প্রতিদ্বন্দ্বী চিপ নির্মাতা এএমডি ও এনভিডিয়ার পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইন্টেল। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ইন্টেল প্রোডাক্ট সেফটি রিপোর্ট ২০২৪’–এ প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, তাদের চিপের তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোর নিরাপত্তাত্রুটির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এএমডির ফার্মওয়্যার নিরাপত্তাত্রুটি ইন্টেলের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি। অপর দিকে এনভিডিয়ার জিপিইউতে নিরাপত্তাসংক্রান্ত সমস্যা ৮০ শতাংশ বেশি। ইন্টেল জানিয়েছে, তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা গবেষণা দল প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যে বিদ্যমান ত্রুটিগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু নিরাপত্তাত্রুটির সংখ্যা নির্ধারণ করা নয়; বরং কোন প্রযুক্তি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এএমডির হার্ডওয়্যার রুট অব ট্রাস্ট প্রযুক্তিতে ইন্টেলের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি ফার্মওয়্যার নিরাপত্তাত্রুটি রয়েছে। এ ছাড়া এএমডির কনফিডেনশিয়াল কম্পিউটিং প্রযুক্তিতেও ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি ত্রুটি শনাক্ত হয়েছে। জিপিইউ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এনভিডিয়ার অবস্থান নিয়েও সমালোচনা করেছে ইন্টেল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে এনভিডিয়ার জিপিইউতে ১৮টি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাত্রুটি শনাক্ত হয়েছে। এএমডির নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ইন্টেল। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এএমডির চিপে শনাক্ত হওয়া নিরাপত্তাত্রুটির মাত্র ৫৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব গবেষণা দল খুঁজে পেয়েছে, বাকিগুলো শনাক্ত করেছেন স্বাধীন গবেষক ও সাধারণ ব্যবহারকারীরা। এ ছাড়া এএমডির সিকিউর প্রসেসর ইঞ্জিনে এমন কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে, যেগুলোর কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি। এসব ত্রুটি ৭৮টি এসকিইউকে প্রভাবিত করছে।

নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী দাবি করে ইন্টেল জানিয়েছে, তাদের হার্ডওয়্যার রুট অব ট্রাস্ট প্রযুক্তিতে থাকা সব নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান দেওয়া হয়েছে বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইন্টেল আরও জানিয়েছে, তাদের রুট অব ট্রাস্ট–সংক্রান্ত সব ত্রুটি তাদের নিজস্ব গবেষণা দল শনাক্ত করেছে এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সুপ্রতিষ্ঠিত বাগ বাউন্টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। যদিও এএমডিরও অনুরূপ একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। জিপিইউ নিরাপত্তা নিয়ে ইন্টেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইন্টেলের জিপিইউতে মাত্র ১০টি ত্রুটি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে কেবল একটি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, বাকিগুলো মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে এনভিডিয়ার জিপিইউতে ১৮টি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাত্রুটি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১৩টি ত্রুটি সাইবার অপরাধীদের জন্য আক্রান্ত কম্পিউটারে দূরবর্তী স্থান থেকে কোড স্থাপনের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জ প ইউত ইন ট ল র এনভ ড য এএমড র

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো একমত হলে বর্ষপূর্তিতেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ

ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে। বিশেষ করে নির্বাচিত সরকারের সংস্কার করা সংবিধানের প্রস্তাবনায় এই স্বীকৃতির উল্লেখ থাকবে। এ ছাড়া সংবিধানের তফসিলেও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংযুক্ত থাকবে। এ ঘোষণাপত্র ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে।

বহুল আলোচিত জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় এ কথাগুলো বলা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যতম আলোচিত বিষয় এই ঘোষণাপত্র। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি সামনে রেখে সম্প্রতি জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলকে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর সবুজ সংকেত পেলে অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতেই ঘোষণা করা হতে পারে জুলাই ঘোষণাপত্র।

ঘোষণাপত্রের খসড়ায় ২৬টি দফা রয়েছে। প্রথম ২১ দফায় মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের মানুষের অতীতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ব্যক্ত জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রত্যয় ও প্রয়োগ রাজনৈতিক এবং আইনি উভয় দিক থেকে যুক্তিসংগত, বৈধ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

আরও পড়ুনমৌলিক সংস্কারের সব বিষয়ে মতৈক্য হয়নি ৫ ঘণ্টা আগে

পরের পাঁচটি দফায় রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা, আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-খুন, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও সব ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুণ্ঠনের অপরাধের দ্রুত উপযুক্ত বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার, দুর্নীতি, শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।

খসড়া ঘোষণাপত্রে শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রতিষ্ঠিত বাকশাল বা একদলীয় শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর দেশে সিপাহি জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লব সংঘটিত হয় বলে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের কথা যেমন এতে উল্লেখ রয়েছে, পাশাপাশি এক-এগারোর ‘ষড়যন্ত্রমূলক বন্দোবস্তের’ কড়া সমালোচনাও ঘোষণাপত্রে আছে।

জনগণের লড়াইকে সমর্থন দেয় সামরিক বাহিনী

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, পিলখানা ট্র্যাজেডি, শাপলা চত্বরে গণহত্যার মতো আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, একদলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি চরম গণবিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক ও মানবাধিকার হরণকারী শক্তি বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী, মাফিয়া ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের রূপ দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

অবৈধভাবে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে (২০১৪, ’১৮ ও ’২৪) দেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করে বলেও জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়, তথাকথিত উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের নেতৃত্বে সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বিগত পতিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকার বাংলাদেশ ও এর অমিত অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং এর পরিবেশ-জলবায়ু ও প্রাণবৈচিত্র্য বিপন্ন করে।

খসড়া ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি ঘোষণা করে, যা পরে ১ দফায় রূপান্তরিত হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা জনগণের গণতান্ত্রিক লড়াইকে সমর্থন দেন। তীব্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গণভবনমুখী জনতার উত্তাল যাত্রার মুখে অবৈধ, অনির্বাচিত, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট (২০২৪) পদত্যাগ করেন এবং তিনি মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • দলগুলো একমত হলে বর্ষপূর্তিতেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
  • রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান