‘ব্যাংকিং খাতের গোপন খেলাপি ঋণ সামনে আসছে’
Published: 27th, November 2025 GMT
ব্যাংকিং খাতের গোপন খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতিসহ সব সংকট একে একে সামনে আসছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “দীর্ঘদিন ঢেকে রাখা খেলাপি ঋণের পাহাড়, প্রভিশন ঘাটতি আর তারল্য সংকট সব অসুখ এখন একে একে প্রকাশ্যে।” এই বাস্তবতা তুলে ধরে দেশের নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা ও সংস্কারহীনতার সমালোচনা করেছেন তিনি। একসঙ্গে ধরা পড়া এসব দুর্বলতা বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
তার অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া হঠাৎ বিদেশি বিনিয়োগ ঘোষণা ও নীতিগত অস্পষ্টতা বিনিয়োগ পরিবেশ আরো দুর্বল করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতির পথ রুদ্ধ করছে। একইসঙ্গে সংস্কার ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আনা স্বপ্নের মতো বলেও জানান তিনি।
তিনি জানতে চান, “পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করা, প্রশাসক নিয়োগ বা কিছু নিয়ম পূর্বের অবস্থায় ফেরানো এসবের বাইরে সুশাসন নিশ্চিত করতে কী করা হয়েছে?”
বর্তমান পরিস্থিতিকে বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত দুর্বল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ব্যক্তি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বহু বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সুদের হারসহ নীতিগত দিকনির্দেশনাও এখনও পরিষ্কার নয়।”
তিনি বিদেশি বিনিয়োগ ঘোষণায় তড়িঘড়ির সমালোচনা বলে বলেন, “কোনো সংস্কার ছাড়াই মাত্র ১৩ দিনে বিশাল বিদেশি বিনিয়োগ আনার ঘোষণা এটা বাস্তবসম্মত নয়। ‘নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট’ এর আড়ালে এমন সিদ্ধান্ত স্বচ্ছতার ঘাটতি তৈরি করে।”
তার মতে, অংশীজনের অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা ছাড়া বড় সিদ্ধান্ত টেকে না। আগের সরকারের সময় যেসব বৈষম্যমূলক চুক্তি হয়েছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা না থাকায় মানুষের সন্দেহ আরও বেড়েছে।
নীতিনির্ধারণ নিয়ে পর্যবেক্ষণ পলিসি রেট কমানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল, তবে সংকোচনমূলক নীতি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমিয়েছে। এখন স্থিতিশীলতা থেকে প্রবৃদ্ধির দিকে যাওয়ার সময় হলেও জ্বালানি, গ্যাস, ব্যাংকিং খাতের তারল্য ও ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতা এসব বড় সংস্কার পিছিয়ে আছে।”
রাজনৈতিক উত্তরণ যেন অর্থনীতিকে বাধা না দেয়, এ বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি।
ঢাকা/নাজমুল/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইল কারাগারে আ. লীগ নেতার মৃত্যু
টাঙ্গাইল কারাগারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) মধ্যরাতে তিনি মারা যান।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে কারাগারের জেলার মুহাম্মদ জাহেদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরবে পুলিশের গুলিতে প্রবাসী নিহত, পরিবারে শোক
বিয়ে বাড়ির খাবার খেয়ে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ১৭
মারা যাওয়া সুলতান মিয়া উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের হরিরপাড়া গ্রামের আজমত আলীর ছেলে। তিনি গোড়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার মধ্যরাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে সুলতানকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক-সংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন’ চলাকালে পুলিশের ছররা গুলিতে গোড়াই ইউনিয়নের লালবাড়ি গ্রামের হিমেলের দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় হিমেলের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলি আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশ, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট ১০০ জনের নাম উল্লেখ এবং ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে গত ২৮ অক্টোবর সুলতানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রায় এক মাস তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে ছিলেন।
জেলার মুহাম্মদ জাহেদুল আলম বলেন, “ময়নাতদন্ত ও আইনী প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ