বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে হবে বিএসএফের ‘ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার’
Published: 5th, May 2025 GMT
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আরও ১৬টি ব্যাটালিয়ন গঠন সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এসব ব্যাটালিয়নে থাকবে প্রায় ১৭ হাজার জওয়ান। পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তে পশ্চিম ও পূর্ব কমান্ডের জন্য দুটি ‘ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার’ স্থাপন করা হবে। সরকারি সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
পরিকল্পনাটি ইতিমধ্যে নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদন চূড়ান্ত হলে এটি বিএসএফের জন্য বড় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। গত বছর বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পূর্ব সীমান্তে আর ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ ঘিরে নজরদারি জোরদার করছে বিএসএফ।
নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছে, বিএসএফ শিগগিরই নতুন করে ১৬টি ব্যাটালিয়ন গঠনের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এসব ব্যাটালিয়ন গঠন করা হবে। সূত্রগুলো জানায়, এখনো কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রের মতো কয়েকটি চূড়ান্ত অনুমোদন বাকি আছে। তবে খুব শিগগির তা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সীমান্তের এই দুই ফ্রন্টে বর্তমানে এই আধা সামরিক বাহিনীর ১৯৩টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। বিএসএফের প্রতিটি ব্যাটালিয়নে রয়েছে এক হাজারের বেশি সেনা। নতুন ১৬টি ব্যাটালিয়নে প্রায় ১৭ হাজার সদস্য যুক্ত হবেন।
সূত্রগুলো জানায়, বিএসএফের রূপরেখা অনুযায়ী নতুন ব্যাটালিয়নগুলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্ত পাহারার মতো প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে এই বাহিনীকে সহায়তা করবে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, বিএসএফের জন্য দুটি ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টারও (ফিল্ড কমান্ড ঘাঁটি) অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে জম্মু ও পাঞ্জাবে ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারে জম্মুতে একটি ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হবে। বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি আরও উন্নত করতে অপর ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টারটি হবে মিজোরামে।
জম্মু সীমান্তে বিএসএফের বর্তমানে চারটি সেক্টর রয়েছে। এগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন ডিআইজি (ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। রাজৌরি, সুন্দরবনি, জম্মু এবং ইন্দ্রেশ্বর নগরে এসব সেক্টর অবস্থিত। অন্যদিকে আসামভিত্তিক মিজোরাম-কাছার ফ্রন্টিয়ার হেডকোয়ার্টারের অধীনে সেক্টরগুলো রয়েছে শিলচর, আইজল এবং মণিপুরে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, নতুন এই ব্যাটালিয়নগুলোতে পুরুষ ও নারী সদস্য নিয়োগপ্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করবে বিএসএফ। এরপর শুরু হবে তাঁদের প্রশিক্ষণ। আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে এই ইউনিটগুলো গঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বিএসএফের সদস্যসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার। এই বাহিনী কয়েক বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ২০ থেকে ২১টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রস্তাব পাঠায়। অবশেষে সরকার ১৬টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনে সম্মতি দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ র স ত রগ ল সরক র ন গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ভারতীয় সীমান্তে জড়ো হচ্ছে শত শত মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানা এলাকার হাকিমপুর সীমান্তে এমন ঘটনা দেখা গেছে। বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র এই সীমান্তেই জড়ো হয়েছেন নারী শিশু সহ অন্তত ৩০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
আরো পড়ুন:
সৌদিতে বাস-ট্যাংকার সংঘর্ষ, ৪২ ভারতীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা
দিল্লির আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর সহযোগী গ্রেপ্তার
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, শহর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারী এই বাংলাদেশিরা ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য হাকিমপুর সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন। কেউ দালালের মাধ্যমে কেউ আবার নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এসেছেন সীমান্তে। কিন্তু বিএসএফের বাধায় সীমান্তেই আটকে পড়েছেন এই বাংলাদেশিরা।
আটকে পড়া ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশের পর তারা কলকাতা, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইয়ের মতো শহরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত জুড়ে শুরু হওয়া এসআইআরের কারণে জেল ও জরিমানা এড়াতে দেশে তারা ফিরতে চাইছেন।
অফিসিয়াল বিবৃতি জারি না করলেও বিএসএফ সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এমন ছবি শুধুমাত্র হাকিমপুর সীমান্তের নয়। এই সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যাটা অনেক বেশি। বিএসএফ জানিয়েছে, আটকে পড়া এই বাংলাদেশিদের মানবিক বিবেচনায় গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্বের দাবির স্বপক্ষে নিথিপত্র বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আগামী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ