পিরোজপুরের নাজিরপুরে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার শ.ম রেজাউল করিমসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। একইসঙ্গে তারা নাজিরপুর শহীদ মিনারের সামনে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে ভাঙচুর চালান। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) ভোর ৪টা পর্যন্ত হামলার ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, ক্ষমতাচুত্য শেখ হাসিনার ভাষণকে কেন্দ্র গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরের হাসপাতাল সংলগ্ন স্ট্যান্ডে একত্রিত হন বিক্ষুব্দ জনতা। তারা শ.

ম রেজাউল করিমের উপজেলা সদরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারেফ হোসেন খানের বাড়ি, মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুরে আলম সিদ্দিকী শাহীনের উপজেলা সদরের বাজারের ভেতরের বাড়ি ও উপজেলার কালিবাড়ির বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চলান।

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের প্রয়াত এমপির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

লিফলেট বিতরণে বাধা দেওয়ায় আ.লীগের হামলা, গ্রেপ্তার ২

বিক্ষুব্দ জনতা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কন্তি বিশ্বাসের কালিবাড়ির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমীন শেখের দোকান ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। 

ঢাকা/তাওহিদুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেন থামিয়ে পরিচালক ও চালককে মিষ্টি খাওয়ালেন আন্দোলনকারীরা

দিনাজপুরের বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি, সব আন্তনগর ট্রেনের আসন বৃদ্ধি, রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন এবং রেলগেট সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টের উদ্যোগে এ মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, দিনাজপুর দক্ষিণাঞ্চল উন্নয়ন ফোরাম (দিদউফ), বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাধারণ যাত্রী, ব্যবসায়ী সংগঠন, ক্রীড়া সংগঠন, বিরামপুর উপজেলা দোকান কর্মচারী ইউনিয়ন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা ব্যানার হাতে নিয়ে ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে স্লোগান দেন।

মানববন্ধন চলাকালে সকাল সোয়া ১০টায় কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী সম্মানে বিরামপুর স্টেশনে দুই মিনিটের জন্য থামে। এ সময় বিরামপুরবাসীর পক্ষ থেকে ওই ট্রেনের পরিচালক ও চালককে মিষ্টিমুখ করানো হয়। পরে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে বিরামপুর ছেড়ে চলে যায়।

বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, দেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে চলাচলরত ১১টি আন্তনগর এক্সপ্রেস বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিরতি নেয়। কিন্তু কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন বিরামপুর স্টেশনে বিরতি নেয় না। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল ৯টা ৪৬ মিনিটে ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস বেলা ৩টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিরামপুরের ওপর দিয়ে জয়পুরহাট হয়ে ঢাকায় যায়। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিরতি না দেওয়ায় বিরামপুর ও আশপাশের উপজেলার যাত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ কাজে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় যাওয়া-আসা করতে ওই দুটি ট্রেন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠন বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিরামপুর উপজেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ি, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট উপজেলার কেন্দ্রীয় উপজেলা। বিরামপুর উপজেলা শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও ব্যবসা সমৃদ্ধ উপজেলা। বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উত্তরে পার্বতীপুর ও দক্ষিণে দুটি জয়পুরহাট স্টেশনে বিরতি দেয়। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, বিরামপুরে কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের বিরতি দেওয়া হোক। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি না মানলে আগামী দিনে আমরা আরও জোরদার আন্দোলন করব এবং আমাদের দাবি আদায় করবই।’

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও দিনাজপুর জেলা শাখার সাবেক আমির আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিরামপুরে রেলওয়ে স্টেশনে কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন থামলে শুধু বিরামপুরবাসী উপকৃত হবেন না। এতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর হিলি স্থলবন্দরসহ আশপাশের আরও পাঁচটি উপজেলার মানুষ উপকৃত হবেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আনোয়ারুল।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও দিনাজপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি মুহাদ্দিস এনামুল হক, দিনাজপুর দক্ষিণাঞ্চল উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বিরামপুর চাইল্ড কেয়ার ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক মুশফিকুর রহমান সরকার, সিইডি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছানোয়ার হোসেন, পৌর যুবদলের সদস্যসচিব পলাশ বিন আশরাফী ও বিরামপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন শেষে আজ দুপুর ১২টায় বিরামপুর পেশাজীবি ঐক্য ফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনিমের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়া স্মারকলিপির একটি অনুলিপি বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টারের মাধ্যমে রেলওয়ের মহাপরিচালক বরাবর প্রদান করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ