রংপুরে হাসপাতালে শিশুর মৃত্যুর পর অভিযান, ওটি সিলগালা ও জরিমানা
Published: 10th, July 2025 GMT
শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, ২০ শয্যার অনুমোদন নিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শয্যায় চিকিৎসা চালানো, অপরিষ্কার অপারেশন থিয়েটার (ওটি), ওটিতে জরুরি ওষুধপথ্য ও যন্ত্রাংশ না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে; একই সঙ্গে ওটি সিলগালা করা হয়েছে।
নগরেরর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় আরোগ্য ক্লিনিকে গতকাল বুধবার বিকেলে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান। এ সময় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, ৪ জুলাই নগরের বাস টার্মিনাল রোডে আরোগ্য ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হন বদরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির জমির উদ্দিনের মেয়ে জুঁই মণি (১২)। গত মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রোপচারের সময় শিশুটির মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা রাস্তায় লাশ রেখে আহাজারি করছেন—এমন খবরে পুলিশ ছুটে আসে। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটির পরিবারকে ‘ম্যানেজ’ করে এবং তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে যায়।
চিকিৎসক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, ক্লিনিকটিতে নিবন্ধন নবায়ন করা নেই। অপারেশন থিয়েটার অপরিষ্কার। প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই। এ ছাড়া নানা অব্যবস্থাপনা রয়েছে। অপারেশনের সময় চিকিৎসকের কোনো সহকারী ছিল না। এখানে পোস্ট–অপারেটিভ ওয়ার্ড ও লেবার ওয়ার্ড নেই।
আখতারুজ্জামান আরও বলেন, যে শিশুটির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। অপারেশন ও অ্যানেসথেশিয়া যেসব চিকিৎসক করেছেন, তাঁদের পরিচয় জানা গেছে। তাঁদের চিঠি দেওয়া হবে, চিকিৎসায় ত্রুটি পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দাখিল করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কে পড়েছিল কাটা গজারিগাছ, পাশের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে ডাকাত দল
সড়কে দুটি বড় আকারের গজারিগাছ কাটা অবস্থায় পড়েছিল। পাশের জঙ্গল থেকে দা হাতে বেরিয়ে আসে একদল ডাকাত। দা দেখে দৌড়ে উল্টো দিকে পালিয়ে বেঁচে ফিরেছেন। গাজীপুরের শ্রীপুরের ব্যস্ততম মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে যাত্রী রাশেদুল ইসলাম এভাবে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় ওই সড়কের হাশিখালি সেতুর পশ্চিম পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, তিনি মাওনা চৌরাস্তায় ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা করেন। কাজ শেষে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তাঁরা পাঁচজন বাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ হাশিখালি সেতুর কাছে সড়কে দুটি গজারিগাছ পড়ে থাকতে দেখে সবাই আতঙ্কিত হন। মুহূর্তেই পাশের জঙ্গল থেকে ১০–১২ জন হাতে দা নিয়ে সড়কে আসে। এ সময় তাঁরা দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টো মাওনা বাজারের দিকে চলে যান। তাঁদের মতো আরও অনেকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাশিখালি সেতুর পাশে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উত্তর পাশে একটি গজারিগাছের গোড়ার দিকের অংশ কাটা। একইভাবে দক্ষিণ পাশেও আরেকটি গাছ কাটা দেখা যায়। এর কিছুটা পশ্চিম পাশে আরও একটি স্থানে গাছ কেটে রাখার দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন বলেন, ডাকাতদের কাটা গাছের টুকরা রাতেই সড়ক থেকে সরানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা গাড়িচালক মো. সোহেল রানা বলেন, রাতে ডাকাতেরা ডাকাতি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দিগ্বিদিক ছুটে পালিয়ে যায়। সড়কটিতে গত ৩ মার্চ ডাকাতেরা পুলিশের দুই সদস্যকে কুপিয়ে আহত করেছিল। তিনি সড়কে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান।
সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী শিরিশগুরি গ্রামের বাসিন্দা মো. রুহুল আমিন বলেন, ডাকাত দল ঘটনাস্থলের পশ্চিম ও পূর্ব পাশে অন্তত ৩০০ মিটার দূরত্বে দুটি জায়গায় গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। হাশিখালি সেতুর আশপাশে ও বদনিভাঙা মোড়ে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে লোকজন সড়কটিতে রাত ৯টার পর চলাচল করতে ভয় পান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাঁরা খবর পান। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠালে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।