শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা রাখার সুযোগ দিতে সাভার ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত আর্মি ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আর্মি আইবিএ) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে আইটি ক্লাব। গতকাল বুধবার আর্মি আইবিএ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফাওজিয়া তাসনিমকে সভাপতি করে আইটি ক্লাব চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। নবগঠিত আইটি ক্লাবের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আফজাল হোসাইন। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আর্মি আইবিএ আইটি ক্লাব।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও শিক্ষা: ভবিষ্যতের দিগন্ত’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে আর্মি আইবিএ আইটি ক্লাব চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো.

রুহুল আমিন বলেন, ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল দক্ষতা অপরিহার্য। এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ তৈরি করে দেবে।

আর্মি আইবিএ এর পরিচালক এবং আইটি ক্লাবের চিফ পেট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কানেক্টিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কাজী হাসান। তিনি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংযোগ তৈরির পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং শিল্প-খাতের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিক্ষার্থীরা যদি আইসিটি দক্ষতা, উদ্ভাবনী মানসিকতা ও ডিজিটাল সক্ষমতা অর্জন করতে পারেন, তবে তারা ভবিষ্যতে শুধু ভালো চাকরি নয়- বরং উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। আইটি ক্লাবের কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, সমস্যা সমাধান, নেতৃত্ব বিকাশ এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা করেন তারা।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহসভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন। গেস্ট অব অনার হিসাবে বক্তব্য দেন বেসিস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (বিআইটিএম) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মোফাজ্জল হোসেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন আইব এ

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ের অনুষ্ঠানে গান বাজানোয় সালিস ডেকে কনের বাবা, মা, ভাইকে বেত্রাঘাত

বিয়ের অনুষ্ঠানে সাউন্ড বক্সে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের পর ডাকা হয়েছিল সালিস। স্থানীয় যুবদলের এক নেতা এ সালিস ডাকেন। পরে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাও এতে অংশ নেন। সে সালিসেই কনের বাবা, মা ও ভাইকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি ওই সালিসে কনের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

গত ২০ অক্টোবর নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। তবে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় কনের ভগ্নিপতির অটোরিকশা আটক করা হয়। অটোরিকশাটি আটকে রাখার সূত্রে আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। যদিও স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর মধ্যস্থতায় অটোরিকশা আবার ফেরত দেওয়া হয়।

কনের পরিবারের অভিযোগ, ২০ অক্টোবর ওই বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সে অনুষ্ঠানের আগের রাতে সাউন্ড বক্সে গান বাজায় তারা। ওই দিন রাতেই স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফছার উদ্দিন কেন গান বাজানো হয়েছে, সে কৈফিয়ত চান। এ নিয়ে কনের ভাইয়ের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনার পরের দিন রাতে কনের বাড়িতেই সালিস বসে। সালিসে গান বাজানোর কারণে কনের মা, বাবা ও ভাইকে ১০ ঘা বেত্রাঘাত করা হয়।

জানতে চাইলে কনের ভাই প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা রাত ১০টা পর্যন্ত গান বাজিয়েছিলেন। কথা–কাটাকাটির পরের দিন রাত ৯টার দিকে আফছার তাঁর দলীয় লোকজন নিয়ে এসে তাঁদের বিরুদ্ধে সালিস বৈঠক বসান। সে বৈঠকে তাঁদের বিরুদ্ধে সাউন্ড বক্সে গান বাজানোর পাশপাশি ৫০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হয়। টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ সত্য নয়। এ অভিযোগে তাঁদের প্রকাশ্যে ১০ ঘা বেত্রাঘাত করা হয়।

তবে কনের ভাইয়ের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন যুবদল নেতা আফছার উদ্দিন। তিনি দাবি করেন, তিনি জেলা শহরের সোনাপুর থেকে জেলেদের মাছ বিক্রির টাকা নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। তখন বাড়ির সামনে কনের ভাইকে দাঁড়ানো দেখে সাউন্ড বক্সে গান বাজানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে কনের পরিবারের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁর ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়।

তবে সালিসের কথা স্বীকার করেন আফছার উদ্দিন। তিনি বলেন, বিষয়টি দলীয় লোকজন জানার পর রাতে সালিস হয়। ওই সালিসে বেত্রাঘাতের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তছলিম উদ্দিন ও স্থানীয় বাসিন্দা আলা উদ্দিন মাঝি এ সালিস পরিচালনা করেন। মো. তছলিম উদ্দিনই বেত্রাঘাত করেছেন বলে কনের পরিবারের অভিযোগ। জানতে চেয়ে তছলিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে আলা উদ্দিন মাঝি সালিসের জরিমানার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে বেত্রাঘাত করা হয়নি বলে দাবি করেন।

জানতে চাইলে আলা উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বিয়েবাড়িতে গান বাজানোর ঘটনায় স্থানীয় এক রিকশাচালক প্রতিবাদ করেছিলেন। পরে কনের বাড়ির লোকজন ওই রিকশাচালক ও আফছারের ওপর হামলা করেছেন। এ নিয়ে সালিস হয়েছিল। এতে বিয়েবাড়ির লোকজনের কারণে আফছারের ৫০ হাজার টাকা হারানোর কারণে তাঁদের ওই টাকা জরিমানা করা হয়।

জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ