ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে এই সময় বৃদ্ধি করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বর এই সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল।

একই সঙ্গে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে না পারলে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করা যাবে, এমন আরেকটি আদেশ আজ করেছে এনবিআর।

এনবিআর বলছে, এ বছর ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল ও বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ কর বছরে বেশ কয়েক শ্রেণির করদাতার অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও তাঁরা ইচ্ছা করলে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

করদাতার পক্ষে তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও এ বছর অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। এ ছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতার ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তাঁর পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি তথ্য ereturn@etaxnbr.

gov. bd ই-মেইলে পাঠিয়ে আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে ওটিপি ও নিবন্ধন লিংক পাঠানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারাও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করে সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

কোনো কাগজপত্র বা দলিলাদি আপলোড না করে করদাতারা তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করতে পারবেন। ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) মাধ্যমে আয়তর পরিশোধ করা যাবে। ই-রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের স্লিপ ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট করা যাবে।

এ বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ই র ট র ন দ খ ল কর আয়কর র ট র ন করদ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জয়পুরহাটে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, ‘বেরিয়ে এল’ দুর্নীতির তথ্য

দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাইয়ের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে। এর মধ্যে এক ভাইয়ের দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান করে তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায়। দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী বাদী হয়ে গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।

আদালত সেই সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেন। আদালতের নির্দেশে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আক্কেলপুরের কানুপুর গ্রামে অভিযুক্ত ফজলুর রহমানের ৩ বিঘা ২৫ শতাংশ আবাদি জমির দখল বুঝে নেন ইউএনও।

অভিযুক্ত ফজলুর রহমান যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি অবসরে যান। তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান।

ফজলুর রহমানের দাবি, তিনি বৈধ আয়ে সম্পদ অর্জন করেছেন। আয়কর রিটার্ন ফাইল দাখিলের সময় জমিগুলোর তথ্য ভুলে উল্লেখ করা হয়নি। জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বে তাঁর বড় ভাই শফিউল ইসলাম এমন কাজ করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে শফিউল আলম বিষয়টি অস্বীকার করেন।

দুদকের সমন্বিত নওগাঁ কার্যালয়ের উপপরিচালক মেহেবুবা খাতুন বলেন, ফজলুর রহমান চাকরিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ও ৮০ লাখ ১৫ হাজার ২৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। এ নিয়ে দুদক কর্মকর্তা নওশাদ আলী বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন।

আদালত ফজলুর রহমানের হেফাজতে থাকা জয়পুরহাট শহরের সরদারপাড়া মহল্লার ছয় শতাংশের একটি বাড়ি ও আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর গ্রামের ৩ বিঘা ২৫ শতক আবাদি জমি ক্রোক করার আদেশ দেন। ওই সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে ইউএনওকে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আজ ইউএনও কানুপুর মাঠের জমিগুলোর দখল বুঝে নিয়েছেন। তখন তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দ্রুত মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

আক্কেলপুরের ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা খানম বলেন, ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে আদালত তাঁকে রিসিভার নিয়োগ করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ সকালে তফসিলভুক্ত ৩ বিঘা ২৫ শতক জমির দখল বুঝে নিয়ে লাল ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর এলাকার বাইরে হওয়ায় জয়পুরহাট সদরে থাকা ছয় শতাংশের বাসাটির দখল বুঝে নেওয়া হয়নি।

তবে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করে ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার সব সম্পদ বৈধ। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ভুলক্রমে জমিগুলো ফাইলে তোলা হয়নি। আমাদের ভাইদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। এই সুযোগে বড় ভাই শফিউল আলম আমার ক্ষতি করেছে।’

শফিউল আলম বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে, সত্য। তবে আমার পরিবারের কেউ দুদকে অভিযোগ করেনি। দুদক আমার ছোট ভাই ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পেয়েছে বলে জেনেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • করদাতার ১০ খাতের আয়ে কর বসে, আয়ের খাতগুলো কী কী
  • আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ছে
  • জয়পুরহাটে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, ‘বেরিয়ে এল’ দুর্নীতির তথ্য