পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘ওনারা ব্যাংকার দিয়ে রাজনীতি করাবে, কন্ট্রাক্টর দিয়ে নির্বাচন করাবে। গণ অধিকারের ভিপি নূরকে দিয়ে নির্বাচন করাবে। তাকে দিয়ে শুধু নির্বাচনই করাবে না, তাকে টাকাও দেবে, কিন্তু নূর রাজি হয়নি। তখন তারা রুহুল আমিন হাওলাদারকে (জাতীয় পার্টি) ধরছে। তারা আমাকে হারাতে ১০০ কোটি টাকার বাজেট করেছে। কিন্তু রুহুল আমিন হাওলাদার কেমনে নির্বাচন করবে? তার বিরুদ্ধে তো অনেক মামলা, মার্ডার কেসও আছে—একটাতেও জামিন নেই, রেজাল্ট জিরো।’

গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতাকে নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী এ কথা বলেন। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সভায় আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার (কুট্টি), সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান (টোটন), জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক মেয়র মোস্তাক আহম্মেদকে মুঠোফোনে কল করে কথা বলেছি। এরপর মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাসা ও অফিসে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনি।’

আলতাফ হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘এখন জেলা বিএনপি অভিযোগ করছে, আমি তাদের ডাকছি না। আমি তাদের দাওয়াত খাওয়ার জন্য তো ডাকব না। নির্বাচনে কাজ করার জন্য ডাকব। আমার প্রথমে দেখতে হবে, কে কী কাজ করার জন্য যোগ্য। সেটা তো আমার দেখতে হবে, তারপর তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে এটা সত্য, যারা বিএনপির দুর্দিনে সম্মুখসারিতে ছিল, রক্ত দিয়েছে, জেল খেটেছে—তাদের হাত দিয়েই নির্বাচন হবে।’

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর (আলতাফ হোসেন চৌধুরী) অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তিনি কোনো প্রমাণ দিতেও পারবেন না। ভিত্তিহীন এ বক্তব্যে দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার বলেন, জাপার রুহুল আমিন হাওলাদারকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জেলা বিএনপিকে ছোট করছেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী। অথচ তিনি নিজেই রুহুল আমিনের আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খাচ্ছেন। আওয়ামী লীগকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তিনি জেলা বিএনপির বৈধ কমিটিকে অস্বীকার করছেন। মূলত বয়স বেড়ে যাওয়ায় তিনি কী বলছেন, নিজেও জানেন না। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

যোগাযোগ করলে আলতাফ হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলো বলেন, তাঁর বক্তব্যের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ তাঁর কাছে আছে। তাঁরা এই কাজগুলো করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। এরপর জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার ও পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে তিনি দ্বন্দ্বে জড়ান। ধীরে ধীরে সেই দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার এখানে মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। পরে আলতাফ হোসেন চৌধুরী মনোনয়ন পেলে দুই পক্ষের বিভাজন মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু আলতাফ হোসেন চৌধুরী কয়েকটি নির্বাচনী সভায় অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে জেলা বিএনপি তাঁকে কোনো সহযোগিতা করছে না। এরপর পুরোনো দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে আসে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আলত ফ হ স ন চ ধ র র হ ল আম ন ব এনপ র স য গ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাইয়ের হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন

জুলাই আন্দোলনের সময় রামপুরায় একটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করা হয়েছিল শেখ বশিরউদ্দীনকে; এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার সময় তা নিয়ে আলোচনাও উঠেছিল। কিন্তু এ ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাননি আদালত। তাই তাঁকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ভারগো গার্মেন্টসের ‘এক্সিকিউটিভ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার’ মো. সোহান শাহ হত্যার মামলায় শেখ বশিরউদ্দীনকে অব্যাহতি দিয়ে আজ মঙ্গলবার আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জামসেদ আলম।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে দেওয়া প্রতিবদনে বলেছিলেন, ‘এ মামলার ঘটনার সঙ্গে আসামি শেখ বশিরউদ্দীনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাঁকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করছি।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান জানান, ২৪ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা, র‍্যাব-৩–এর উপপরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(ক) ধারা অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দিয়েছিলেন।

আকিজ বশির গ্রুপের কর্ণধার শেখ বশিরউদ্দীন গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাস পর গত বছরের নভেম্বরে এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। এর পরপরই জুলাই আন্দোলনের সময় রামপুরা থানায় করা একটি মামলায় তাঁর আসামি হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে।

জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রামপুরার সিএনজি স্টেশনের সামনে গুলিতে আহত হন সোহান শাহ (৩০)। ওই বছরের ২৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এরপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সোহানের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে ঢাকার আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। এজাহারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করেন তিনি, এর মধ্যে ৪৯ নম্বর আসামি হিসেবে নামটি ছিল ‘শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া’। এই নামের সঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীনের, এমনকি তাঁর বাবার নামও মিলে গিয়েছিল।

তবে মামলার বাদী সুফিয়া বেগম তখন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ তাঁর ছেলে হত্যার জন্য দায়ী। তবে আসামি কারা করেছে, তা তিনি বলতে পারছেন না।

তখন শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে হয়তো তাঁর নাম এ মামলায় দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন‘শেখ বশিরের’ বিরুদ্ধে হত্যামামলা: বাদী বললেন জানেন না, উপদেষ্টা সেখ বশির বললেন নিশ্চিত নন১১ নভেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট স্থগিত
  • ‘শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ খতিয়ে দেখছে ভারত’
  • শাকিবের নায়িকা রহস্য
  • ওসির পদায়নও হবে লটারিতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • চেলসির কাছে পাত্তা পেল না বার্সেলোনা
  • টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে কারা
  • যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
  • মধ্যরাতে শিক্ষার্থীকে মেসে ডেকে নিয়ে নির্যাতন, প্রতিবাদে সহপাঠীদের অবস্থান
  • জুলাইয়ের হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন