টাকা না দিলে পরীক্ষায় ফেল দেখানো হয়। হয়রানি করা হয় বছরের পর বছর। দালাল আর টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পাবনা কার্যালয়ে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চালানো অভিযানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (৭ মে) দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নিচতলায় বিআরটিএর পাবনা কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক। এতে নেতৃত্ব দেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সুত্রধর।

সাধন চন্দ্র সুত্রধর বলেন, “অভিযানের সময়ের কিছু সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়। তাদের মাধ্যমে জানা গেছে, এখানে দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এখানে কাজ করতে ১০-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এমনও অভিযোগ আছে যে, ২০১৯ সালে কাগজপত্র দিয়েছেন, কিন্তু কাজ হয়নি। যখনই দালালের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয় তখনই কাজ হয়।”

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠিতে বিআরটিএ’র কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের সপরিবারে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

তিনি আরো বলেন, “মূলত দালাল আর টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না- এমন তথ্য মিলেছে। টাকা দিলেই লাইসেন্সসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। রেকর্ডপত্র পেলেই সেগুলো দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পাঠাব। এরপর সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযানের সময় ভুক্তভোগী ঈশ্বরদী উপজেলার জয়নগর গ্রামের রবিন হোসেন বলেন, 'আমি ২০১৯ সালে ড্রাইভিং লাইন্সের জন্য আবেদন করি। বাইওমেট্রিক দেয়ার পর থেকে ৫ বছর ধরে ঘুরছি, কিন্তু লাইসেন্স পাইনি। পরে ২০২৪ সালে আমাকে আবার নতুন করে আবেদন করতে বলা হয়। তখন আবেদন করে লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা দিয়ে তবে আমি লাইসেন্স পাই। প্রথমবার দালালের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। আর পরেরবার ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।'

উল্লেখ্য, বিআরটিএ, পাবনা কার্যালয় যেন দালালদের স্বর্গরাজ্য। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে সেখানে দালাল চক্রের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, নবায়ন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট কোনো কাজই দালাল ছাড়া হয় না। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ হয় ব আরট

এছাড়াও পড়ুন:

জবি শিবিরের মেধাবীদের তালিকায় নেই ৩ বিভাগের শিক্ষার্থী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। তবে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি সংস্কৃতি-সম্পর্কিত নাট্যকলা, সংগীত ও ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে সংগঠনটি।

জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে ২০১৮–১৯ ও ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের প্রতি বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের হাতে এই মেরিট অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই তিন বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় ছিল না।

আরো পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় ‘হল অব ফেম অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য

যবিপ্রবির শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক অর্জন

নাট্যকলা বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. ইমাম হোসেন বলেন, “ছাত্রশিবির কাকে বৃত্তি দেবে, সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ থেকে কলা অনুষদের তিনটি বিভাগ বাদ দেওয়া নিন্দনীয়, এটা প্রকাশ্য বৈষম্য ও স্বল্পজ্ঞানের প্রমাণ। নাট্যকলা, সংগীত, ফিল্ম—এসব বিভাগও বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ। এগুলো বাদ দেওয়া সংস্কৃতিকে ছোট করে দেখার চেষ্টা।”

তিনি আরো বলেন, “যে কবি মতিউর রহমান মল্লিকের নামে পুরস্কার, তিনি নিজেই ছিলেন সংস্কৃতিমনা কবি ও গীতিকার। তার নামের সঙ্গে এমন বর্জন বেমানান।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “যদি সত্যিই মেধার ভিত্তিতে পুরস্কার দেওয়া হয়, তাহলে সেটা সব বিভাগের শিক্ষার্থীর প্রাপ্য। আমাদের বিভাগগুলোকে কেন বাদ দেওয়া হলো, জানতে চাই। আশা করি, শিক্ষক ও বিভাগীয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।”

নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন চাকমা বলেন, “আমাদের আবর্তনের স্নাতক পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি—এটা যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে। তবে আয়োজকরা বিভাগগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, সেটাও প্রশ্ন। যদি যোগাযোগ না করে থাকে, তাহলে সিদ্ধান্তটা এককেন্দ্রিক মনে হয়। অথচ অন্য বিভাগগুলোর ক্ষেত্রে যোগাযোগ করা হলে সেটা উদারতার পরিচয় দিত। যদি বিশেষায়িত বিভাগগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সেটা স্পষ্ট বৈষম্য। এর দায় সংগঠনটির ওপরই বর্তাবে।”

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমি সর্বশেষ ৭ম সেমিস্টারের ফলাফলে প্রথম হয়েছিলাম। কিন্তু এই মেরিট অ্যাওয়ার্ডের বিষয়ে জানতে পারি অনুষ্ঠান হওয়ার পর ব্যানার দেখে। আমাদের বিভাগের কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে আক্ষেপ হয়েছে।”

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম আরিফ বলেন, “আমরা খুব স্বল্প সময়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছি। কন্ট্রোলারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের অনেকগুলোই ভুল ছিল। তবুও আমরা রেজিস্ট্রেশন চালু রেখে বিভাগগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।”

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, “দুই-একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, এজন্য আমরা দুঃখিত। তবে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে, সবাইকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এখনো যেসব যোগ্য শিক্ষার্থী পুরস্কার পাননি, তারা রেজিস্ট্রেশন করলে আমরা তাদেরও সম্মাননা প্রদান করব।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উত্তর কোরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কিম ইয়ং নাম মারা গেছেন
  • জবি শিবিরের মেধাবীদের তালিকায় নেই ৩ বিভাগের শিক্ষার্থী