জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে পৃথক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। যে অভিযোগে এ দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, সে রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করবে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)।

আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে একটি মামলায় ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, প্রসিকিউশন বা ডিফেন্স কে কবে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে রায় সংগ্রহ করবে, এটা তাদের ব্যাপার। প্রসিকিউশন রায় সংগ্রহ করেছে। তাতে দেখা গেছে, একটি অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আরেকটি অভিযোগে এই দুজনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এই প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, প্রসিকিউশন রায় পর্যবেক্ষণ করছে। চিফ প্রসিকিউটর ও জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটররা দেখছেন। প্রসিকিউশন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে, সেটার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে। এই শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করার আবেদন করা হবে। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করা হবে বলেও তিনি জানান।

ট্রাইব্যুনাল আইনের ২১ নম্বর ধারায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিলের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এই ধারার ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, দণ্ড ও সাজা প্রদান অথবা খালাস অথবা কোনো সাজা দেওয়ার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। এই সময়সীমা (রায় দেওয়ার ৩০ দিন পর) অতিক্রান্ত হওয়ার পর কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য হবে না। আর ২১ নম্বর ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, আপিল করার তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে।

আরও পড়ুনজুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন ট্রাইব্যুনাল১৭ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন খ ন আম ত য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকের পরিধি বড় হচ্ছে, কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিধি বড় হচ্ছে। একই সঙ্গে দুদকের কাজের প্রতিবেদন এখন থেকে ছয় মাস পরপর অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) দিতে হবে এবং দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে।

এমন বিধান রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে চেয়ারম্যানসহ তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে এই কমিশন কাজ করে। এখন তা বাড়িয়ে পাঁচজনের কমিশন করা হচ্ছে। এর মধ্যে একজন নারী এবং আরেকজন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হবেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংস্কার কমিশন করেছিল। তাদের অনেক সুপারিশ ছিল। সেই আলোকে দুদককে কীভাবে আরও কার্যকর একটি প্রতিষ্ঠান করা যায়, সে বিষয়ে করা অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম।

চূড়ান্ত অনুমোদন করা অধ্যাদেশে ‘বাছাই কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। এ ছাড়া দুদকের কাজের প্রতিবেদন এখন থেকে ছয় মাস পরপর অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) দিতে হবে, দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে—এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন নতুন অধ্যাদেশে এটি থাকবে।

এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশের খসড়া, রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ