পৃথক দাবিদাওয়া নিয়ে সচিবালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও চট্টগ্রাম বন্দরে চলমান আন্দোলনকে ইঙ্গিত করে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেছেন, ‘আজ সচিবালয়, এনবিআর কিংবা পোর্টে যাঁরা স্ট্রাইক করছেন, তাঁদের বলছি, বিপ্লব ওখানেও হবে।’

আজ সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে হান্নান মাসউদ এই হুঁশিয়ারি দেন। এর আগে আজ সকালে চট্টগ্রামে দলের এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহও কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, কর্মচারীরা সরকারের কাজে বাধা দিলে, হুমকি দিলে জনগণই তাঁদের বিকল্প খুঁজে নেবে। সংস্কারে বাধা দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।

বিকেলে আবদুল হান্নান মাসউদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ সচিবালয়, এনবিআর কিংবা পোর্টে যাঁরা স্ট্রাইক করছেন, তাঁদের বলছি, বিপ্লব ওখানেও হবে। আপনারা দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বাধীনতা চাচ্ছেন, কিন্তু চব্বিশ-পরবর্তী সময়ে এটা আর পাবেন না। হাসিনার পুরো শাসনামলের প্রতিটি গুম, খুন, দুর্নীতি, অর্থ পাচার—সবকিছুর সহযোগী আপনারা। ভাববেন না, পার পেয়ে গেছেন। পুনশ্চ বলছি, পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের উচিত অবিলম্বে এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের অপসারণ করে, নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের সহজে ও কম সময়ে শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। এতে আপত্তি জানিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাঁদের ভাষায়, এটা কালাকানুন ও নির্বতনমূলক। এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁদের আপত্তির মধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গতকাল রাতে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আরও পড়ুনসচিবালয়ে আগামীকালও বিক্ষোভ, দেশের সরকারি কর্মচারীদের একই কর্মসূচি পালনের আহ্বান২ ঘণ্টা আগে

অন্যদিকে ১২ মে রাতে এনবিআরকে ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারির পরদিন থেকে এটি বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি করে আসছিলেন এনবিআরের কর্মীরা। আন্দোলনের পরিপ্রক্ষিতে সরকার তাঁদের দাবি মানার আশ্বাস দিয়েছে। পরে গত রোববার রাতে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে অপসারণের জন্য তিন দিন সময় বেঁধে দিয়েছে এই আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।

আরও পড়ুনসচিবালয়ে বিক্ষোভের বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ন ন ন ম সউদ কর মকর ত আবদ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পশুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীর দুই নেতা গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজির অভিযোগে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর পশুর হাটের ‘বৈধ’ ইজারাদার মাহাবুব রহমান ও তাঁর সহযোগী মো. আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার সময় যৌথ বাহিনীর হাতে তারা আটক হন। গতকাল বুধবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। সেখানে বৈধতার কাগজপত্র দেখালে শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তার মাহাবুব রহমান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। মো. আলমগীর কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক। গত মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাপুর গরুর হাটে রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। পরে ফেনী জেলার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আজাদ হাটে টহলরত যৌথ বাহিনীর কাছে অভিযোগ করলে তাদের আটক করা হয়। আলমগীর পুরো ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এজাহারে বলা হয়, ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার মঙ্গলবার যাত্রাপুর হাট থেকে ১৭টি মহিষ কেনেন। পরে অভিযুক্তরা তাঁকে (আনোয়ার) গরু-মহিষ বিক্রির রসিদ শেডঘরে নিয়ে যান এবং প্রত্যেক মহিষের জন্য ৫০০ টাকা করে ৮ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এ সময় আনোয়ার তাদের কাছে রসিদ চাইলে তারা তা দেখাতে পারেননি। আনোয়ার বিষয়টি যৌথ বাহিনীকে জানালে এ দু’জনকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘মাহাবুব রহমান ওই হাটের ইজারাদার। তিনি চাঁদাবাজ নন। আমার সঙ্গে মাহাবুব রহমানের কথা হয়েছে। তারা কাগজ প্রদর্শনের সময় পাননি। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী। সকালে কাগজপত্র দেখালে তাদের জামিন হয়।’ 

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মাহাবুব রহমান যাত্রাপুর হাটের বৈধ ইজারা মালিক। তবে ওই সময়ে তাঁর কাছে কাগজপত্র না থাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়। সকালে থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. আলমগীর বলেন, দুপুরে যথাযথ কাগজ আদালতে দাখিল করে জামিনে মুক্ত হয়েছি। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ