অবশেষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন
Published: 7th, May 2025 GMT
দীর্ঘ ৮ বছর প্রতিক্ষার পর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আনন্দ মিছিলও বের করেন তারা।
দীর্ঘ ৮ বছর ধরে নানা জটিলতা ও সংশোধনের পর বুধবার (৭ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। চলতি মে মাস থেকেই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের বাজেটে প্রথমে ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে তা কমিয়ে ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
জৌলুস ফিরলেও অরক্ষিত শিলাইদহের কাচারি বাড়ি
‘গানটা না থাকলে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য কতটা উঁচু হতো আমার ধারণা নেই’
জানা গেছে, নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম প্রকল্প প্রস্তাব করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি ফেরত দিয়ে ব্যয় এবং আকার কমানোর সুপারিশ করা হয়। পরে আরো পাঁচবার প্রস্তাব করা হলেও অনুমোদন না দিয়ে সংশোধনের জন্য একইভাবে ফেরত দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আকার ও ব্যয় কমানো ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যয় সংকোচন-নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বছরের ডিসেম্বরে সপ্তমবারের মতো প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। এবার ব্যয় আগের চেয়ে ৮৯ শতাংশ কমিয়ে ৯৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পর্যালোচনা সভায় আবারও ব্যয় কমানোর সুপারিশ করা হয়।
বারবার সংশোধন আর পুনর্গঠনের গোলকধাঁধায় আটকে ছিল এই প্রস্তাব। অবশেষে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রকল্প প্রস্তাবটি বুধবার একনেকের সভায় অনুমোদন করা হয়েছে।
ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে
১৫ বছর ধরে অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল আর সংগঠন মিলে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।
এর ফলে হাসিনা সরকারের পতন হয় ও তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ পরিবর্তন শুধু একটা সরকারের পরিবর্তন নয়, বরং দীর্ঘ সময়ের ভয় ও দমনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহস, আশা ও গণতান্ত্রিক চেতনার একটি বড় জয় ছিল।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনের সফলতাকে শুধু নিজের নামে দাবি করতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকে, তাদের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। তাই তারাই ভবিষ্যতে ক্ষমতার একমাত্র ভাগীদার।
আবার কিছু ধর্মীয় বা আদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যারা আগে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ ছাড়া কিছু নতুন দল, যারা আগে রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত ছিল না, তারাও হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে। তারা নিজেদের ‘নতুন শক্তি’, ‘ভিন্নধারার দল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু তাদের আচরণে কখনো কখনো পুরোনো রাজনীতির কৌশলই দেখা যায়।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা স্বৈরশাসকদের টিকে থাকার দুটি মূলমন্ত্রেই ব্যর্থ২২ আগস্ট ২০২৪এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী একসঙ্গে থাকলেও আন্দোলনের পর তারা নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ করছে। এতে আন্দোলনের মূল চেতনা—জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন ধীরে ধীরে পেছনের দিকে চলে গেছে।
এ বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাই কি আবার ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গিয়ে নতুন একধরনের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেবেন?
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০২৪