ঢাকায় গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক, দূরপাল্লায় যাত্রী কম
Published: 13th, November 2025 GMT
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা সারাদেশব্যাপী ‘লকডাউন’ কর্মসূচির মধ্যেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণপরিবহন চলাচল প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দূরপাল্লার বাসে যাত্রী সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ, ধোলাইপাড় ও টার্মিনাল ঘুরে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এমন চিত্র দেখা গেছে।
সকাল থেকেই রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোয় বাস, মিনিবাস ও প্রাইভেটকারসহ প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে যাত্রী নেই বললেই চলে।
আরো পড়ুন:
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’: আমিনবাজারে পুলিশের তল্লাশি
ঢাবির ৫ স্থাপনায় তালা দিল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ
ধোলাইপাড়ে বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, ফরিদপুর, ভাঙ্গা ও বরিশালগামী বেশ কয়েকটি বাস সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু যাত্রী উঠছে না। কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও টিকিট বিক্রি হয়নি বললেই চলে।
পটুয়াখালীগামী যাত্রী মনির হোসেন বলেন, জরুরি কাজে বের হয়েছি। গাড়ি আছে, কিন্তু মনটা অস্থির। এখন তো আবার গাড়ি পোড়ানোর রাজনীতি শুরু হয়েছে। জানি না কখন কী হয়। মানুষের জীবনের কোনো দামই যেন আর নেই।
একই চিত্র যাত্রাবাড়ী টার্মিনালেও। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি বাস ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও যাত্রী না থাকায় এখনো অনেক বাসই গ্যারেজে দাঁড়িয়ে।
সাকুরা পরিবহনের সুপারভাইজার মাইনুল হাসান জানান, সাধারণ দিনে দুপুরের আগেই ৬টা গাড়ি ছেড়ে যায়। আজ বেলা ১১টা বাজলেও দুটি বাসও ছেড়ে গেছে। যাত্রী চাপ কম।
রায়েরবাগ থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত সড়কে পুলিশের টহলও দেখা গেছে। প্রতিটি মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন, যাতে কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা না ঘটে।
রায়েরবাগ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, গাড়ি বের হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু চালকরা আতঙ্কে আছে। দূরপাল্লায় যাত্রা করলে কখন কোথায় সমস্যা হয় বলা যায় না। গত কয়েকদিনে কয়েকটা গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, সেই ভয়টা এখনও কাজ করছে।
ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী এক বাসচালক আবদুল করিম বলেন, আজ সকাল ৬টায় গাড়ি ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু যাত্রী পাইনি। এখনো ১৫ জনও হয়নি। আগে এমন সময় কাউন্টারে দাঁড়ানো যেত না, এখন ফাঁকা।
যাত্রাবাড়ী টার্মিনালে বিএনএফ এক্সপ্রেসের সুপারভাইজার আমির হামজা বলেন, যাত্রী নেই বললেই চলে। আতঙ্কে মানুষ বাসে উঠতে চায় না। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত দুটি বাস ছেড়েছে।
এদিকে যাত্রাবাড়ী ও ধোলাইপাড় এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কিছু নেতাকর্মীর অবস্থান দেখা গেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রদল-শিবিরের মোটরসাইকেল টহলও দেখা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন মানে গণতন্ত্র, এই ভুয়া তত্ত্ব থেকে বের হতে হবে: ফরহাদ মজহার
নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন চিন্তক ও কবি ফরহাদ মজহার।
সোমবার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, “যদি আমরা কিছু করতে চাই তাহলে, দয়া করে নির্বাচনের ধারণাটা বাদ দেন। নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র, এটা মারাত্মক ভুল। নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন মানে গণতন্ত্র, এই ভুয়া তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গণতন্ত্র মানে হচ্ছে জনগণের সামষ্টিক অভিপ্রায় বাস্তবায়িত করা। এটার আরেকটা নাম আছে, সেটা হচ্ছে গণসার্বভৌমত্ব। জনগণের গাঠনিক ক্ষমতা কখনো হরণ করা যায় না। আন্দোলনসহ বিভিন্ন কিছুর মধ্য দিয়ে জনগণ তার এই গাঠনিক ক্ষমতাকে জারি রাখে।”
তিনি বলেন, “এখন সমস্যা হচ্ছে কেন্দ্রীয় ক্ষমতাকে যেখানে দিয়েছেন, পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলো রয়ে গেছে। যেহেতু আমরা শেখ হাসিনার রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রেখেছি, সেই রাষ্ট্রটা এখনও আছে। ফলে সেই রাষ্ট্রটি আপনার সামনে দানবের মতো দাঁড়িয়ে আছে। এটাকে আপনি ভাঙতে পারছেন না। আপনি (ড. ইউনূস) বলছেন এটাকে সংস্কার করতে হবে।”
ফরহাদ মজহার বলেন, “আমাদের নতুন বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ খুব সহজ। নতুন গণপরিষদ গঠন করা এবং একটা গণপরিষদে নির্বাচন করা। গণপরিষদে আমাদের সমস্ত সাংবিধানিক প্রশ্ন, সকল আইনি প্রশ্ন, রাষ্ট্রীয় প্রশ্ন ফয়সালা করা। যখন আমরা সিম্পল ফরমুলাকে জটিল করে ফেলি, এদিক-ওদিক নিয়ে যাই, তখন বিভিন্ন শক্তির কারণে আমরা এটাকে তখন নষ্ট করে ফেলি।”
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “জনগণকে বলতে দেন, তারা কেমন বাংলাদেশ চায়। জনগণকে ক্ষমতা দেন। এটা না করে আপনি দু-তিনটা লোক নিয়ে এসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করলেন। এটার তো কোনো ভ্যালিডিটি নেই। আপনাদের কোনো এখতিয়ারই নেই।”
আলোচনা সভায় কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ