নওগাঁর তৌহিদুর রহমান তকু ৪৫ বছর বয়সে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নে বিভোর। মানসিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘসময় পড়াশোনার বাইরে ছিলেন তপু। তবে অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে হার মানতে দেয়নি।

অসুস্থতা ও নানা প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কলা ও আইন অনুষদের (‘বি’ ইউনিটের) প্রথম পর্বের (সকাল ১০টা থেকে ১১টা) ভর্তি পরীক্ষা দেন তৌহিদুর রহমান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৪১৮ নম্বর কক্ষে তার আসন পড়েছিল।

তৌহিদুর রহমান তকুর বাড়ি নওগাঁ শহরের পার নওগাঁ এলাকায় ছোট যমুনা নদীর তীরে। বাবা মৃত বজলুর রশিদ পেশায় ছিলেন একজন স্টেশন মাস্টার।

রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্রে দেখা যায়, তৌহিদুর রহমান নওগাঁর এনায়েতপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষায় ৪.

৬৩ জিপিএ পেয়েছেন এবং ২০২৪ সালে গয়ড়া তেঁতুলিয়া ডিএম ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ৪.৬৪ জিপিএ পেয়ে আলিম পাস করেন।

তবে তৌহিদুর রহমানের দাখিল ও আলিম পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডে দেখা যায় তার জন্ম তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০০৫। কিন্তু বাস্তবিকতায় তার বয়স কত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তৌহিদুর রহমান তপু ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, জীবন যে একটি ফুলশয্য নয়, তা হাঁড়ে হাঁড়ে উপলব্ধি করতে পেরেছেন তপু। কিশোর বয়সে নিম্নমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার আগেই মস্তিষ্কের জটিল রোগে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তপু। ২৬-২৭ বছর অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করেছেন। তার স্ত্রীও তাকে ছেড়ে গেছেন। স্ত্রী চলে যাওয়ার পরে মা ও বড় বোনই দেখাশোনা করেন তার।

সুস্থ হওয়ার পরে নওগাঁ সরকারি কে. ডি স্কুলে ভর্তি হন। এরপর তিনি ২০১৯ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেডিসি, ২০২১ সালে দাখিল এবং ২০২৪ সালে আলিম পাশ করেন। সুস্থ হওয়ার পরে তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, টিউশনি করে তকু সময় পার করেন। পরিবারের সদস্য হিসেবে একমাত্র মা আছেন। বিয়ে করেছিলেন পরে তালাক হয়ে যায়, সন্তানও নেই। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের টিউশনি করান, তাদের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে তপু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ভালো ফল করতে চাই। আমি একজন শিক্ষক হতে চাই। আমি গরিব শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে চাই। তাদের স্বল্প খরচে পড়াতে চাই। দেশের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা যেন কম খরচে ভালো শিক্ষার মান পায়, সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ভর্তির সুযোগ না-ও পাই, আবার চেষ্টা করবো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবো।

যোগ্যতা অনুসারে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেবেন তিনি। সুযোগ পেলে বাংলা অথবা ইংরেজিতে পড়তে চান তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত হ দ র রহম ন পর ক ষ য় র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ২৬ হাজারের মতো শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এর মধ্যে শুধু গাজা নগরীতে এই সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এসব শিশুর জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।

গত মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকার মুখপাত্র টেস ইনগ্রাম। মঙ্গলবারই ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করেছেন।

ইনগ্রাম বলেন, আগস্টে গাজায় প্রতি আট শিশুর একজন মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছিল, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ হার। গাজা নগরীতে এই অনুপাত প্রতি পাঁচে একজন। তিনি বলেন, গাজা নগরী থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষকে জোরপূর্বক সরানো হচ্ছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের প্রাণনাশ হতে পারে। ইসরায়েলের স্থল অভিযানের মুখে শহরের পুষ্টিকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলি সেনারা বলছেন, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় আশ্রয় নেওয়া মানুষ খাদ্য, ওষুধ ও তাঁবু পাবেন। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে ঘোষিত ‘মানবিক আশ্রয়’ এলাকাগুলোতেও হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইনগ্রাম বলেন, ‘গাজায় সাত শতাধিক দিনের যুদ্ধ-ধ্বংসযজ্ঞে প্রায় পাঁচ লাখ শিশুকে এক নরক থেকে আরেক নরকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে, যা অমানবিক।’

জাতিসংঘের হিসাবে, গাজা নগরী ও আশপাশের এলাকাগুলোর ১০ লাখ মানুষের প্রায় ৪০ শতাংশ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি: মাইগ্রেশন, বিষয় ও প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ প্রকাশ
  • হেলথ টেকনোলজি কোর্সে ভর্তি, অপেক্ষমাণ থেকে তৃতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে