আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ চলছে অনলাইনে: ইনকিলাব মঞ্চ
Published: 13th, November 2025 GMT
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেছেন, আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতারা স্যুটকেস গুছিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এখন তাঁরা বাংলাদেশে ‘লকডাউন’ ডেকেছেন। অনলাইনে সেই লকডাউন চলছে। তাঁদের নেতা-কর্মীরা বাংলামোটরে ‘জয়’ বলে যাত্রাবাড়ী গিয়ে ‘বাংলা’ বলছেন। দলটির নেতা-কর্মীরা দিল্লিতে একটি ম্যারাথন আয়োজন করতে পারেন। একমাত্র সেখানেই তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শরিফ ওসমান হাদি এসব কথা বলেন। এরপর ‘গণহত্যার বিচার বানচাল করতে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জজবা জমায়েত ও প্রতিরোধ মিছিল’ বের করে ইনকিলাব মঞ্চ। মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে যায়।
প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বাংলাদেশের শিকড়ের সম্পর্ক নেই বলে সমাবেশে মন্তব্য করেন শরিফ ওসমান হাদি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজে দিল্লিতে, তাঁর ছেলে আমেরিকায়, মেয়ে লন্ডনে বসে এ দেশের মানুষকে ৫ হাজার টাকা, ৮ হাজার টাকা দিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছেন। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বাংলাদেশের শিকড়ের সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক থাকলে গণপ্রতিরোধের পর তারা দেশে থেকেই মানুষের সঙ্গে লড়াই করত।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বানানো। এখানকার নিয়মকানুন আওয়ামী লীগের বানানো। তারপরও তাঁর বানানো আদালতে হাজির হতে সমস্যা কিসের। শেখ হাসিনা বিচারিক কাঠগড়ায় দাঁড়াক। এরপর যদি মনে হয় তাঁর সঙ্গে ন্যায়বিচার হয়নি, তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাক।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি মানেই আগুনের রাজনীতি বলে মন্তব্য করেন শরিফ ওসমান হাদি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশে কোনো রাজনীতি করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে তারা আন্দোলনের নামে অরাজকতা করেছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। পরবর্তী সময়ে গত ১৫ বছর নিজেদের মালিকানাধীন বাসে আগুন দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ওপর দায় চাপিয়েছে। সেগুলোকে আগুন-সন্ত্রাস হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু দুই দিন আগে ময়মনসিংহে আগুন দিয়ে এক চালককে কয়লা বানিয়ে ফেলেছে, সেটিকে কেউ আগুন-সন্ত্রাস বলছে না।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলছে, তারা যেন স্বীকার করে, গত এক বছরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে টাকা খাওয়ার জন্যই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কোনো দল যেন আওয়ামী রাজনীতি পুনর্বাসনের সাহস না দেখায়।
সমাবেশে ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন–বিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ তাড়ানো হয়েছে। আজীবন যতবার ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, ততবার তাদের প্রতিহত করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ ক্যাচ ছেড়ে আয়ারল্যান্ডের ৮ উইকেট নিল বাংলাদেশ
হাসান মাহমুদ যেভাবে শুরু করেছিলেন সাত সকালে। তাইজুল ইসলাম সেভাবেই শেষ করলেন পড়ন্ত বিকেলে। দিনের শুরুর প্রথম ওভারে উইকেট। দিনের শেষের ওভারে আবারও উইকেট। মাঝে ব্যাট-বলের লড়াই বেশ ভালোই হলো।
বাংলাদেশ চাইলেই আপারহ্যান্ডে থাকতে পারত। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়ায় সম্ভব হয়নি। তাতে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলেও মনে হচ্ছে না। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে আয়ারল্যান্ডের পুঁজি ৮ উইকেটে ২৭০ রান।
আরো পড়ুন:
৮ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রানে দিন শেষ করল আয়ারল্যান্ড
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন অ্যাডেয়ার
পাঁচটি ক্যাচ হাতছাড়ায় অতিথিদের বড় স্কোর করতে সাহায্য করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। সাদমানকে দিয়ে দিন শুরু। পরে যোগ দেন তাইজুল ও মিরাজ। ১১ বলের ব্যবধানে এই তিনজন সকালের সেশনে তিন ক্যাচ ছাড়েন। দিনের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে হাসান মাহমুদ তুলে নেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালব্রাইনের উইকেট। এরপর দারুণ জুটিতে প্রথম সেশন কাটিয়ে দেন পল স্টার্লিং ও কেড কারমাইকেল। ৯৬ রানের জুটি গড়েন তারা।
দ্বিতীয় সেশনে প্রথম ওভারে নাহিদ আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে জুটি ভাঙেন। স্লিপে ক্যাচ দেন ৬০ রান করা স্টার্লিং। এরপর হ্যারি টেক্টরকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। অফস্পিনার এলবিডব্লিউ করেন ফেরান তাকে। পরের উইকেটটাও নেন মিরাজ। এবার স্লিপে তালুবন্দি করান ৫৯ রান করা কারমাইকেলকে।
প্রথম সেশনে ৩.৬২ রান রেটে ৯৪ রান তোলা আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনে ৩ রান রেটে করে ৯০ রান। দিনের শেষ সেশনটি ছিল বাংলাদেশের। এই সেশনে ৮৬ রানে তুলে নেয় ৪ উইকেট। রান রেট ছিল ২.৫৩।
বাংলাদেশের ১০৮তম টেস্ট ক্রিকেটের আজ যাত্রা শুরু হয়েছে হাসান মুরাদের। শেষ বিকেলে দারুণ বোলিংয়ে উইকেট পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। কুর্টিস ক্যাম্ফার ৪৪ রানে স্লিপে ক্যাচ দেন হাসান মুরাদের বলে। এছাড়া ৪১ রানে লরকান টাকার স্টাম্পড হন তার বলেই। পঞ্চম উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। জুটি ভাঙার পর জোড়া উইকেটে বাংলাদেশকে আনন্দে ভাসান হাসান মুরাদ।
এই সেশনে শান্ত ও মুশফিকুরের হাত ছুঁয়ে বল বেরিয়ে যায়। নয়তো দ্রুতই আয়ারল্যান্ড অলআউট হয়ে যেত। মিরাজ তৃতীয় উইকেট পান অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে ফিরিয়ে। শেষ ত্রিশ মিনিটে বেশ ভালো লড়াই করছিল অতিথিরা। জর্ডান নীলকে সঙ্গ দিয়ে ব্যারি ম্যাকার্থি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিনের খেলার শেষ বলে মনোযোগ হারিয়ে তাইজুলের সোজা বলে এলবিডব্লিউ হন ৩০ রান করা নীল।
তাতে বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তি ফিরে পায়। ৫ ক্যাচ ছাড়ার দিনে অতিথিদের ৮ উইকেট নিয়ে ভালো কিছুর আশা করতেই পারে। উইকেট বেশ ভালো। বল ব্যাটে আসছিল। থিতু হয়ে গেলে বড় রান করা সম্ভব। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা জবাব দিতে পারেন কিনা ঠিকঠাকভাবে সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল