মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসর বসেছে থাইল্যান্ডে। এ আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তানজিয়া জামান মিথিলা। আগামী ২১ নভেম্বর এ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত আসরের আগে প্রতিদিনই বিভিন্ন সেশনে নানা ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিযোগীদের। বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিশ্বের ১২১টি দেশের প্রতিযোগীরা নিজ নিজ দেশের ন্যাশনাল কস্টিউম পরে হাঁটবেন। 

বাংলাদেশের প্রতিনিধি তানজিয়া জামান মিথিলা ন্যাশনাল কস্টিউম হিসেবে কী পরবেন, সেই লুকের ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তার এসব ছবিতে দেখা যায়, ন্যাশনাল কস্টিউম হিসেবে মিথিলা বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের নারীদের প্রধান পোশাক শাড়ি। আর দেশের ঐতিহ্য বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে বেছে নিয়েছেন সাদা রঙের জামদানি শাড়ি। মিথিলার পরনের জামদানি শাড়ির মোটিফে রয়েছে—বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। 

আরো পড়ুন:

মোদিকে পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন ঐশ্বরিয়া

পঞ্চাশের সুস্মিতা কেন বিয়ে করেননি?

এসব ছবি পোস্ট করে দীর্ঘ একটি ক্যাপশন দিয়েছেন। তাতে তার সাজপোশাকে ইতিবৃত্ত জানিয়েছেন। এ লেখার শিরোনাম—“মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের জাতীয় কস্টিউম—বাংলার রানি”। মিথিলা লিখেছেন—“মিস ইউনিভার্সের মঞ্চের ন্যাশনাল কস্টিউম পর্বের জন্য ঐতিহ্যবাহী অভিজাত জামদানি পরেছি; এটি বাংলার রাজকীয় ইতিহাসের জীবন্ত ঐতিহ্য।”  

একসময় বাংলার অভিজাত শ্রেণির জন্য বোনা হতো জামদানি শাড়ি, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বহন করে চলেছে একই শিল্পরীতি, সৌন্দর্যবোধ আর সাংস্কৃতিক গৌরবের নিদর্শন। বাংলার প্রাচীন তাঁতশিল্প থেকে উঠে আসা এই ন্যাশনাল কস্টিউম একটি হাতে বোনা জামদানি শাড়ি। এতে মিশে আছে ঐতিহ্য, সৌন্দর্য আর দৃঢ়তার গল্প। এর শিকড় সতের শতকের মোগল আমলে, যখন জামদানি ছিল রানি, নবাব পরিবারের নারী ও অভিজাতমহলের বিলাসী আর রুচির প্রতীক। সূক্ষ্ম সুতায় বোনা এই শাড়ির প্রতিটি সুতা তৈরি হয়েছে বাছাই করা তুলা থেকে। যে সুতার ওপরে ফুটে উঠেছে সোনালি জরির কারুকাজ। ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা তীরের দক্ষ তাঁতিদের হাতে এসব নকশা নতুন জীবন পেয়েছে।  

২০১৩ সালে ইউনেসকো জামদানিকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর শিল্পগুণ ও ঐতিহ্যের প্রতি বিশ্বব্যাপী শ্রদ্ধার প্রমাণ এটি। মিথিলার পুরো শাড়িতে ফুটে উঠেছে শাপলার মোটিফ। এই মোটিফ বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে মিথিলা বলেন, “শাপলা এই মাটির শান্তি, পবিত্রতা ও অপরাজেয় মনোভাবের প্রতীক। এই বিশেষ জামদানি শাড়িটি পুরোপুরি হাতে তৈরি করা, বানাতে সময় লেগেছে প্রায় ১২০ দিন। শাড়িটির ডিজাইন করেছেন আফরিনা সাদিয়া সৈয়দা।” 

জামদানি শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নিয়েছেন ব্লাউজ ও গহনা; যা বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। পুরো সেটটি তৈরি করেছে সিক্স ইয়ার্ড স্টোরি। গহনার পুরো সেটটি বানাতে ১২ জন কারিগরের সময় লেগেছে আড়াই মাস। মিথিলা চেয়েছিলেন সাদা জামদানির সঙ্গে পুরো গহনায় থাকবে সোনালি লুক। এ কারণে ২২ ক্যারেট সোনার প্রলেপ দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ গহনায়। টিকলি, চোকার, ঝুমকা, বালা, মোটা চূড়া, রতনচূড়, বাজু, বিছা, চাবির গোছা, আঁচলের ওপর বসানো গহনার সবকিছুতেই শাপলার থিম রয়েছে। গলার হারের ঝুলে থাকা সবুজ পাথরগুলো শাপলা পাতার রং থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে। 

মিথিলাকে এমন সাজপোশাকে দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। শফিকুল আলম বাবু লেখেন, “মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।” ওপার বাংলার আদিত্রী লেখেন, “মা সরস্বতীর লুকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা। পদ্মফুলের সঙ্গে মা লক্ষ্মীর আভা বজায় রাখা। তাহলে আপনি কি উভয় বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছেন?” সৈয়দা মরিয়ম সিরাত লেখেন, “এটা কীভাবে সম্ভব! আমি একমাস আগে অনেক পোস্টে মন্তব্য করেছিলাম, ‘মিথিলা আপুর মধ্যে ‘ওয়াটার লিলির’ মতো আভা আছে। সরল, নরম, মার্জিত অথচ সুন্দর।” এমন অসংখ্য মন্তব্য শোভা পাচ্ছে কমেন্ট বক্সে। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র জ মদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে বিমানবন্দরের রানওয়েতে শিয়াল, ২৬ মিনিট পর উড়ল উড়োজাহাজ

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়েতে উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঢাকাগামী ইউএস–বাংলার একটি উড়োজাহাজ। এ সময় পাইলট নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারে বার্তা পাঠান, রানওয়েতে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। এরপরই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রানওয়েতে শিয়াল দেখতে পায়। শিয়াল সরিয়ে দেওয়ার পর উড্ডয়ন করে উড়োজাহাজটি।

শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটেছে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। উড়োজাহাজটির উড্ডয়নের সময় ছিল ১১টা ৪০ মিনিট। তবে শিয়ালের ঘটনায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার পর উড়োজাহাজটি উড্ডয়ন করে দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত উড়োজাহাজ উড্ডয়নের আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের গাড়ি দিয়ে রানওয়ে পরিদর্শন করা হয়। আজও পরিদর্শন করে রানওয়ে ক্লিয়ার (ঠিক আছে) বলে জানানো হয়। তবে এরপরই উড্ডয়নের আগমুহূর্তে হঠাৎ করেই জঙ্গল থেকে একটি শিয়াল দ্রুত রানওয়েতে চলে আসে। খবর পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল আরও জানান, রানওয়ের দুই পাশে জঙ্গল রয়েছে। কুকুর ও শিয়াল যাতে রানওয়েতে আসতে না পারে সে জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। সিটি করপোরেশনের সহায়তায় কুকুর ধরে বিমানবন্দর এলাকা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় রেখে আসা হয়। নিরাপত্তার যাতে ঘাটতি না থাকে, সে জন্য উড়োজাহাজ উড্ডয়ন বা অবতরণের আগে আরেক দফা গাড়ি দিয়ে রানওয়ে ঘুরে দেখা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ