ফেনীতে মহাসড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসে আগুন, দুই জায়গায় অবরোধের চেষ্টা
Published: 13th, November 2025 GMT
ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে জেলার সদর উপজেলার রামপুর পল্লী বিদ্যুৎ–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে কিছুক্ষণের মধ্যে আশপাশের লোকজন পানি ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রনি-রানা পরিবহনের একটি বাস ওই এলাকার মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। রাতে হঠাৎ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক ব্যক্তি আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বাসটির সামনের অংশ পুড়ে যায়।
জানতে চাইলে ফেনী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় বাসিন্দার আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এটি নাশকতা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, আগুনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাসটি কেন ওখানে দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুখে মাস্ক পরে আগুন, অবরোধের চেষ্টা
এদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচির সমর্থনে ফেনীতে বিক্ষোভ করেছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। গতকাল রাত ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁরা কাঠে আগুন দিয়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। তবে ১০ মিনিটের মধ্যে স্থান ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই কর্মসূচিতে ১৫ থেকে ২০ জন মুখে মাস্ক পরে অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাচ্যুত সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে স্থান ত্যাগ করেন। তবে এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ওসি মোহাম্মদ সামসুজ্জামান।
অন্যদিকে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কেও টায়ারে আগুন দিয়ে অবরোধ করার চেষ্টা করেন কয়েক ব্যক্তি। রাত ১০টার দিকে উপজেলার চিথলিয়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই অবরোধকারীরা স্থান ত্যাগ করেন।
জানতে চাইলে পরশুরাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল হাকিম বলেন, ‘অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক যুবক রাস্তায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে দ্রুত সরে পরে। এতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আগ ন দ ড় কর য় অবর ধ এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে অবরোধ, ট্রাকে আগুন, আটক ২
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ছয়টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নাওডোবা এলাকায় অবস্থান নেন। এসময় নাওডোবা তস্তারকান্দি এলাকায় একটি চিনির ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
অবরোধের কারণে সকাল ছয়টা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সাড়ে আটটার পর কিছু যানবাহন সেতু পারাপার হয়। তবে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ভোরবেলা জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় মিছিল নামায় তাদের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা লাঠিসোঁটা ও ককটেল প্রদর্শন করে। এর কিছুক্ষণ পর ওই এলাকা দিয়ে ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দিকে যাওয়া একটি চিনির ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতকারীরা। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তবে তার আগেই সড়ক থেকে সটকে পড়েন দুষ্কৃতকারীরা।
এদিকে, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মিছিলের একটি ৩৯ সেকেন্ডের ভিডিও ফেসবুকে ছাত্রলীগের ভেরিভাইড পেইজে আপলোড করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, শতাধিক লোক হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের নাওডোবা এলাকায় মিছিল করছে। মিছিলের সম্মুখভাগে থাকা এক ব্যক্তির দুই হাতে ককটেল দেখা যায়। এসময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকে।
বিষয়টি নিয়ে জেলার পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, “একটি ট্রাকে দুষ্কৃতকারীরা অগ্নিসংযোগ করেছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাছাড়া মিছিলের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মাঠে আছে।”
ঢাকা/আকাশ/এস