মালিতে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার অভিযোগে নারী টিকটকারকে হত্যা
Published: 10th, November 2025 GMT
উত্তর আফ্রিকার দেশ মালিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ‘সহযোগিতার’ অভিযোগে জনপ্রিয় টিকটকার মারিয়াম সিসেকে অপহরণের পর প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় তিমবুকতু প্রদেশে টঙ্কা শহরে।
নিহত তরুণীর পরিবার ও স্থানীয় কর্মকর্তারা রবিবার (৯ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আজ সোমবার এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
মার্কিন পর্যটকদের ওপর ১০ হাজার ডলার ভিসা বন্ড আরোপ করল মালি
শিঙাড়া খেলে মৃত্যুদণ্ড দেয় যে দেশ
প্রতিবেদনে বলা হয়, মারিয়াম সিসে টঙ্কা শহর নিয়ে নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতেন এবং টিকটকে তার ৯০ হাজার ফলোয়ার ছিল। অপহরণকারীরা তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার অভিযোগ এনেছিল।
তাকে হত্যার খবর দেশটিকে হতবাক করেছে। সামরিক জান্তা শাসিত মালিতে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১২ সাল থেকে দেশটি জঙ্গিদের দমন করতে লড়াই করছে।
নিহত মারিয়ামের ভাই বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “আমার বোনকে বৃহস্পতিবার জিহাদিরা আটক করে। তারা তাকে ‘জিহাদিদের গতিবিধি সম্পর্কে মালির সেনাবাহিনীকে অবহিত করার’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে।”
তিনি আরো বলেন, “পরদিন তাকে মোটরসাইকেলে করে টঙ্কা শহরের স্বাধীনতা চত্বরে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমি ঘটনাস্থলে ভিড়ের মধ্যে ছিলাম।”
এক নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে বলেন, “টঙ্কার একটি পাবলিক চত্বরে মারিয়াম সিসেকে জিহাদিরা হত্যা করেছে, যারা তার বিরুদ্ধে মালির সেনাবাহিনীর জন্য ভিডিও করার অভিযোগ এনেছে।” নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এটিকে ‘বর্বরোচিত’ কাজ বলে অভিহিত করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তাও এ ঘটনাকে ‘অমানবিক ও ঘৃণ্য কাজ’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
সামরিক জান্তা দীর্ঘদিন ধরে চলমান জিহাদি বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আল-কায়েদা-সংযুক্ত গোষ্ঠী ফর দ্য সাপোর্ট অব ইসলাম অ্যান্ড মুসলিমস (জেএনআইএম) যোদ্ধারা জ্বালানি অবরোধ আরোপ করেছে, যার ফলে সরকারকে বহু অঞ্চলে স্কুল বন্ধ ও ফসল সংগ্রহ কার্যক্রম স্থগিত করতে হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ফাং ওয়াং, সরিয়ে নেওয়া হলো ১ লাখ লোক
ফিলিপাইনে টাইফুন ফাং ওয়াং প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আজ রোববার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। কিছুদিন আগেই আরেকটি শক্তিশালী টাইফুন ‘কালমায়েগি’তে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মৃত্যু হয় অন্তত ২০৪ জনের, নিখোঁজ হন ১০৯ জন। গত শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়টিতে ভিয়েতনামেও পাঁচজন মারা যান।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসতে থাকায় ফিলিপাইনের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে এক লাখের বেশি মানুষকে এরই মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফিলিপাইনের সরকারি আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, ছোট দ্বীপ এলাকা কাতানদুয়ানেসে ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি আঘাত হানতে পারে। এটির প্রভাবে আজ ভোর থেকেই সেখানে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো বাতাস। উপকূলীয় সড়কগুলোতে সমুদ্রের ঢেউ প্রবলভাবে ধাক্কা দিচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ফিলিপাইনের পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (১১৫ মাইল) বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো গতি ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে।আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ফিলিপাইনের পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (১১৫ মাইল) বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো গতি পৌঁছাচ্ছে ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
কাতানদুয়ানেসের ভিরাক শহরের ৩৩ বছর বয়সী বাসিন্দা এডসন কাসারিনো এএফপিকে বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে ঢেউগুলো গর্জন শুরু করল। ঢেউ যখন সমুদ্রের তীরে ধাক্কা খাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল মাটি কাঁপছে। এখন অনেক বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শুনতে পাচ্ছি।’
গতকাল শনিবার এই দ্বীপের কিছু বাসিন্দাকে ঘরের চাল মজবুত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। স্থানীয় উদ্ধার তৎপরতা বিভাগের কর্মকর্তা রবার্টো মন্টেরোলা এএফপিকে বলেন, ‘বাসিন্দারা আমাদের ঐতিহ্য অনুসারে বড় দড়ি দিয়ে চালগুলো বেঁধে তা মাটিতে আঁকড়ে ধরে রাখার পদ্ধতি ব্যবহার করছেন; যেন বাতাসে উড়ে না যায়।’
কাতানদুয়ানেসের ভিরাক শহরের বাসিন্দা এডসন কাসারিনো এএফপিকে বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে ঢেউগুলো গর্জন শুরু করল। ঢেউ যখন সমুদ্রের তীরে ধাক্কা খাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল মাটি কাঁপছে। এখন অনেক বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শুনতে পাচ্ছি।’ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় দ্বীপ লুজনের সোরসোগন শহরে কিছু মানুষ একটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন।
উপকূলীয় অরোরা প্রদেশে উদ্ধারকারী দলগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় চলে যেতে বলছেন। আজ রোববার গভীর রাতে কিংবা আগামীকাল সোমবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি সেখানে আঘাত হানতে পারে।
ফিলিপাইনের আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, টাইফুনের কারণে ২০০ মিলিমিটার (প্রায় ৮ ইঞ্চি) বা এর বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এতে ব্যাপক বন্যা দেখা দিতে পারে।