এএমডি ও এনভিডিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে কেন প্রশ্ন তুলছে ইন্টেল
Published: 15th, February 2025 GMT
প্রতিদ্বন্দ্বী চিপ নির্মাতা এএমডি ও এনভিডিয়ার পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইন্টেল। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ইন্টেল প্রোডাক্ট সেফটি রিপোর্ট ২০২৪’–এ প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, তাদের চিপের তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোর নিরাপত্তাত্রুটির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এএমডির ফার্মওয়্যার নিরাপত্তাত্রুটি ইন্টেলের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি। অপর দিকে এনভিডিয়ার জিপিইউতে নিরাপত্তাসংক্রান্ত সমস্যা ৮০ শতাংশ বেশি। ইন্টেল জানিয়েছে, তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা গবেষণা দল প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যে বিদ্যমান ত্রুটিগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু নিরাপত্তাত্রুটির সংখ্যা নির্ধারণ করা নয়; বরং কোন প্রযুক্তি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এএমডির হার্ডওয়্যার রুট অব ট্রাস্ট প্রযুক্তিতে ইন্টেলের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি ফার্মওয়্যার নিরাপত্তাত্রুটি রয়েছে। এ ছাড়া এএমডির কনফিডেনশিয়াল কম্পিউটিং প্রযুক্তিতেও ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি ত্রুটি শনাক্ত হয়েছে। জিপিইউ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এনভিডিয়ার অবস্থান নিয়েও সমালোচনা করেছে ইন্টেল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে এনভিডিয়ার জিপিইউতে ১৮টি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাত্রুটি শনাক্ত হয়েছে। এএমডির নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ইন্টেল। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এএমডির চিপে শনাক্ত হওয়া নিরাপত্তাত্রুটির মাত্র ৫৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব গবেষণা দল খুঁজে পেয়েছে, বাকিগুলো শনাক্ত করেছেন স্বাধীন গবেষক ও সাধারণ ব্যবহারকারীরা। এ ছাড়া এএমডির সিকিউর প্রসেসর ইঞ্জিনে এমন কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে, যেগুলোর কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি। এসব ত্রুটি ৭৮টি এসকিইউকে প্রভাবিত করছে।
নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী দাবি করে ইন্টেল জানিয়েছে, তাদের হার্ডওয়্যার রুট অব ট্রাস্ট প্রযুক্তিতে থাকা সব নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান দেওয়া হয়েছে বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইন্টেল আরও জানিয়েছে, তাদের রুট অব ট্রাস্ট–সংক্রান্ত সব ত্রুটি তাদের নিজস্ব গবেষণা দল শনাক্ত করেছে এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সুপ্রতিষ্ঠিত বাগ বাউন্টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। যদিও এএমডিরও অনুরূপ একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। জিপিইউ নিরাপত্তা নিয়ে ইন্টেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইন্টেলের জিপিইউতে মাত্র ১০টি ত্রুটি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে কেবল একটি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, বাকিগুলো মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে এনভিডিয়ার জিপিইউতে ১৮টি উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাত্রুটি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১৩টি ত্রুটি সাইবার অপরাধীদের জন্য আক্রান্ত কম্পিউটারে দূরবর্তী স্থান থেকে কোড স্থাপনের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ প ইউত ইন ট ল র এনভ ড য এএমড র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।