বাউলদের ওপর হামলার ঘটনা ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাজ’ বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, তৌহিদি জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে ‘ধর্মান্ধতা’ বলা সংঘাত উসকে দেওয়ার শামিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মামুনুল হক এ কথা বলেন।

গতকাল বুধবার ঠাকুরগাঁও শহরের কোর্ট চত্বরে বাউলদের ওপর হামলায় দুজন আহত হন। ঘটনার পর ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানরত মির্জা ফখরুল ইসলাম এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং এটা ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাজ’ বলে মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে মামুনুল হক বলেন, বাউল আবুল সরকারের প্রকাশ্য আল্লাহদ্রোহী, অবমাননাকর ও ইমানবিধ্বংসী বক্তব্য দেশজুড়ে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এমন বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ‘জনগণের ন্যায্য দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর গ্রেপ্তার আইনের শাসন রক্ষারই স্বস্তিদায়ক পদক্ষেপ। দুঃখজনকভাবে আবুল সরকারের সমর্থকেরা মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে উসকানিমূলক আচরণের মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, যা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।’

মামুনুল হক বলেন, আরও উদ্বেগজনক হলো, একটি রাজনৈতিক দল, কিছু বুদ্ধিজীবী ও ইসলামবিরোধী চক্র আল্লাহর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্যকে আড়াল করে কুখ্যাত এই বাউলের পক্ষাবলম্বন করছে। এমনকি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মহাসচিবও (মির্জা ফখরুল ইসলাম) ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৌহিদি জনতার ন্যায্য প্রতিবাদকে ‘উগ্রবাদী-ধর্মান্ধ চক্রের কাজ’ বলেছেন। আবুল সরকারের পক্ষাবলম্বী সব গোষ্ঠীর এই অসত্য উপাসনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

আবুল সরকারের পক্ষ নেওয়া গোষ্ঠীর সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, তারা অপরাধীর ধর্মবিরোধী বক্তব্য নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি; বরং আল্লাহ ও দ্বীনের বিরুদ্ধে অবমাননাকে আড়াল করে মুসলিম জনতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে ‘উগ্রবাদ’ বলছে। এটি বিগত ফ্যাসিবাদী ভাষাচর্চারই পুনরাবৃত্তি। তৌহিদি জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে ‘ধর্মান্ধতা’ বলা সংঘাত উসকে দেওয়ার শামিল।

আবুল সরকারের ‘আল্লাহদ্রোহী বক্তব্য’ জঘন্য ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে দাবি করেন মামুনুল হক। তিনি আরও বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতার প্রতিক্রিয়া ছিল শান্তিপূর্ণ ও ইমানি দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। অপরাধীকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর দোষ চাপানো অবিচার ও ইসলামি চেতনার প্রতি স্পষ্ট অবজ্ঞা।’ বিবৃতিতে রাজনৈতিক মহলকে ধর্মীয় বিষয়ে সংযত, দায়িত্বশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের চর্চা গড়ে তোলার আহ্বান জানান মামুনুল হক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক দ র ওপর প রক শ আল ল হ উদ ব গ ইসল ম জনত র ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকের পরিধি বড় হচ্ছে, কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিধি বড় হচ্ছে। একই সঙ্গে দুদকের কাজের প্রতিবেদন এখন থেকে ছয় মাস পরপর অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) দিতে হবে এবং দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে।

এমন বিধান রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে চেয়ারম্যানসহ তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে এই কমিশন কাজ করে। এখন তা বাড়িয়ে পাঁচজনের কমিশন করা হচ্ছে। এর মধ্যে একজন নারী এবং আরেকজন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হবেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংস্কার কমিশন করেছিল। তাদের অনেক সুপারিশ ছিল। সেই আলোকে দুদককে কীভাবে আরও কার্যকর একটি প্রতিষ্ঠান করা যায়, সে বিষয়ে করা অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম।

চূড়ান্ত অনুমোদন করা অধ্যাদেশে ‘বাছাই কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। এ ছাড়া দুদকের কাজের প্রতিবেদন এখন থেকে ছয় মাস পরপর অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) দিতে হবে, দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে—এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন নতুন অধ্যাদেশে এটি থাকবে।

এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশের খসড়া, রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ