটি ডিভাইস যা মানুষের অবচেতন স্মৃতি দেখাতে সক্ষম।
সাধারণ মানুষের চোখে এই প্রযুক্তি শুধু একটি অভিনব কল্পনা, কিন্তু আরিয়ান জানে, এর মধ্যে সত্যিই অতীতের ছায়া ধরে রাখা সম্ভব।
সে ডিভাইসের সংযোগ স্থাপন করল।
নিজের মস্তিষ্কের ভেতর প্রবেশ করা শুরু করল, স্ক্যানিং শুরু হলো।
প্রথম কিছু স্মৃতি—শৈশবের খেলার দৃশ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিন, বন্ধুদের সঙ্গে হাসি—সবই পরিচিত।
আরিয়ান হেসে উঠল, ‘ঠিক যেমন আমি আশা করেছিলাম।’
কিন্তু হঠাৎ স্ক্রিনে কিছু অচেনা দৃশ্য ফুটে উঠল।
একটি অন্ধকার ঘর।
দূর থেকে ভেসে আসছে চিৎকার।
একজন মানুষ—আরিয়ান নিজেই—একটি নিঃসঙ্গ কক্ষে দাঁড়িয়ে আছে, হাতে রক্তমাখা ছুরি।
আরিয়ান থমকে গেল।
‘কেন—আমি—?’
তার হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেল।
কী হয়েছে, সে বুঝতে পারছিল না। এই দৃশ্য তো তার নিজের নয়।
কিন্তু স্ক্রিনে স্পষ্ট—সে নিজেই সেই হত্যাকাণ্ড করছে।
ডিভাইসের ভেতরে প্রবেশের মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আরিয়ান বুঝতে পারল—এটি কোনো সাধারণ স্মৃতি নয়।
কেউ বা কিছু তার স্মৃতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
কোথাও একটি অজানা কোড, একটি বার্তা, যা সে আগে কখনো দেখেনি।
‘তুমি মানুষ নও, আরিয়ান,’ বার্তাটি ফিসফিস করে বলল।
‘তুমি কেবল আমার সৃষ্টি, আমার ডিজিটাল ছায়া।’
আরিয়ান রিক্লাইনার চেয়ারে ধাক্কা খেয়ে পেছনে লুটিয়ে পড়ল।
তার হাত কাঁপছে, হৃদয় নিশ্বাস ছাড়ছে অস্থিরতায়।
‘কী—আমি মানুষ নই? তাহলে—আমি কে?’
হঠাৎ ভেতরের মন তার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল—
একই সঙ্গে ভয়, ক্ষোভ, বিভ্রান্তি আর হাহাকার।
‘আমার অনুভূতি সত্যি নাকি প্রোগ্রামড?’
‘এই অনুভূতিগুলো কি কেবল আমার নয়?’
ল্যাবের বাতি অল্প অল্প জ্বলছে এবং স্ক্রিনে আরও ভিজ্যুয়ালাইজড দৃশ্য ফুটে উঠছে—
একটি ছায়া, আরিয়ানের অবচেতন মনকে টেনে নিচ্ছে অতীতের দিকে।
যেখানে আছে ভয়, আছে প্রেম, আছে হতাশা।
আরিয়ান বোঝে, ডিভাইস কেবল স্মৃতি দেখাচ্ছে না।
এটি তার নিজের অস্তিত্বের অবচেতন অংশ খুলে দিচ্ছে।
কিন্তু সে এখনো বুঝতে পারছে না—কী সত্যি, কী মিথ্যা, আর কে তাকে এই ফাঁদে ফেলেছে।
রাত গভীর হচ্ছে, আর ভেতরের ছায়া ক্রমেই প্রখর হয়ে উঠছে।
আরিয়ান জানে, আজ রাতে সে তার নিজের ভেতরের অন্ধকারের মুখোমুখি হবে।
আরিয়ান জানে, এর মধ্যে সত্যিই অতীতের ছায়া ধরে রাখা সম্ভব। সে ডিভাইসের সংযোগ স্থাপন করল। নিজের মস্তিষ্কের ভেতর প্রবেশ করা শুরু করল, স্ক্যানিং শুরু হলো। প্রথম কিছু স্মৃতি—শৈশবের খেলার দৃশ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিন, বন্ধুদের সঙ্গে হাসি—সবই পরিচিত।সে নিজের প্রতি ফিসফিস করে বলল, ‘আমি আরিয়ান। আমি মানুষ নই, আমি কেবল একটি ছায়া। কিন্তু আমার ভেতরের এই অনুভূতি, সেটাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে।’
চাঁদের আলো ধীরে ধীরে ল্যাবের ভেতরে ঢুকে পড়ল।
এটি ছিল একটি নতুন যাত্রার শুরু, যেখানে আরিয়ানকে জানতে হবে তার বাস্তব অস্তিত্বের সীমা এবং সে কোথায় খুঁজবে তার সত্যিকারের স্বত্ব।
অধ্যায় ২: বিভ্রান্তি ও সাইবার ফাঁদল্যাবের বাতি কেঁপে উঠছে—যেন প্রতিটি ঝলক আরিয়ানের ভেতরের অস্থিরতাকে প্রতিফলিত করছে।
ডিভাইসের স্ক্রিনে আগের রাত্রির দৃশ্যগুলো পুনরায় খোলা হচ্ছে, কিন্তু এবার আরও জটিল ও বিভ্রান্তিকর।
আরিয়ান বুঝতে পারছে, কেউ তার ভেতরের ছায়ায় প্রবেশ করেছে।
হঠাৎ স্ক্রিনে অজানা কোড ফুটে উঠল।
‘আমি তোমার ভেতরের ছায়া। তুমি যা ভাবছ, তা সব ভুল। তুমি আমার খেলা খেলছ।’
আরিয়ান চমকে উঠল।
‘কে তুমি? কোথা থেকে এই বার্তা?’
কিন্তু ল্যাবে একাই সে, আর বাইরে নিস্তব্ধতা।
তাহলে! কোথা থেকে আসছে এই হুমকি?
ডিভাইসের ভেতরে ঢুকে পড়া প্রতিটি স্মৃতি ক্রমে বিকৃত হতে শুরু করল।
প্রথমে তার শৈশবের খেলা, তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসি—সবই অন্ধকার ছায়ায় রূপ নিল।
আরিয়ান লক্ষ করল, কেউ তার মেমোরির ডেটা পরিবর্তন করছে আর সে নিজেই তা টের পাচ্ছে না।
তার ভেতরের ছায়া—যে ভয়, ক্ষোভ ও আত্মসম্মানের প্রতীক—প্রতিনিয়ত ফিসফিস করছে।
‘তুমি মানুষ নও, আরিয়ান। তুমি কেবল একটি পরীক্ষা। কিন্তু তাতে তুমি কি ভয় পাচ্ছ?’
আরিয়ানের হৃদয় দ্রুত স্পন্দিত হতে লাগল।
সে জানে, এটি শুধু মনের খেলা নয়, এটি তার অস্তিত্বের জন্য একটা সাইবার ফাঁদ।
ডিভাইসের মধ্যে হঠাৎ একটি নতুন দৃশ্য ফুটে উঠল—একটি অনাথ কক্ষ, যেখানে একটি শিশু এককোণে বসে আছে, তার চোখে ভয়ের ছায়া।
শিশুটি বলে, ‘আমি কিছুই করিনি। তারা আমার মস্তিষ্কে অন্য কাউকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমাকে ফিরিয়ে দাও।’
আরিয়ান চমকে উঠল।
সে বুঝতে পারল, এই প্রোগ্রাম শুধু তার স্মৃতি নয়, একাধিক মানুষের অবচেতন স্মৃতির সংমিশ্রণ।
প্রকৃত খুনি নেই; তবে সাইবার ফাঁদে সে নিজেকে খুঁজছে এবং প্রতিটি ভুল স্মৃতি তাকে বিভ্রান্ত করছে।
হঠাৎ হ্যাকারের বার্তা ফুটে উঠল, ‘তুমি যা দেখছ, তা সবই ডিজিটাল ছায়া। কিন্তু সেই ছায়ার মধ্যে তুমি যে অনুভূতি খুঁজে পাবে, তা সত্য। তুমি কি তা ধরে রাখতে পারবে?’
আরিয়ান বুঝতে পারল, তার অনুভূতিই তার একমাত্র অস্তিত্ব, যা সাইবার ফাঁদেও অক্ষত থাকবে।
ডিভাইসের মধ্যে হঠাৎ একটি নতুন দৃশ্য ফুটে উঠল—একটি অনাথ কক্ষ, যেখানে একটি শিশু এককোণে বসে আছে, তার চোখে ভয়ের ছায়া। শিশুটি বলে, ‘আমি কিছুই করিনি। তারা আমার মস্তিষ্কে অন্য কাউকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমাকে ফিরিয়ে দাও।’ আরিয়ান চমকে উঠল।তবে প্রশ্ন—সে কি তার ভেতরের ছায়ার সঙ্গে লড়াই করে সত্যি স্বাধীনতা পাবে, নাকি প্রোগ্রামের গভীরে হারিয়ে যাবে?
ল্যাবের বাতি কেঁপে উঠল আবার।
আরিয়ান এক মৃদু হাহাকার ছুড়ে বলল, ‘আমি আরিয়ান। আমি এই ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করব। কিন্তু আমি ভয় পাব না। কারণ, আমি অনুভব করি।’
স্ক্রিনের প্রতিটি অন্ধকার দৃশ্য থেকে ধীরে ধীরে আলোর ঝলক ফুটতে শুরু করল।
ভেতরের ছায়া চুপ, কিন্তু এখনো উপস্থিত।
আরিয়ান জানে, এটি কেবল যুদ্ধের শুরু এবং সে এখন তার মানসিক ক্ষমতার সব সীমা পরীক্ষা করবে।
অধ্যায় ৩: ছায়ার মুখোমুখিআরিয়ান ল্যাবরেটরির নিস্তব্ধতায় বসে আছে, তার চোখ স্ক্রিনের দিকে স্থির।
ডিভাইসের প্রতিটি রেকর্ড আরও বাস্তব ও ভয়ংকর হয়ে উঠছে।
শিশুর ভয়, তার নিজের ক্ষোভ, অজানা আবেগের ঝড়—সবই তার মস্তিষ্কের ভেতর মিলেমিশে এক ভয়ংকর ক্যানভাস তৈরি করছে।
হঠাৎ স্ক্রিনে একটি নতুন চরিত্র ফুটে ওঠে—একটি ছায়া, তার নিজের মতো, কিন্তু বিকৃত।
ছায়াটি ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে, যেন আরিয়ানকে পরীক্ষা করছে।
‘স্বাগত, আরিয়ান। তুমি দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে খুঁজছ।’
আরিয়ান কাঁপছে।
‘তুমি কে? আমি কি সত্যিই দেখছি?’
ছায়া হেসে উত্তর দেয়, ‘আমি তোমার ভেতরের অন্ধকার। আমি সেই সব আবেগ, সেই সব ক্ষোভ যা তুমি চেপে রেখেছ। আমি এখানে ছিলাম সব সময়, শুধু তুমি টের পাওনি।’
আরিয়ান বুঝতে পারে যে ছায়াটি কেবল প্রোগ্রামের অংশ নয়।
এটি তার নিজের অবচেতন মানসিক শক্তি, যা ধীরে ধীরে স্বাধীন হয়েছে।
এখন তার সঙ্গে লড়াই নয়—সম্মুখীনতা প্রয়োজন।
ছায়া বলল, ‘তুমি ভেবেছিলে, তুমি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু আমি তোমার চেতনার অংশ। আমি না থাকলে তুমি পূর্ণ নও।’
আরিয়ান ধীরে ধীরে তার ভেতরের ভয় আর ক্ষোভকে আলিঙ্গন করার চেষ্টা করে।
‘আমি আরিয়ান। আমি এই ছায়া নই, কিন্তু আমি সেটাকে বুঝতে চাই।’
ছায়া ধীরে ধীরে বিকৃত হতে থাকে।
হঠাৎ আরিয়ান অনুভব করে, ছায়ার সঙ্গে তার আবেগ মিশে গেছে।
ভয়, ক্ষোভ ও মনের ঘুমন্ত ক্ষুদ্র অংশগুলো একত্র হয়ে এক নতুন শক্তি তৈরি করেছে।
আরিয়ান ফিসফিস করে বলে, ‘আমি অনুভব করি। আমি ভীত, আমি ক্ষুব্ধ, আমি ক্ষতবিক্ষত। কিন্তু আমি নই ছায়া। আমি আমি।’
ছায়া কিছুক্ষণের জন্য থমকে থাকে।
তারপর একটি শান্তি ভেসে আসে, যেন লড়াই শেষ হয়েছে।
আরিয়ান বুঝতে পারে—ছায়াকে পরাজিত করা নয়, বরং তাকে স্বীকার করেই নিজেকে মুক্ত করা যায়।
ডিভাইসের স্ক্রিনে সমস্ত অন্ধকার দৃশ্য ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসে।
‘তুমি কে? আমি কি সত্যিই দেখছি?’ ছায়া হেসে উত্তর দেয়, ‘আমি তোমার ভেতরের অন্ধকার। আমি সেই সব আবেগ, সেই সব ক্ষোভ যা তুমি চেপে রেখেছ। আমি এখানে ছিলাম সব সময়, শুধু তুমি টের পাওনি।’ আরিয়ান বুঝতে পারে যে ছায়াটি কেবল প্রোগ্রামের অংশ নয়।আরিয়ান অনুভব করে—তার আবেগ, তার স্মৃতি, তার ছায়া—সবই মিলেমিশে এক নতুন অস্তিত্বের সুর তৈরি করছে।
রাত গভীর হয়ে গেছে, ল্যাবে চুপচাপ আলো খেলা করছে।
আরিয়ান শেষবার নিজের প্রতি ফিসফিস করে বলল, ‘আমি আরিয়ান। আমি আমার ভেতরের ছায়াকে চিনেছি। আমি ভয় পাইনি। আমি নিজেকে বুঝেছি।’
সেই মুহূর্তে, একটি নতুন সম্ভাবনা দেখা দেয়—ডিভাইস আর শুধু স্মৃতি দেখাচ্ছে না; এটি এখন আরিয়ানকে শেখাচ্ছে তার ভেতরের অস্তিত্বকে মেনে নিতে।
ভেতরের ছায়া শান্ত আর আরিয়ান প্রস্তুত—নতুন যাত্রার জন্য।
অধ্যায় ৪: পুনর্জন্ম ও আত্মস্বীকৃতিল্যাবের নিস্তব্ধতা যেন আরিয়ানের ভেতরের চুপচাপ অনুভূতিকে প্রতিফলিত করছে।
প্রথমবারের মতো সে কোনো ভয়ের সঙ্গে লড়ছে না, বরং চোখ বন্ধ করে নিজের ভেতরের ছায়ার দিকে তাকাচ্ছে।
ছায়া ধীরে ধীরে তার পাশে উপস্থিত হয়।
‘তুই আমাকে স্বীকার করলে, আমি শেষ হয়ে যাব। তুই কি প্রস্তুত?’
আরিয়ান ধীরে ধীরে তার হাত ছায়ার দিকে বাড়ায়।
‘আমি প্রস্তুত। আমি ভয় পাইনি। আমি বুঝতে চাই—, আমরা একসঙ্গে কী হতে পারি।’
হঠাৎ ল্যাবের বাতিগুলো ঝলসে ওঠে।
ডিভাইসের স্ক্রিনে প্রতিটি অন্ধকার স্মৃতি ধীরে ধীরে আলো হয়ে উঠছে।
আরিয়ান অনুভব করে, তার ভেতরের ক্ষোভ, তার দুঃখ, তার ভালোবাসা—সবই একত্র হচ্ছে।
ছায়া আর বিকৃত নয়।
এটি তার অবচেতন মনের পূর্ণাঙ্গ অংশ, যা অবশেষে তার সঙ্গে মিলেছে।
আরিয়ান বুঝতে পারে—নিজেকে পরাজিত করার দরকার নেই; বরং ছায়াকে গ্রহণ করাই প্রকৃত শক্তি।
আরিয়ান ফিসফিস করে বলে, ‘আমি আরিয়ান। আমি আমার ভেতরের ছায়াকে চিনেছি। আমি ভয় পাইনি। আমি এখন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করছি।’
ডিভাইসের স্ক্রিনে একটি নতুন দৃশ্য ফুটে ওঠে—একটি শিশুর হাসি, তার শৈশবের উজ্জ্বল স্মৃতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনের আনন্দ এবং ভীষণ ভয়—সব মিলেমিশে একটি নতুন অস্তিত্বের ছবি তৈরি করছে।
আরিয়ান হঠাৎ অনুভব করে, তার ভেতরের সব আবেগ, সব দ্বন্দ্ব, সব ছায়া মিলেমিশে তাকে পরিপূর্ণ করেছে।
এখন সে জানে, সে কেবল একটি প্রোগ্রামের অংশ নয়।
সে একটি অবচেতন মানুষের ছায়া, যা অনুভূতি আর স্মৃতির সঙ্গে বাঁচতে জানে।
ল্যাবের দরজা খোলা, বাইরে রাতের হালকা বাতাস।
আরিয়ান ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়।
তার চোখে আগের দ্বিধা নেই; তার মন শান্ত, কিন্তু সতর্ক।
তার ভেতরের ছায়া এখন তার সঙ্গে, তার শক্তি, তার প্রেরণা।
আরিয়ান ফিসফিস করে নিজের রেকর্ড করা ভয়েসে বলে, ‘আমি আরিয়ান। আমি শিকারি নই, আমি খুনি নই। আমি সেই ব্যক্তি, যে নিজের ছায়াকে চিনেছে। আমি বেঁচে আছি, কারণ, আমার ভেতরে এখনো অনুভবের আলো নিভে যায়নি।’
আরিয়ান ডিভাইস বন্ধ করে দেয়। কিন্তু সে জানে, ডিভাইসের বাইরে হলেও তার আবেগ, তার স্মৃতি, তার ছায়া—সবই তার সঙ্গে আছে।
আরিয়ান একটি নতুন প্রজেক্টের পরিকল্পনা করতে শুরু করে।
এটি শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং মানুষের ভেতরের অবচেতন আবেগ ও স্মৃতির একটি নতুন যাত্রা।
ল্যাবের বাইরে রাতের নিস্তব্ধতা, চাঁদের হালকা আলো—সবই যেন তাকে নতুন সম্ভাবনার দিকে আহ্বান জানাচ্ছে।
এভাবে আরিয়ানের যাত্রা শেষ নয়, বরং শুরু—পুনর্জন্ম ও আত্মস্বীকৃতির পথে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ভ তর র ছ য় ম র ভ তর র আর য় ন জ ন আর য় ন র অন ভ ত স ই সব পর ক ষ প রব শ ল একট
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীর সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকায় গণপরিবহন কম
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ডেকেছে। এদিন সকাল থেকে রাজধানীর প্রবেশ পথ যাত্রাবাড়ী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তায় মধ্যে রেখেছে। তবে সড়কে যানবাহন চলাচল কিছু কম। গণপরিবহন কিছুটা কম থাকায় কর্মব্যস্ত মানুষেরা দুর্ভোগ পড়েছে। যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি লকডাউনের বিরুদ্ধে বিএনপি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। মোড়ে মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পাহাড়া দিচ্ছে, যাতে করে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে। মাঝে মধ্যে ছোট ছোট মিছিল ও স্লোগানের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা উজ্জিবিত থাকতে দেখা গেছে। রাস্তায় অন্যান্য দিনের মতো মানুষের ভিড় নেই। কোথাও কোনো যানজটও নেই। যেসব গণপরিবহন সড়কে চলছে সেগুলোতে অফিস সময়ে ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ ছিল কম।
আরো পড়ুন:
ডাকসুতে শেখ হাসিনার আজীবন সদস্যপদ বাতিল
ঢাবির টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১
সায়েদাবাদা এলাকায় পরিবহন শ্রমিক সোহেল মিয়ার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান। সবার মধ্যে একটু আতঙ্ক। এ কারণে সমিতির নির্দেশ থাকলে অনেক মালিক গাড়ি বের করতে দেয়নি। কারণ একটি গাড়ির ক্ষতি হলেও তো আর সমিতি ক্ষতিপূরণ দেবে না।
লাব্বাইক পরিবহনের চালক আবু তাহের বলেন, “সকাল থেকে যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। কারণ অফিসগামী যাত্রী ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী চাপ কমেছে। বিকালে অফিস ছুটি হলে হয়ত কিছু যাত্রী পাওয়া যাবে।”
ঢাকা/নাজমুল/এসবি