আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে সাভারে ২৮ জন, আশুলিয়ায় ১১ জন ও ধামরাই থানায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই থানা পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচিকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নাশকতা ঠেকাতে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট ৪২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে সাভার মডেল থানায় ২৮ জন, আশুলিয়া থানায় পাঁচ জন ও ধামরাই থানায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জুয়েল মিয়া জানান, গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। 

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, “আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলাসহ নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তাররা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।”

ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গতকাল ধামরাই থানা এলাকায় আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে আওয়ামী লীগ ঘোষিত লকডাউন ঘিরে নাশকতা প্রতিরোধে সাভারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তৎপরতা বাড়িয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে পরিবহনে তল্লাশিসহ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সাভারের আমিনবাজার তল্লাশী চৌকিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনে তল্লাশী চালানোর পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদসহ পরিচয় যাচাই করছে পুলিশ। এছাড়া গেল রাতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যৌথবাহিনীর টহল তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। 

পুলিশ জানায়, নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা প্রতিরোধে ঢাকা জেলা পুলিশের প্রস্তুতি রয়েছে। 

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম আ্যান্ড অপস) মো. আরাফাতুল ইসলাম বলেন, “গতকাল যেমন চলছিল সেভাবেই চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ডিউটি চলছে। সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে।” 

এদিকে সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী, শিবিরসহ রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-বাইপাইল সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।

ঢাকা/সাব্বির/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ন ত কর ম গতক ল ন শকত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী মেডিকেলে ঘুষি মেরে আনসার সদস্যের নাক ফাটালেন অ্যাম্বুলেন্স–চালক

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেপরোয়া অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষি মেরে এক আনসার সদস্যের নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে।

আহত আনসার সদস্যের নাম ফিরোজ সরকার (৩০)। আটক তিনজন হলেন অ্যাম্বুলেন্স–চালক রজব, আবদুল্লাহ ও মারুফ। ঘটনার পর অভিযান শুরু হলে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের চার মূল হোতা গা ঢাকা দিয়েছেন।

আনসার সদস্যরা জানান, আজ দুপুরে হাসপাতালের ৪ নম্বর ফটকে দায়িত্ব পালন করছিলেন ফিরোজ সরকার। এই ফটক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ নিষেধ। তারপরও একটি অ্যাম্বুলেন্স ৪ নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকে পড়ে। ফিরোজ বাধা দিলেও অ্যাম্বুলেন্সটি সোজা জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে রোগী তুলতে শুরু করে। ফিরোজ আলম সেখানে গিয়ে এভাবে জোর করে ঢুকে পড়ার কারণ জানতে চান। এ সময় তাঁর সঙ্গে তর্ক শুরু করেন ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক। তখন পাশ থেকে আরেক অ্যাম্বুলেন্স–চালক এসে ওই আনসার সদস্যকে ঘুষি মারেন। এতে তাঁর নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে অন্য আনসার সদস্যরা এসে দুজনকে ধরে ফেললেও অন্য অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা এসে তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা হাসপাতালের বাইরে গিয়ে রাস্তার পাশে লাঠিসোঁটা ও হাসুয়া নিয়ে অবস্থান নেন। আর আনসার সদস্যরা অবস্থান নেন হাসপাতালের সামনে। এরই মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘিরে বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স–চালকদের সিন্ডিকেট খুবই বেপরোয়া। তারা রোগী ও লাশ জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সে দলের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। বর্তমানে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন আল মামুন, বাদশা, ডালিম ও আলিম নামের চারজন। এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধের জন্য সম্প্রতি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, নগর পুলিশের কমিশনার, র‌্যাব-৫–এর অধিনায়কের কাছেও চিঠি দেন তিনি।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা খুবই বেপরোয়া। তাঁদের মধ্যে কোনো রকম মানবিক মূল্যবোধ নেই। তাঁরা রীতিমতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এটা নিয়ে সম্প্রতি আমি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। এরই মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল। তিনজন ধরা পড়েছেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। যে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, সেটি জব্দ করে নিয়ে গেছে পুলিশ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে কক্সবাজারে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • ভাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ বোমা-ককটেল ও বিস্ফোরক জব্দ, আটক ৩
  • ফেনীর সোনাগাজীতে এক দিনে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু
  • যৌথ অভিযানে ২৮১ বস্তা চালসহ আটক ৩
  • ঘুষি মেরে আনসার সদস্যের নাক ফাটাল অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট
  • রাজশাহী মেডিকেলে ঘুষি মেরে আনসার সদস্যের নাক ফাটালেন অ্যাম্বুলেন্স–চালক
  • জনগণের সম্পদ বিদেশিদের দেওয়ার গোপন ও প্রকাশ্য তৎপরতা চালাচ্ছেন সরকারের উপদেষ্টারা: আনু মুহাম্মদ