ফুটেজ প্রকাশ শুধু অনৈতিক নয়, অপেশাদার আচরণের চূড়ান্ত নিদর্শন: শাবনূর
Published: 13th, November 2025 GMT
এক যুগের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ছিমছাম জীবন কাটাচ্ছেন ঢালিউডের প্রিয় মুখ শাবনূর। মাঝে মাঝে স্বদেশে ফেরেন, আবার ফিরে যান নীরবতার শহর সিডনিতে। ২০২৩ সালেও ঠিক এমনভাবেই ফিরেছিলেন তিনি। ফিরে ঘোষণা দেন নতুন সিনেমার—নাম ‘রঙ্গনা’।
আরাফাত হোসাইনের পরিচালনায় শুরু হয় শুটিং। পুরোনো দিনের জাদু ফিরে পাওয়ার আশায় এ যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ সব থমকে যায়। পারিবারিক প্রয়োজনে আবারো উড়াল দিতে হয় সিডনির পথে।
আরো পড়ুন:
সাহেবের সঙ্গে বাগদান সারলেন সুস্মিতা?
রাশমিকাকে বিজয়ের চুম্বন, ভিডিও ভাইরাল
তবে সেই অসমাপ্ত স্বপ্নের গল্প এবার ভিন্ন কারণে খবরের শিরোনাম। ‘রঙ্গনা’ সিনেমার শুটিংয়ের ফুটেজ ইউটিউবে ঘুরছে! এ বিষয়ে পরিচালক জানেন না, নায়িকাও অবাক।
বিস্ময় ও ব্যথিত কণ্ঠে শাবনূর বলেন, “এত বছর সিনেমায় কাজ করেছি, এত পরিচালক–প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করেছি—কখনো এমন কিছু ঘটেনি! শিল্পীর অনুমতি ছাড়া অসমাপ্ত কাজের ফুটেজ প্রকাশ শুধু অনৈতিক নয়, অপেশাদার আচরণেরও চূড়ান্ত নিদর্শন। এটা শিল্পীর মর্যাদার প্রতি অবমাননা।”
২০২৩ সালের শেষ দিকে ঢাকায় ফিরেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন একাধিক সিনেমার। তবে ঢাকা ক্লাবে ‘রঙ্গনা’ সিনেমার মহরত অনুষ্ঠিত হয়। এর পরে পুবাইল ও ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে কয়েক দিন ধরে চলে শুটিং। এরপরের লটে ফিরবেন বলে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান শাবনূর। কিন্তু দ্বিতীয় লট শুরুই হয়নি—তার আগেই ইউটিউবে ফাঁস হয়েছে সিনেমাটির দৃশ্য।
ঘটনা জানাজানি হতেই চলচ্চিত্রাঙ্গনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, “প্রযুক্তির যুগে তথ্য ফাঁসের নতুন রূপ।” কেউ বলছেন, “অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফসল।”
১৯৯৩ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেন শাবনূর। তিন দশকের ক্যারিয়ারে দেড় শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। নায়ক সালমান শাহের সঙ্গে পর্দায় তৈরি করেছিলেন ইতিহাস।
২০১৩ সালের পর ধীরে ধীরে অভিনয় থেকে দূরে সরে যান শাবনূর। এখন সিডনিতে আছেন একমাত্র সন্তান আইজান নেহানকে নিয়ে, নিজের পৃথিবীতে, নীরব ও প্রশান্ত জীবনে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র পর চ ল শ বন র
এছাড়াও পড়ুন:
২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের অপসারণ চায় রাকসু
অশোভন আচরণের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
আরো পড়ুন:
রাবিতে নবমবারের মতো আয়োজিত হবে চাকরি মেলা
রাবিতে ছাত্রীদের পরিচয় নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা বজায় রাখার নির্দেশ
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগে চলমান অচলাবস্থা আজ ২৩ দিন অতিক্রম করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকট নিরসনে রাকসুর প্রতিনিধিদল একাধিকবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানায়।
উপাচার্য বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের নির্দেশে স্বাক্ষর করেন এবং ফাইলটি রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রেরণ করেন। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একই দিনে চিঠি ইস্যু হওয়ার কথা থাকলেও রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত তা হয়নি। এতে বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থেকে শিক্ষার্থীরা আরো একদিন একাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়ে।
বিষয়টি জানতে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য সালাহউদ্দিন আম্মার রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, রেজিস্ট্রার রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ব্যস্ত আছেন এবং পরে আসতে হবে।
রাকসুর মতে, প্রশাসনিক দায়িত্বের সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা যেমন নীতিগতভাবে অনুচিত, তেমনি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এজন্য রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে বিষয়টির অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন। এই ঘটনার একটি অংশ ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে বহু শিক্ষার্থী দেখেছেন।
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সংকটকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক পদক্ষেপ বিলম্বিত করা দায়িত্বহীনতা ও জবাবদিহিতার অভাবের দৃষ্টান্ত। একজন নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধির সঙ্গে এমন আচরণ রাকসুর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালার পরিপন্থি।
রাকসুর দাবি, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারের এই অশোভন আচরণের জন্য তদন্তের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার অপসারণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, “ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২৩ দিন ধরে ক্লাস না পেয়ে রাকসুর কাছে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে গতকাল (রবিবার) দুপুর ২টার দিকে রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে রেজিস্ট্রারের সচিব জানান, সেখানে মহানগর বিএনপির একটি রাজনৈতিক মিটিং চলছে।”
তিনি বলেন, “প্রশাসনিক দপ্তরে রাজনৈতিক কার্যক্রম চলা অত্যন্ত অনৈতিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার পরিপন্থি। যে কর্মকর্তা বা শিক্ষক নিজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব ভুলে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যুক্ত হন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত।”
রাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “ঘটনা যেহেতু রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই আমরা রেজিস্ট্রারের অপসারণ চাই। আর এটি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ঠিক আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়। সামনে আমরা দাবি জানাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন কর্মকর্তার পদে না থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু প্রতিনিধির সঙ্গে নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের পরে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রথম থেকেই দেখবেন শপথ অনুষ্ঠান দিতে দেরি করা, প্রথম কার্যদিবস দিতে দেরি করা, সার্বিক বিষয়ে অন্যান্য ক্যাম্পাস থেকে রাকসু প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে। কী কী কারণে তারা এগুলো করছে, তা সবার সামনে চলে আসছে। আর রাকসু ফান্ডের ৩৫ বছরের টাকার হিসাব দিতে না পারার আশঙ্কায় তারা আমাদের সঙ্গে এরূপ আচরণ করছে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী