2025-07-30@15:57:35 GMT
إجمالي نتائج البحث: 240

«র ইবন»:

    ইসলামের ইতিহাসে সাহাবিদের অবদান অতুলনীয়। তাঁরা ছিলেন রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে নিকটতম সঙ্গী, যাঁরা ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছিলেন।তাঁদের মধ্যে কিছু সাহাবি জীবদ্দশায়ই রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন। এই সাহাবিদের মধ্যে ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ বা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবির নাম সহিহ হাদিসে স্পষ্ট উল্লেখ আছে।এ ছাড়া বেশ কয়েকজন সাহাবিকে আল্লাহর রাসুল বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে জান্নাতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন।আশারায়ে মুবাশশারা: জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ সাহাবি ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন। এই ১০ জন সাহাবি জীবদ্দশায় রাসুল (সা.) থেকে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।একটি হাদিসে সাঈদ ইবনে জায়িদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘১০ জন জান্নাতে যাবে: আবু বকর জান্নাতি, ওমর জান্নাতি, উসমান জান্নাতি, আলী জান্নাতি, তালহা জান্নাতি, জুবাইর ইবনুল আওয়াম জান্নাতি, আবদুর রহমান ইবনে...
    মহানবী (সা.) বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি নিজে যে নীতি শিখিয়েছিলেন, তা নিজের জীবনে প্রয়োগ করে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।ইসলামে বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি দায়িত্ব নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যদি কোনো যুবক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে তাঁর বয়সের কারণে সম্মান করে, তবে আল্লাহ তার বৃদ্ধ বয়সে তাকে সম্মান করার জন্য কাউকে নিযুক্ত করবেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,০২২)বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করতে তিনি যুবসমাজকে উৎসাহিত করেছেন, যাতে প্রজন্মের মধ্যে দূরত্ব কমে এবং ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে। হাদিসে ‘বয়োজ্যেষ্ঠ’ শব্দটি সাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা জাতি বা ধর্মের সীমাবদ্ধতা ছাড়াই সব বয়োজ্যেষ্ঠের প্রতি সম্মান প্রকাশ করে।সে আমাদের মধ্যে নয়, যে আমাদের শিশুদের প্রতি দয়া করে না এবং আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি সম্মান দেখায় না।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯১৯আরেকটি হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর...
    আমাদের মতোই মহানবী (সা.) নিত্যদিন নানামুখী জীবন–যন্ত্রণার মুখোমুখি হয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের মানুষের সমর্থন ও বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁর জীবনের ঘটনাবলি আমাদের শেখায় কীভাবে আমরা আমাদের উদ্দেশ্যের পথে অটল থাকব, সমর্থন গ্রহণ করব এবং বিরোধিতার মোকাবিলা করব।১. ভিন্নমতের সমর্থকদের মূল্যায়নজীবনে এমন কিছু মানুষ থাকবেন, যারা আপনার উদ্দেশ্য বিশ্বাস না করলেও আপনাকে সমর্থন করবেন, প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নেবেন। এমন সমর্থকদের মূল্য দেওয়া উচিত, এমনকি যদি তারা আমাদের বিশ্বাসে পুরোপুরি একমত না হন, তবুও। নবীজি (সা.)-এর জীবনে এমন একজন ছিলেন তাঁর চাচা আবু তালিব। তিনি ইসলাম গ্রহণ না করলেও নবীজি (সা.)-কে মক্কার কঠিন সময়ে সুরক্ষা দিয়েছেন। আবু তালিব কুরাইশদের বিরোধিতার মুখে অটল থেকে নবীজি (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন (ইবন হিশাম, আস-সীরাহ আন-নাবাবিয়্যাহ, ১/২৬৫, কায়রো: মাকতাবাত মুহাম্মদ আলী সাবিহ)।আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫২. নিকটাত্মীয়দের বিরোধিতার মোকাবিলাকখনো কখনো নিকটাত্মীয়রাও আমাদের...
    ইসলামের প্রতি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো এটি কঠোর এবং মানুষের প্রাকৃতিক আকাঙ্ক্ষাকে দমন করে। বিশেষ করে নারী-পুরুষের মধ্যে প্রেম বা হুব্ব নিয়ে এই ধারণা প্রায়শই প্রচারিত হয়।ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রেমের ধারণা, শরিয়তের সীমাবদ্ধতা এবং ফকিহদের তাত্ত্বিক ও দার্শনিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে।ইসলামে প্রেম: ভুল ধারণা ও বাস্তবতা ইসলাম প্রেমকে নিষিদ্ধ করেনি; বরং এটিকে শরিয়তের সীমার মধ্যে রাখার পক্ষে। ইসলাম প্রেমকে একটি প্রাকৃতিক ও ফিতরাতের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা মানুষকে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উৎকর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে।তবে এই প্রেম যেন ফুজুর (অশ্লীলতা) বা পাপের দিকে না নিয়ে যায়, সেজন্য শরিয়ত কিছু সীমারেখা নির্ধারণ করেছে। ইসলাম প্রেমকে শুদ্ধভাবে পালনের জন্য বিবাহের মাধ্যমে একটি বৈধ পথ দেখিয়েছে।ইসলামের প্রতি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো এটি কঠোর এবং মানুষের প্রাকৃতিক আকাঙ্ক্ষাকে দমন করে।...
    টাকা বা আরো বিশেষ করে বললে, অর্থ আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। কিন্তু টাকা শুধু ধাতব মুদ্রা বা কাগজের নোট নয়, এটি একটি ব্যবস্থা, যা সমাজের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোকে সচল রাখে। ইসলামি ও পশ্চিমা রাষ্ট্রে মুদ্রার ভূমিকা কীভাবে গড়ে উঠেছে এবং এর কাজ কী ছিল, তা বোঝার জন্য আমাদের ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখতে হবে।ইসলামি রাষ্ট্রে মুদ্রার ভূমিকা অতীতে মানুষ বিনিময় প্রথার (Barter System) মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। কিন্তু এ প্রথায় অনেক সমস্যা ছিল। ধরুন, কেউ গম বিক্রি করতে চায়, কিন্তু তার বিনিময়ে তিনি ছাগল চান। যদি ছাগলের মালিক গম না চায়, তাহলে লেনদেন সম্ভব হতো না। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। তখনই টাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যা একটি সাধারণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং বিনিময়প্রক্রিয়াকে...
    নবীজি (সা.) চল্লিশ বছর বয়সে প্রথম ওহি পান। তিনি মানবজাতির কাছে আল্লাহর বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পান এবং এই দায়িত্ব পালনে তিনি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেন।তবে, এই ওহি গ্রহণের প্রক্রিয়া তাঁর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত কঠিন ছিল।ওহি গ্রহণের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব নবীজি (সা.) যখন ওহি গ্রহণ করতেন, তখন তা তাঁর উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করত। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ওহি গ্রহণের সময় তাঁর শরীরে ভারী বোঝা অনুভূত হত, যা তাঁকে ক্লান্ত ও দুর্বল করে দিত (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২)।এই প্রক্রিয়া শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও ছিল কঠিন। একই সঙ্গে, তিনি মক্কার বিরোধীদের থেকে প্রবল প্রত্যাখ্যান ও বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এই চাপের কারণে তিনি কয়েকদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এমনকি রাতের তাহাজ্জুদ নামাজের জন্যও উঠতে পারেননি।ওহির সাময়িক...
    মহানবী (সা.)-এর জীবনশৈলী শুধু ধর্মীয় বিচারে নয়, বরং আধুনিক সময়ে বিজ্ঞানময় জীবন যাপনের দিন থেকেও একটি অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো স্বাস্থ্য, মানসিক শান্তি এবং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য অত্যন্ত উপকারী ছিল।আধুনিক গবেষণা তাঁর অনেক অভ্যাসের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রমাণ করেছে, যা আমাদের জন্য তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। আজ আমরা নবী (সা.)-এর নয়টি অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করব।১. ভোরে ওঠা নবীজি (সা.) প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতেন। সকাল সকাল জেগে ওঠা উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভোরে ওঠেন, তারা দিনের কাজে বেশি মনোযোগী হন এবং তাদের মানসিক চাপ কম থাকে (ম্যাক্সওয়েল, জে., দ্য পাওয়ার অফ অ্যারলি মর্নিং, হার্পারকলিন্স, নিউ ইয়র্ক: ২০১৮, পৃ. ৪৫-৪৭)।পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানি...
    ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত হয় নবীজির (সা.) তাবুক অভিযান। এই তাবুক অভিযানের সময় একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ছিল তরুণ সাহাবি আবদুল্লাহ জুলবিজাদাইনকে নিয়ে। তার ঘটনাটি বলতে হলে জানতে হবে তার আগেকার জীবনও।ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম। সেই ছোট্ট গ্রামটিতে বাস করত এক মধ্যবিত্ত পরিবার। স্বামী-স্ত্রী ও আদরের এক ছেলে। তাঁরা ছেলেটির নাম রেখেছিলেন আবদুল উজ্জা।আচমকাই একদিন মারা গেলেন আবদুল উজ্জার পিতা। বাড়ির একমাত্র কর্মক্ষম মানুষটি মারা গেলে স্বাভাবিকভাবেই উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারটিরও তা–ই হলো। অবশেষে অভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গ্রামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য হলেন আবদুল উজ্জার মা।চাচার সংসারে থাকেন বালক আবদুল উজ্জা। সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এভাবেই দিন কাটতে লাগল বালক আবদুল উজ্জার।নতুন স্বামী ভালো মানুষ ছিলেন না। তিনি তাঁর নতুন স্ত্রীর আগের ছেলে...
    ইসলামের ইতিহাসে ‘মসজিদে যিরার’–এর ঘটনা একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও শিক্ষণীয় অধ্যায়। মসজিদটি মদিনায় নির্মাণ করেছিল মোনাফেকরা (কপট বিশ্বাসীদের) মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্য ভাঙতে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানোর উদ্দেশ্যে। মুহাম্মদ (সা.) তাই মসজিদ ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন।ঘটনার পটভূমি মদিনায় মুসলমানরা যখন ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত, তখন আবু আমির নামের খ্রিষ্টান সন্ন্যাসী ও তার মোনাফিক সহযোগীরা মসজিদে যিরার নির্মাণ করে। মসজিদটির অবস্থান ছিল তাকওয়ার ভিত্তিতে নির্মিত ইসলামের প্রথম মসজিদ ‘মসজিদে কোবা’র কাছাকাছি।আবু আমির ছিলেন জাহেলি যুগে খাজরাজ গোত্রের একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি চেয়েছিলেন মসজিদটিকে মোনাফিকদের জন্য একটি গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে, যেখান থেকে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা সহজ হবে।আবু আমির চেয়েছিলেন এই মসজিদকে মোনাফিকদের জন্য একটি গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে, যেখান থেকে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা সহজ হবে।তারা নবীজি...
    দুনিয়া, এ এক বিচিত্র মোহের মায়াজাল। এখানে প্রতিনিয়ত মানুষ লিপ্ত থাকে খ্যাতি, সম্পদ আর ভোগবিলাসের পেছনে ছুটে চলার প্রতিযোগিতায়। আজকের উম্মাহর অধিকাংশ মানুষই দুনিয়ার মোহে বিভোর। কেউ ক্ষমতার চূড়ায় উঠতে চায়, কেউ সম্পদের পাহাড় গড়ার স্বপ্নে বিভোর, আবার কেউ খ্যাতির দুনিয়ায় নিজেকে উঁচুতে তুলে ধরতে চায়।রঙিন এই দুনিয়ায় যখন মানুষের অন্তর দুনিয়ার মোহে নিমজ্জিত, তখন যদি কোনো চিন্তাশীল হৃদয় নিজেকে প্রশ্ন করে, ‘এই দুনিয়ার সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক?’আমরা দেখি, প্রায় দেড় হাজার বছর আগে আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এ প্রশ্নের কী অপূর্ব উত্তর দিয়েছেন। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) একবার খেজুরপাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। মাদুরের দাগ তাঁর পবিত্র শরীরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। আমি বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল, যদি আপনি অনুমতি দেন, তবে আমরা আপনার জন্য আরামদায়ক বিছানা তৈরি করে দিতাম, যাতে...
    ইবনে হাইম মাকদিসি ছিলেন বিখ্যাত ইসলামবেত্তা ইবনে হাজার আসকালানির (রহ.) শিক্ষক। ফিলিস্তিনের ইতিহাসে অসংখ্য পণ্ডিত ইসলামি জ্ঞান ও সংস্কৃতির অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, ইবনে হাইম তাঁদের অন্যতম।ইবনে হাজার (রহ.) তাঁর সম্পর্কে বলেন, তিনি গণিত ও ‘ফারায়েজ’ শাস্ত্রে সমসাময়িকদের তুলনায় ছিলেন শ্রেষ্ঠ, আর এ জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তাঁর কাছে জ্ঞান অর্জনের জন্য আসত। (ইবনে হাজার, ইনাবা, ১৯৯৪, ২/৫২৫)ইবনে হাইম একাধারে ফিকহ, গণিত, ব্যাকরণ, কবিতা ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকার হিসাব) বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। ফারায়েজ শাস্ত্রে বিশেষ দক্ষতার কারণে তিনি ইবনে হাইম আল-ফারায়েজি নামেও পরিচিত ছিলেন।তিনি গণিত এবং উত্তরাধিকার হিসাবে সমসাময়িকদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ ছিলেন, যাঁর জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তাঁর কাছে জ্ঞান অর্জনের জন্য আসতেন।ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.), ইনাবা, ১৯৯৪, ২/৫২৫তাঁকে জেরুজালেমের পণ্ডিত বলা হলেও তাঁর জন্ম হয় কায়রোতে আল-কারাফা আল-সুগরা এলাকায়...
    ধৈর্য বা সবর ইসলামে একটি মহৎ গুণ, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা আল্লাহর পথে ডাকার কাজে নিয়োজিত, তাদের জন্য অপরিহার্য। ইসলামের কথা বলতে গিয়ে একজন দায়ী (আহ্বানকারী) বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তার মধ্যে ব্যক্তিগত দুর্বলতা যেমন থাকে, একইভাবে বিভিন্ন ধাপে থাকে বিরোধিতাও। এইসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে ধৈর্য অত্যন্ত জরুরি।ধৈর্য গড়ে তুলতে বেশ কয়েকটি শিক্ষা কোরআন আমাদের দিয়েছে, তার মধ্যে ৬টি শিক্ষার কথা আজ বলব।১. আল্লাহর সাহায্য চাওয়া ধৈর্য হল হৃদয়ের সেই শক্তি, যা আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর প্রতি সমর্পণের মাধ্যমে জাগ্রত হয়।ইমাম গাজ্জালি বলেন, ইহইয়াউ উলুমিদ্দিনকোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘ধৈর্য ধরো, আর তোমার ধৈর্য আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২৭)বোঝা যায় যে, ধৈর্য একটি আধ্যাত্মিক গুণ, যা কেবল আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। ধৈর্য...
    তাওহিদ হলো ইসলামের মূল ভিত্তি, যা মুমিনের ইমানের কেন্দ্রবিন্দু। শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘একত্ব’ বা ‘এক করা’।ইসলামের পরিভাষায়, তাওহিদ হলো আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা এবং তাঁকে সব ইবাদতের একমাত্র হকদার হিসেবে মানা। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘বলো, তিনি আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়।’ (সুরা ইখলাস, আয়াত: ১)বলো, তিনি আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়।সুরা ইখলাস, আয়াত: ১তাওহিদের অর্থ ও প্রকার তাওহিদ শব্দটি আরবি শব্দ ‘ওয়াহিদ’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘এক’। ইসলামি আকিদায় তাওহিদ হলো আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা—তিনি একমাত্র স্রষ্টা, পালনকর্তা ও ইবাদতের যোগ্য।ইমাম ইবনে কাসির বলেন, ‘তাওহিদ হলো আল্লাহর অস্তিত্ব, গুণাবলি ও ইবাদতের একত্বে বিশ্বাস করা।’ (ইবনে কাসির, ৪/৫৬২)আরও পড়ুনকেন শিরক সবচেয়ে বড় পাপ১৮ জুন ২০২৫তাওহিদকে সাধারণত তিনটি প্রকারে ভাগ করা হয়:তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ: আল্লাহর স্রষ্টা, পালনকর্তা ও বিশ্বের নিয়ন্ত্রক হিসেবে একত্বে বিশ্বাস। কোরআনে বলা...
    জীবন একটি পরীক্ষার মঞ্চ, যেখানে বিপদ আমাদের ধৈর্য, ইমান ও আল্লাহর ওপর ভরসার পরীক্ষা নেয়। রোগ, দারিদ্র্য, সামাজিক অশান্তি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ—এসব বিপদ ইসলামে শুধু কষ্ট নয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগও বটে। কোরআন ও হাদিসে বিপদ মোকাবিলার জন্য ধৈর্য, দোয়া ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।কোরআনে বিপদ নিয়ে উক্তিকোরআন বিপদকে আল্লাহর পরীক্ষা হিসেবে বর্ণনা করে। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, ধনসম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে। তবে ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)বিপদ মুমিনের জন্য আল্লাহর পরীক্ষা এবং তার গুনাহ মাফের মাধ্যম।ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) , তাফসির ইবনে কাসির, ১/৪৫৬আরও পড়ুনবিপদ থেকে রক্ষা পেতে দোয়া০৭ অক্টোবর ২০২৪আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোনো বিপদই আপতিত হয় না। যে আল্লাহর প্রতি ইমান...
    ফরজে কিফায়া এমন দায়িত্ব, যা সম্প্রদায়ের কেউ পালন করলে সবাই মুক্ত হয়, কিন্তু কেউ না করলে সবাই দায়বদ্ধ।ইমাম তাজউদ্দিন সুবকি এটিকে এমন একটি অপরিহার্য কাজ বলেছেন, যা আইনপ্রণেতা নির্দিষ্ট কাউকে নির্ধারণ না করে সম্প্রদায়ের জন্য বাধ্যতামূলক করেছেন। (আল-আশবাহ ওয়ান-নাযায়ির, বৈরুত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৯৯১, ২/৮৯)কোরআন বলে, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজে বাধা দেবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৪)ইমাম ইবনে দাকিক আল-ঈদ বলেন, এটি কল্যাণ অর্জন বা ক্ষতি প্রতিরোধের জন্য, নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে নয়। (শরহুল ইলমাম বিআহাদিসিল আহকাম, দামেস্ক: দারুন নাওয়াদির, ২০০৯, ২/৪৫-৪৬)মজলুমের সাহায্য একটি সর্বজনীন ফরজে কিফায়া।ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.), ফাতহুল বারী ফি শরহি সহিহিল বুখারিআরও পড়ুনইসলামের ফরজ বিধান জাকাত০৩ মে ২০২১ফরজে কিফায়ার উদাহরণআনুষ্ঠানিক...
    নতুন একটি বছর, হিজরি ১৪৪৭ সনে ইসলামি ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস মহররমে উপনীত হয়েছি আমরা। এই মাস আমাদের জন্য কেবল বছরের শুরু নয়; বরং আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণ ও জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের একটি সুযোগ।গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মতো মাসগুলোয় ধর্মীয় তাৎপর্য না থাকলেও মহররম, রজব, রমজান বা জিলহজের মতো হিজরি মাসগুলো আমাদের ইমানের নানা অনুষঙ্গ স্মরণ করিয়ে দেয়।সময় ১২ মাসে বিভক্ত, যার মধ্যে চারটি পবিত্র।সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,১৯৭কেন হিজরি ক্যালেন্ডারে পরিকল্পনা বলা যায়, হিজরি ক্যালেন্ডার আমাদের জীবনকে আল্লাহর নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘সময় ১২ মাসে বিভক্ত, যার মধ্যে চারটি পবিত্র।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,১৯৭)মহররম এই পবিত্র মাসগুলোর একটি, যেখানে নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। হিজরি ক্যালেন্ডার এভাবে আমাদের ইবাদতের মধ্য দিয়ে বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলিমের...
    কারবালার ঘটনা মুসলিম ইতিহাসের একটি হৃদয়বিদারক অধ্যায়। ৬১ হিজরির মহররম মাসের আশুরার দিনে সংঘটিত এ ঘটনায় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হোসাইন (রা.)–সহ আহলে বাইতের ২৩ জন সদস্য শাহাদাত বরণ করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮/৩৫৩)এ নিবন্ধে কারবালার প্রেক্ষাপট, ঘটনাপ্রবাহ এবং পরবর্তী ঘটনাবলি ইতিহাসের আলোকে সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে।তিনি বাইয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগের নির্দেশ দেন, যা ইতিহাসবিদদের মতে তার প্রথম রাজনৈতিক ভুল ছিল।ঘটনার প্রেক্ষাপট ৫৬ হিজরিতে আমির মুয়াবিয়া (রা.) তাঁর পুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনীত করেন এবং তার পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ শুরু করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮/১৬১)তবে হোসাইন ইবনে আলি (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.), আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা.) এবং আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বাইয়াত দিতে অস্বীকার করেন, অন্যদের বাইয়াতে বাধাও...
    আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দিনটি শোকের। ৬১ হিজরির এই দিনে ফোরাত নদী-তীরবর্তী কারবালার ময়দানে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.)। তিনি হজরত আলী (রা.) ও হজরত ফাতেমার (রা.) পুত্র। হজরত আলীর মৃত্যুর পর খলিফা হন হজরত মুয়াবিয়া (রা.)। জীবদ্দশাতেই তিনি পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার মনোনীত করেন। তবে ইয়াজিদের কাছে বায়াত নিতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম হোসেন (রা.)। প্রতিবাদে মদিনা ছেড়ে কুফায় হিজরতের জন্য যাত্রা করেন তিনি। পরে কারবালা ময়দানে সঙ্গীদের নিয়ে যাত্রাবিরতি করেন। ইমাম হোসেন (রা.) ও তাঁর অনুসারীদের আটক করে মদিনায় ফিরিয়ে নিতে ইয়াজিদের নির্দেশে উমর ইবনে সাদ বিন আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় প্রবেশ করে। আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ইমাম হোসেনের শিবিরে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। পানির অভাবে কাফেলার...
    মহররমের ঘটনা বলতেই অনেকে কারবালাকে প্রধান মনে করেন। কিন্তু কারবালারও আগে ইসলামে মহররমের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। বিশেষত রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়কালের আগে কয়েকজন নবীর জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা মহররম মাসে সংঘটিত হয়েছিল।আদম (আ.)-এর তওবা কবুল অনেক মুফাসসির বর্ণনা করেন, বেহেশত থেকে পৃথিবীতে পদার্পণের পর হজরত আদম (আ.) নিজ ভুলের অনুশোচনায় দীর্ঘদিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। একটা সময় পর অবশেষে মহররমের ১০ তারিখে হজরত আদম (আ.)-এর দোয়া কবুল হয় এবং আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দেন। (ইমাম গাজালি, ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন, ১/২০২; তাফসিরে কুরতুবি, সুরা বাকারা ৩৭ আয়াতের ব্যাখ্যা)আরও পড়ুনহজরত আদম (আ.) বিশ্বের প্রথম নবী০৭ জানুয়ারি ২০২৫নুহ নবী (আ.)–এর কিশতির ডাঙার সন্ধান বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, মহররমের ১০ তারিখে (আশুরা দিবসে) হজরত নুহ (আ.)-এর কিশতি দীর্ঘদিন প্লাবনের পানিতে...
    প্রতিদিন নামাজে বা নামাজের বাইরে আমরা দরুদ পাঠ করি। দরুদের মাধ্যমে রাসুল (সা.) ও তাঁর পরিবারবর্গের জন্য আল্লাহর কাছে রহমতের দোয়া করা হয়। ইসলামে রাসুল (সা.)–এর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। একজন মুসলিমের জন্য আহলে বাইত সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা এবং তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন অবশ্য কর্তব্য।দোয়া-দরুদ ও হাদিসে নবীর পরিবারকে আহলুল বাইত বা আ-লে বাইত বলে অভিহিত করা হয়েছে। আহল শব্দটিরই একটি প্রতিশব্দ হলো আ-ল। আরবিতে এই শব্দের মূল অর্থ হলো পরিবার।রাসুল (সা.)–এর আহলে বাইত বা পরিবারবর্গের জন্য সম্মানের কারণে সাদকা গ্রহণ করা হারাম। তবে তাঁদের জন্য মহান আল্লাহ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের এক–পঞ্চমাংশ নির্ধারণ করেছেন।কারা আহলে বাইত বেশির ভাগ ইমামের মতে, রাসুল (সা.)–এর পরিবারবর্গের মধ্যে যাঁদের জন্য সদকা গ্রহণ করা হারাম, তাঁরাই আহলে বাইত। কারও মতে, তাঁরা হলেন বনু...
    ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’, একটি ছোট্ট দোয়া, কিন্তু অফুরানের কল্যাণবাহী। এর অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে আফিয়া (কল্যাণ) প্রার্থনা করি।’আফিয়া শব্দটি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পাপ থেকে মুক্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের সকল কল্যাণকে ধারণ করে। নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমাদের আধ্যাত্মিক আশ্রয়।দোয়ার উৎস দোয়াটি হাদিসে বর্ণিত একটি প্রামাণ্য দোয়া। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে “আফিয়া” প্রার্থনা করো, কারণ আফিয়ার চেয়ে উত্তম কিছু কাউকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস ৩৫১৪)আরেকটি হাদিসে, তিনি তাঁর চাচা হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়া চাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২,৬৩৫)‘আফিয়া’ অর্থ কী‘আফিয়া’ একটি বিস্তৃত শব্দ। মাওলানা আশরাফ আলী থানভি তাঁর ‘মুনাজাতে মকবুল’-এ ব্যাখ্যা করেন, ‘আফিয়া’ দুনিয়ার ফিতনা, রোগব্যাধি, পাপাচার এবং আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা...
    মহররমকে কেন্দ্র করে সমাজে রয়েছে অসংখ্য ভুল ধারণা ও কুসংস্কার, যার ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ। অধিক প্রচলিত কয়েকটি কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করা হলো।১. অলীক বর্ণনামহররমের গুরুত্ব বোঝাতে অনেকে নানা কথা বলেন। যেমন এ মাসে ইউসুফ (আ.) জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন, ইয়াকুব (আ.) চোখের জ্যোতি ফিরে পেয়েছেন, ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছেন, ইদরিস (আ.)-কে আসমানে তুলে নেওয়া হয়। অনেকে বলেন, এ দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। এসব কথার দৃঢ় কোনো ভিত্তি নেই। (আল-আসারুল মারফুআ, আবদুল হাই লাখনবি: ৬৪-১০০; মা সাবাতা বিস-সুন্নাহ ফি আয়্যামিস সানাহ, আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলবি: ২৫৩-২৫৭)।আরও পড়ুনমরিয়ম (আ.)-এর অলৌকিক ঘটনা০৯ মে ২০২৫২. খাবারে নিষেধাজ্ঞামহররম এলে অনেকে মাছ, শাক ও মিষ্টি–জাতীয় খাবার খান না। এটা সঠিক নয়। ইসলাম অন্যান্য মাসের মতো এ মাসেও কোনো হালাল খাদ্য হারাম করেনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বছরের সব সময়...
    মহররম কেবল একটি মাস নয়, বরং ইসলামের ইতিহাসের একটি জীবন্ত অধ্যায়, যেখানে বিষাদ, সংগ্রাম ও আধ্যাত্মিকতার মিশ্রণ রয়েছে। কেবল ১০ মহররম নয়, এই মাসজুড়ে ঘটেছে ইতিহাসের অবিস্মরণীয় ও ব্যথাতুর নানা ঘটনা। আমরা কয়েকটি উল্লেখ করছি।মহররমের উল্লেখযোগ্য তারিখ ও ঘটনা২ মহররম: কারবালায় হোসাইন (রা.)-এর প্রবেশ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে হোসাইন ইবন আলী (রা.) কারবালায় প্রবেশ করেন এবং তাঁর শিবির স্থাপন করেন। ইয়াজিদের সেনাবাহিনী তাঁদের ঘিরে ফেলে।কুফার দিকে যাওয়ার পথে উমাইয়া সৈন্যরা তাঁদের থামান এবং কারবালার মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করতে বাধ্য করেন, যেখানে পানি বা কোনো সুরক্ষা দেয়াল ছিল না। এই ঘটনা কারবালার ট্র্যাজেডির সূচনা করে (আল-তাবারি, তারিখ আল-তাবারি, ৫/৩৯১, দারুল কুতুব, ১৯৬৭)।৭ মহররম: পানি নিষিদ্ধকরণ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে ইয়াজিদের নির্দেশে হোসাইন (রা.)-এর শিবিরের জন্য পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।...
    নতুন কাপড় পরার মুহূর্ত আমাদের মনে আনন্দ বয়ে আনে। ইসলাম এই আনন্দকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে একটি সুন্দর নিয়ম ও একটি দোয়ার মাধ্যমে। এই নিয়ম ও দোয়া আল্লাহর প্রতি যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তেমনি আমাদের জীবনেও আনে বরকত।ইবনে কাসির (রহ.) তাঁর তাফসিরে বলেন, পোশাক আল্লাহর নিয়ামত, যা আমাদের সম্মান ও সৌন্দর্য রক্ষা করে। (তাফসিরে ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা ২৮৬৫, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০১)নতুন কাপড় পরার সুন্নাহ নিয়মইসলামে নতুন কাপড় পরার সুন্দর নিয়মটি আমরা নবীজি (সা.)-এর জীবন থেকেই শিখি।১. শালীন পোশাক: এটি পোশাক পরা সম্পর্কীয় না হলেও পোশাক বাছাই করার ক্ষেত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাপড়টি অবশ্যই শরিয়তের সীমার মধ্যে হতে হবে। পুরুষদের জন্য সিল্ক বা সোনার অলংকার পরা নিষিদ্ধ। এ ছাড়া নারী–পুরুষ উভয়ের নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘সতর’ ঢেকে রাখা জরুির।২. পরিষ্কার করে নেওয়া: পরার...
    হিজরি সনের শুরু আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মদিনায় হিজরতের অসাধারণ ঘটনা, যা ইসলামের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত কেবল একটি ভৌগোলিক স্থানান্তর নয়, বরং ইসলামি সভ্যতার ভিত্তি স্থাপনের এক মহাকাব্যিক অধ্যায়।এই ঘটনা আরব উপদ্বীপের সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোকে পুনর্গঠন করেছে এবং বিশ্ব সভ্যতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। হিজরতের মাধ্যমে ইসলাম দুর্বলতা থেকে শক্তির দিকে, ব্যক্তিগত দাওয়াত থেকে রাষ্ট্রীয় দাওয়াতের দিকে এবং একটি ছোট সম্প্রদায় থেকে একটি সুসংগঠিত উম্মাহর দিকে অগ্রসর হয়।এভাবে অন্তত নতুন করে ছয়টি মাইলফলক অর্জন করেছেন মুসলিমগণ।বী মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত কেবল একটি ভৌগোলিক স্থানান্তর নয়, বরং ইসলামি সভ্যতার ভিত্তি স্থাপনের এক মহাকাব্যিক অধ্যায়।আরও পড়ুনমক্কা-মদিনা এখন বিশ্বমানবের শহর৩১ জুলাই ২০১৮১. দুর্বলতা থেকে শক্তির পথেমক্কায় মুসলিমরা কুরাইশদের নির্যাতন, অপমান, এমনকি প্রাণনাশের...
    ক্রিকেট মাঠে ক্রিকেটাররাই সব সময় আলোচনায় থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। যাঁরা খেলাটা পরিচালনা করেন, যেমন আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি বা অন্য কোনো অফিশিয়াল...তাঁদের নিয়ে আলোচনা হয় তুলনামূলক কমই। তবে আম্পায়ার হয়েও গত ছয় মাসে বৈশ্বিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে সবচেয়ে আলোচিত নামটা বোধ হয় শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ, যিনি সৈকত নামেই বেশি পরিচিত।প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ
    সুরা ইয়াসিন কোরআন মাজিদের ৩৬তম সুরা, যাকে ‘কোরআনের হৃদয়’ বলা হয়। এর ফজিলত ও তাৎপর্য ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন পড়ে, তার জন্য এমন সওয়াব রয়েছে, যেন সে দশবার কোরআন পড়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৮৭)আরও পড়ুনইয়া জালালি ওয়াল ইকরামের ফজিলত১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪সুরা ইয়াসিনের ফজিলতসুরা ইয়াসিনের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বহু বর্ণনা রয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘সুরা ইয়াসিন কোরআনের হৃদয়। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে এটি পড়ে, আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করেন।’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস: ১৯,৭৪৩)।ইমাম ইবনে কাসির তাঁর তাফসির ইবনে কাসির-এ বলেন, সুরা ইয়াসিন তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের বিষয়ে গভীর বার্তা বহন করে, যা মুমিনের ইমানকে দৃঢ় করে।(তাফসির ইবনে কাসির, ৬/৫৬২, দারুস সালাম, ২০০০)যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন পড়ে, তার জন্য এমন সওয়াব রয়েছে, যেন সে দশবার...
    ইসমে আজম বা আল্লাহর মহান নাম হলো এমন একটি নাম বা নামের সংমিশ্রণ, যার মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। এটি আল্লাহর গুণাবলি ও মহিমার প্রকাশ এবং মুমিনের জন্য দোয়া কবুলের একটি বিশেষ মাধ্যম।নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে, যে ব্যক্তি সেগুলো মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭,৩৯২)।ইসমে আজম এই নামগুলোর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।যে ব্যক্তি ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১,৪৯৫আরও পড়ুনআল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম ‘আল্লাহ’০২ জুন ২০২৫ইসমে আজম কীইসমে আজম (আরবি: আল–ইসমুল আ’জাম) অর্থ আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম। হাদিসে উল্লেখ আছে, এই নাম দিয়ে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।’...
    কুরাইশের নেতৃস্থানীদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মুসলিমদের প্রথমবার মক্কা ছাড়ার অনুমতি দেন নবীজি (সা.) নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে।৬১৩ খ্রিষ্টাব্দে আরবি রজব মাসে চারজন নারীসহ বারো থেকে পনেরোজন মানুষ আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মক্কার সবাই মুসলিম হয়ে গেছে, এই খবর শুনে কয়েক মাস পরে আবার তাঁরা ফিরে আসেন জন্মভূমিতে। কাছাকাছি পৌঁছে শুনতে পান খবরটি মিথ্যা। কয়েকজন যে-পথে এসেছেন সে-পথেই ফিরে যাবেন বলে থমকে যান, কয়েকজন ফিরে যান মক্কাতেই। যাঁরা আবার আবিসিনিয়ায় ফিরবেন বলে ভাবেন, তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.)–র চাচাতো ভাই জাফর ইবনে আবু তালিব (রা.)।প্রশ্ন হলো, নবীজি (সা.) মদিনায় হিজরত করলেন? আবিসিনিয়ায় বা অন্য কোথাও নয়। এর বেশ কয়েকটি কারণ প্রখ্যাত সিরাত গবেষক আবুল আলি নদভি (র.) তাঁর নবিয়ে রহমত গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন।নবীজি...
    কুরাইশ কাফেরদের অত্যাচার তীব্রতর হলো। মক্কার পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠল। নবীজি (সা.) অনুমতি দিলেন দেশত্যাগ করার। আকাবার দ্বিতীয় অঙ্গীকারের ছায়ায় তত দিনে মদিনায় একটি ছোট মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।হিজরত সহজ ছিল না। সারা জীবনের অর্জিত সহায়-সম্পদ ছেড়ে অচেনা শহরে যাত্রা। পথে আছে লুণ্ঠিত বা খুন হওয়ার আশঙ্কা। মুশরিকদের বাধাও আছে প্রাচীরের মতো। তাঁরা জানেন যে কোথাও মুসলিমদের একটি ঘাঁটি হলে তাঁদের দীর্ঘদিনের আঘাত বুমেরাং হতে পারে।হিজরতের আগের রাত নির্দেশ পেয়ে মক্কার মুসলমানরা মদিনার উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলেন। দুই মাসের মধ্যে নগরীর এক–চতুর্থাংশ জনশূন্য হয়ে পড়ে। আগে যাঁরা আবিসিনিয়ায় গিয়েছিলেন, তাঁরাও ধীরে ধীরে মদিনায় ফিরছেন। আরও পড়ুনহজরত উমর (রা.) ছিলেন সুশিক্ষিত সাহাবি০৩ মে ২০২৩বাকি থাকলেন নবীজি (সা.), নিকটতম সহচর আবু বকর (রা.) আর চাচা আবু তালিবের ছেলে আলী (রা.)...
    আব্বাসীয় খিলাফত (৭৫০–১২৫৮ সাল) ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির এক অসাধারণ যুগ। এর কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাগদাদ। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইসলামি বিজ্ঞানের প্রসার এবং জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, দর্শন, ভাষাবিজ্ঞান ও ইতিহাসের মতো বিভিন্ন শাখার সমন্বয়ের ফলে সুশৃঙ্খল শিক্ষার চাহিদা বেড়ে যায়।মুসতানসিরিয়ার আগে বাগদাদে প্রায় ৩০টি মাদ্রাসা ছিল। তার মধ্যে নিজামিয়া মাদ্রাসা (১০৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত) ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। (দাউদ, নাবিলা আবদুল মুনিম, আল-ইদারাতুত তারবাবিয়্যা ফিল মাদারিস ফিল আসরিল আব্বাসি, পৃ. ১৪, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৮)তবে মুসতানসিরিয়া তার বিশালতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বহুমুখী শিক্ষাব্যবস্থার কারণে পূর্বসূরিদের ছাড়িয়ে যায়।রাজনৈতিকভাবেও মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠা ছিল তখনকার খলিফার ক্ষমতা ও প্রভাবকে শক্তিশালী করার এক প্রচেষ্টার অংশ। খলিফা আল-মুসতানসির বিল্লাহ জ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ পোষণ করতেন এবং প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন ও তদারকিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। (ইবন আল-জাওযি, শামসুদ্দিন ইউসুফ, মিরআতুজ জামান, ৮/৭২৯,...
    মাত্র পনেরো বছর বয়সে তিনি পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য মক্কার অদূরে ছাগল চরানোর কাজ শুরু করেন।একদিন ছাগল চরানোর সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) তার কাছে আসেন। তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তাঁরা ছাগলের দুধ চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছাগলের মালিক নই, কেবল হেফাজতের দায়িত্ব পেয়েছি।’নবীজী (সা.) তখন একটি নর-ছাগল আনতে বলেন। তিনি তার স্তনে হাত রাখতেই তা দুধে পূর্ণ হয়ে যায়। নবীজী নিজে এবং আবু বকর (রা.) পান করেন, এমনকি তাকেও সেই দুধ পান করতে দেন। পুনরায় হাত রাখলে ছাগলটি আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এই অলৌকিক ঘটনায় মুগ্ধ হয়ে তিনি নবীজীর হাত ধরে বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল, ইসলামের ছায়াতলে আমাকে আশ্রয় দিন।’ নবীজী (সা.) তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, ‘বালক, তোমাকে মোবারকবাদ।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৩,৬৬৭)আমরা ছয়জন ছাড়া তখন পৃথিবীতে আর কোনো মুসলিম ছিল না।আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ...
    আবু হুরায়রা (রা.)–এর মূল নাম আবদুর রহমান ইবনে সাখর আদ-দাউসি। কিন্তু তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করেন আবু হুরায়রা নামে। তিনি নবীজি (সা.)-এর একজন মহান সাহাবি। হাদিসের জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।তাঁর সূত্রে ৫ হাজার ৩৭৪টি হাদিস বর্ণিত। ইসলাম গ্রহণের পর চার বছর মসজিদে নববিসংলগ্ন সুফফায় অতিবাহিত করেছেন। এ দীর্ঘ সময় তিনি নবীজি (সা.) থেকে হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেছেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, ইমাম জাহাবি, ২/৫৭৮)নাম পরিবর্তনআবু হুরায়রা (রা.) সপ্তম হিজরিতে তুফায়েল ইবনে আমের (রা.)-এর হাতে ইয়ামান শহরে ইসলাম গ্রহণ করেন। তখনও তাঁর নাম ছিল আবদু শামস বা সূর্যের দাস। এটি ছিল জাহিলি যুগের তাঁর পারিবারিক নাম। ইসলাম গ্রহণ করার পর যখন তিনি নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার নাম কী?’তিনি জবাব দিলেন, আবদু শামস।নবীজি (সা.) বললেন, ‘না,...
    সমালোচনা মোকাবিলা কারও জন্যই সহজ নয়। অন্যায় বা অশোভন সমালোচনা মানুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে, এমনকি ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেও ফাটল ধরাতে পারে। তবে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এই ক্ষেত্রে এক অপ্রতিম দৃষ্টান্ত। তিনি শুধু সমালোচনাকে ধৈর্য ও বিনয়ের সঙ্গে গ্রহণ করতেন না; বরং তা থেকে ইতিবাচক ফলাফল অর্জনের পথও দেখিয়েছেন। তাঁর জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি কীভাবে সমালোচনার মুখে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে দয়া ও ন্যায়বিচার দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হয় এবং কীভাবে মানুষের হৃদয় জয় করতে হয়। এই নিবন্ধে তাঁর জীবনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার মাধ্যমে সমালোচনা মোকাবিলার শিক্ষা তুলে ধরা হলো। নবীজির (সা.) দৃষ্টিভঙ্গিমহানবী (সা.) তাঁর নবুয়তের সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। এই সমালোচনা এসেছিল অবিশ্বাসীদের (মুশরিক, মুনাফিকসহ) থেকে এবং কিছুসংখ্যক মুসলিমের পক্ষ থেকেও। অবিশ্বাসীদের সমালোচনা প্রায়ই ছিল ভিত্তিহীন, ব্যক্তিগত...
    নবীজি (সা.) র আনুগত্য প্রদর্শনে সাহাবিগণ অনন্য সব দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। প্রথমত তাঁর আনুগত্য মানে আল্লাহর আদেশ পালন। দ্বিতীয়ত তাদের অন্তরে নবীজির প্রতি যে ভালোবাসা ছিল, সেই ভালোবাসার আহ্বানে তারা সাড়া দিয়েছেন। মানুষ তার সহজে মানে, যাকে সে ভালোবাসে। আমরা মাত্র তিনটি উদাহরণ উপস্থাপন করছি।১. জুমার দিন মসজিদের মিম্বরে উঠে নবীজি (সা.) বললেন, ‘বসো তোমরা।’ আবদুলাহ ইবনে মাসউদ (রা.) শোনামাত্র মসজিদের দরজায় বসে গেলেন। তিনি ‘বসো’ শব্দটি শুনে নিজেকে আর এক পা এগোনোর অনুমতি দেননি; যেখানে ছিলেন, সেখানেই বসে গেলেন। নবীজি তাকে দেখলেন যে, তিনি দরজার মুখে বসে গেছেন। বললেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, এগিয়ে এসো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১,০৯১)২. আবু আবদুর রহমান ফাহরি (রা.) বলেন, নবীজির (সা.) সঙ্গে আমি হোনাইনের যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। গ্রীষ্মের দিনে আমরা প্রচণ্ড রোদের মধ্য...
    সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের সহকারী হাসিনুর ইসলাম ওরফে সজলকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (২২ জুন) মধ্যরাতে শাহমখদুম থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।  সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার হাসিনুর ইসলাম সজল রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানার দক্ষিণ নওদাপাড়া মহল্লার সাইনুদ্দীন ওরফে সান্টুর ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।  আরো পড়ুন: ভিক্ষা না ছাড়ায় বাবাকে হত্যা, ছেলে আটক নাটোরে ২ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হাসিনুর ইসলাম সজল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার আগে থেকেই শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে থাকতেন। প্রথমে শুধু তার ব্যক্তিগত ব্যবসা দেখাশোনা করলেও পরবর্তীতে সবকিছুরই...
    তিনি পরিচিত ছিলেন ইমাম মুহিউদ্দিন আবু জাকারিয়া আন-নববি নামে। তবে তাঁর পুরো নাম ইয়াহিয়া ইবনে শারাফ ইবনে মুরি ইবনে হাসান। তাঁর ডাকনাম আবু জাকারিয়া (জাকারিয়ার বাবা), মূল নাম ইয়াহিয়া আর উপাধি মুহিউদ্দিন (দীনকে জীবনদানকারী)। তাঁর জীবন শুধু একজন আলেমের গল্প নয়; বরং একটি আদর্শ।৬৩১ হিজরি সনে সিরিয়ার হাওরান অঞ্চলের নবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণেই তাঁকে নববি বা নবার অধিবাসী বলা হয়।কৈশরেই কোরআনের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়। ইয়াসিন ইবনে ইউসুফ আল-মারাকিশি বর্ণনা করেন, ‘১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন। আমি তাঁর শিক্ষককে বলেছিলাম, এই শিশু একদিন তাঁর যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম হবে।’ (তাজুদ্দিন আস-সুবকি, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরা, ৮/৩৯৬, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৯৯২)এ ঘটনা তাঁর জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়। কৈশোরে...
    গরু চোরাচালানিদের তাড়া করতে গিয়ে পথ ভুলে ভারতে ঢোকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্যকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শনিবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউপির জোহরপুর টেক সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।তথ্যটি নিশ্চিত করে বিজিবির রাজশাহী সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, দুজন মহিষ চোরাচালানকারীকে ধাওয়া করতে গিয়ে শুক্রবার দিবাগত ভোররাতে ভুল করে ভারতে ঢুকে পড়েন বিজিবির এক সদস্য। পরে ভারতের পিরোজপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিএসএফের কাছে গিয়ে ঘটনাটি জানান। সন্ধ্যায় বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে বৈঠকের পর ওই বিজিবি সদস্যকে ফেরত দেয় বিএসএফ। তাঁরা বিজিবি সদস্যকে খাবার পরিবেশনসহ তাঁর সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করেছেন।কর্নেল ইমরান ইবনে আবদুর রউফ জানান, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে জনতার হাতে আটক এক বিএসএফ সদস্যকে ফেরত দিয়েছিল বিজিবি।৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট...
    সাফিয়া (রা.) ছিলেন হুয়াই ইবনে আখতাব ও বারাহ বিনত শামওয়ালের কন্যা, এক সম্ভ্রান্ত ইহুদি বংশের সন্তান। খায়বারের যুদ্ধে তিনি বিধবা ও যুদ্ধবন্দী হন। মহানবী (সা.)-এর বিবাহের প্রস্তাব গ্রহণ করে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নবীজির সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেন। (ফরিদা মাসউদ দেবাস, দ্য ওয়াইভস অব দ্য প্রফেট মুহাম্মদ, ২০০৬, পৃ. ১৩০)তাঁর জীবন ছিল জ্ঞান, দৃঢ়তা, আধ্যাত্মিকতা এবং সমাজসেবার এক অনুপম সমন্বয়।কোরআন পড়ার আগে তাঁর এত তীব্র ছিল যে পড়তে গিয়ে তাঁর চোখ অশ্রুতে ভরে যেত এবং তিনি কাঁদতেন।কোরআনের প্রতি নিবেদনসাফিয়া (রা.) কোরআন পড়তে এবং এর অনেক অধ্যায় মুখস্থ করতে সময় ব্যয় করতেন। কোরআন পড়ার আগে তাঁর এত তীব্র ছিল যে পড়তে গিয়ে তাঁর চোখ অশ্রুতে ভরে যেত এবং তিনি কাঁদতেন। (মাহমুদ আহমদ গজনফার, গ্রেট উইমেন...
    প্রতিদিন সকালে যখন আপনি এক কাপ কফি পান করেন বা দাঁত পরিষ্কার করেন, তখন আপনি হয়তো ভাবেন না যে, এই দুটিই মুসলিম উদ্ভাবকদের অবদান। জ্যোতির্বিদ্যা থেকে চিকিৎসা, স্থাপত্য থেকে সংস্কৃতি—মুসলিম ঐতিহ্য বিশ্ব সভ্যতাকে অসাধারণ উদ্ভাবন উপহার দিয়েছে। মুসলিম পণ্ডিত ও উদ্ভাবকদের হাত ধরে এসেছে এমন ১০টি উদ্ভাবনের গল্প থাকছে আজ।১. বীজগণিত: গণিতের ভিত্তিনবম শতকের মুসলিম পণ্ডিত মুহাম্মাদ ইবন মুসা আল-খাওয়ারিজমিকে বলা হয় ‘বীজগণিতের জনক’। তিনি শুধু বীজগণিত নয়, অ্যালগরিদমের ধারণাও উদ্ভাবন করেন। ৮১৩-৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘আল-জাবর’ (পূর্ণ নাম: আল-কিতাব আল-মুখতাসার ফি হিসাব আল-জাবর ওয়াল-মুকাবালা) রচনা করেন, যেখান থেকে ‘অ্যালজেব্রা’ শব্দটির উৎপত্তি।৮২০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র ‘বাইতুল হিকমাহ’র প্রধান নিযুক্ত হন। তাঁর এই অবদান আধুনিক প্রকৌশল, ইলেকট্রনিকস, স্থাপত্য এবং জ্যোতির্বিদ্যার পথ সুগম করেছে।২. কফি: সকালের সঙ্গীকফি সংস্কৃতির...
    ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দ বা নবম হিজরিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনা থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দূরে তাবুক প্রান্তরে যুদ্ধের উদ্দেশে রওনা হন। তাবুক, মদিনা ও দামেস্কের (সিরিয়া) মধ্যবর্তী একটি স্থান। এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে আরবের কাফের, মুনাফিক ও রোমান সাম্রাজ্যের সম্মিলিত চূড়ান্ত প্রচেষ্টা।তৎকালীন বিশ্বের পরাশক্তি রোমান সাম্রাজ্য মুসলিমদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চেয়েছিল। এক বছর আগে মুতার যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় রোমানদের জন্য অশনিসংকেত হয়ে ওঠে। এর প্রভাবে আরব ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রোমান শোষণ থেকে মুক্তির চেতনা জাগ্রত হয়। সিরিয়ার রোম-আরব সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস মুসলিম শক্তিকে দমন করতে শাম ও আরব সীমান্তে ৪০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করেন। (আর-রাহিকুল মাখতুম, সফিউর রহমান মুবারকপুরি, পৃ. ৬২১)নাবতিদের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (সা.) এই প্রস্তুতির খবর পান এবং হিরাক্লিয়াসের আক্রমণের আগেই আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি...
    ভুল মানবজীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। এটি আমাদের তওবা করতে, শিখতে ও জ্ঞানী হতে সাহায্য করে। মহানবী (সা.) ভুলকে লজ্জার কারণ নয়, বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করতেন। সাহাবিরা কখনো ছোট, কখনো গুরুতর ভুল করতেন। নবীজি এই ভুলগুলো উপযুক্ত আচরণের মধ্য দিয়ে সংশোধন করতেন। মহানবী (সা.) ভুল সংশোধনের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা যাক।১. ভুলের সমাধান করামহানবী (সা.) ভুলকে সমাধান ছাড়া রেখে দিতেন না। তিনি ব্যক্তির সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনা করে কখনো গোপনে, কখনো সুবিধামতো সময়ে ভুল সংশোধন করতেন। কখনো তাঁর আচরণই সাহাবিদের বুঝিয়ে দিত কিছু ভুল হয়েছে। গুরুতর ভুলের ক্ষেত্রে তিনি জোর দিয়ে বারবার কথা বলতেন।তারা তাদের ভাইয়ের মাংস খেয়েছে, যা তাদের দাঁতের মাঝে দেখা যাচ্ছে। তারা নবীজির কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি বলেন, তাদের ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চাইতে।’সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৮৮০উসামা...
    ইসলামে চূড়ান্ত সত্য হলো তাওহিদ, মানে আল্লাহর একত্ব। বিপরীতে, শিরক বা তার অংশীদার সাব্যস্ত করা হলো চূড়ান্ত পাপ। শুধু তা-ই নয়, শিরক ইসলামে সবচেয়ে জঘন্য বিষয়। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘আর তারা বলল, আর–রহমান (দয়াময়) একটি পুত্র গ্রহণ করেছেন। তোমরা এক ভয়ানক বিষয়ের অবতারণা করেছ। এর ফলে আকাশ যেন ফেটে যায়, পৃথিবী বিদীর্ণ হয় এবং পাহাড় ধসে পড়ে।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত: ৮৮-৯০)আল্লাহ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং প্রয়োজন থেকে মুক্ত। তাহলে তিনি কেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের ওপর জোর দেন এবং শিরক অপছন্দ করেন? এ প্রশ্নের উত্তর বোঝার আগে জেনে নেওয়া জরুরি:আসল কথা হলো, শিরক সমগ্র ঐশ্বরিক বাস্তবতাকে লঙ্ঘন করে, তাই এটি এমন একটি গাছ, যার কোনো শিকড় বা ফল নেই।১. আল্লাহ স্বয়ংসম্পূর্ণ: তাঁর আদেশ ও নিষেধ আমাদের প্রয়োজন, তাঁর নয়।২. আল্লাহ ক্ষতি বা উপকার...
    রাজধানীর মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতা এলাকা থেকে আদি ইবনে জামান নামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর দুই দিন ধরে নিখোঁজ। সে ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।আদি ইবনে জামানের পরিবার জানায়, গত সোমবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে সে আর বাসায় ফেরেনি। এ ঘটনায় সোমবার তাঁর বাবা মনিরুজ্জামান কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজের পর বিভিন্ন স্থানে ছেলের খোঁজ করেছেন, কিন্তু সন্ধান মেলেনি।এ ঘটনা তদন্ত করছেন কাফরুল থানার উপপরিদর্শক জহুরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ আদি ইবনে জামান সঙ্গে কোনো ডিভাইস (ইলেকট্রনিক যন্ত্র) নিয়ে যায়নি। ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাসা থেকে কিছু দূর পর্যন্ত ক্যামেরায় তাঁর অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। একপর্যায়ে সেটি আর সম্ভব হয়নি। তাকে খুঁজে বের...
    ইসলাম মানুষকে উত্তম চরিত্রের শিখরে পৌঁছানোর পথ দেখায়। মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে পাঠানো হয়েছে শুধু উত্তম চরিত্র পূর্ণমাত্রায় পৌঁছাতে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৮,৯৫২)উত্তম চরিত্র গড়ে তুলতে ইসলাম কিছু মৌলিক গুণের ওপর জোর দেয়, যার মধ্যে হায়া অন্যতম। হায়া শুধু লজ্জা বা শালীনতা নয়, বরং এটি এমন একটি গুণ, যা মানুষকে অশোভন আচরণ থেকে বিরত রাখে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ধর্মের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আর ইসলামের বৈশিষ্ট্য হলো হায়া।’ (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস: ৪,১৮১)প্রতিটি ধর্মের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আর ইসলামের বৈশিষ্ট্য হলো হায়া।সুনানে ইবন মাজাহ, হাদিস: ৪,১৮১হায়া কীহায়া আরবি শব্দ হায়াত (জীবন) থেকে এসেছে, কারণ প্রাচীন আরবরা বিশ্বাস করত, হায়া ছাড়া মানুষের জীবন অসম্পূর্ণ। এটি লজ্জা, শালীনতা, সংযম ও সচেতনতার সমন্বয়, যা মানুষকে অনৈতিক কাজ থেকে দূরে রাখে।ইবনুল কাইয়্যিম...
    কায়রোর আল-মানসুরি হাসপাতালের প্রাঙ্গণে এক নারী দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, হাতে রোগীর চিকিৎসা নথি। তিনি শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) মেয়ে, এই হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক। তাঁর নির্দেশে চিকিৎসক ও ধাত্রীরা ব্যস্তভাবে রোগীদের সেবা করছেন।উমাইয়া, আব্বাসীয় ও আন্দালুসের যুগে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা শুধু রোগীদের সেবাই করেননি, বরং চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন। এই পর্বে আমরা দেখব মধ্যযুগে মুসলিমবিশ্বে নারীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভূমিকা এবং সমাজে তাঁদের প্রভাব।নারীরা শুধু চিকিৎসা দিতেন না, বরং ওষুধ তৈরি ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতেন।মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগমধ্যযুগে মুসলিম বিশ্ব ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ। আব্বাসীয় খলিফারা গ্রিক, পারসিক ও ভারতীয় চিকিৎসা গ্রন্থ আরবিতে অনুবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। বাগদাদের বায়তুল হিকমা এই জ্ঞানের কেন্দ্র ছিল।এই সময়ে নারীরাও চিকিৎসা গবেষণা ও সেবায় অংশ নেন। ইমাম তাবারি (৮৩৮-৯২৩ খ্রি.) উল্লেখ করেন, বাগদাদের...
    ছয় বছর বয়সে মুহাম্মদ (সা.) তাঁর মা আমিনার মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হন। তাঁর জীবনে এটিই ছিল মৃত্যুর প্রথম অভিজ্ঞতা। তিনি দেখলেন, তাঁর মা অশ্রুসিক্ত চোখে বারাকাহর দিকে তাকিয়ে বলছেন, ‘তুমি এখন তার মা।’ নবীজি বারাকাহর কান্না দেখলেন, তাঁর মায়ের কষ্ট দেখলেন।তিনি বুঝতে পারছিলেন না কী ঘটছে। তাঁর মা শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন চোখ আকাশের দিকে তাকিয়ে। নবীজি ডাকলেন, মা, মা। কিন্তু তিনি আর সাড়া দিলেন না। (সিরাতে ইবনে হিশাম, ১/১৫৮-১৫৯, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ১৯৯৮)আমরা জানি না, দৃশ্যটা আসলে কতটা হৃদয়বিদারক ছিল। নিশ্চয় ছয় বছরের শিশু মুহাম্মদ এ অসহায় অবস্থায় তাঁর মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ গুঁজে কাঁদছিলেন। তিনি মাকে ছাড়তে চাননি। বারাকাহ তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন আর তিনি বললেন, ‘তুমি এখন আমার মা।’ তিনি বারাকাহর কাছে আশ্রয় খুঁজলেন, যিনি...
    ব্যবসা শুধু লাভের খেলা নয়, এটি সততা ও বিশ্বাসের একটি পবিত্র দায়িত্ব। মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জীবনে দেখিয়েছেন কীভাবে সততার সুন্নাহ ব্যবসায়কে শুধু সফলই নয়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ করে দেয়।তিনি বলেছেন, ‘সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১২০৯)। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কীভাবে ব্যবসায় সাফল্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি, তা-ই আজ আলোচ্য। শৈশব থেকে সততার শিক্ষামহানবী (সা.)-এর জীবন ছিল কষ্টে গড়া। জন্মের আগেই পিতৃহীন, ছয় বছর বয়সে মাতৃহীন। দাদার মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিবের কাছে আশ্রয় নেন। কৈশোর পার করতেই তিনি ব্যবসায় নামেন। তাঁর সততা ও বিশ্বস্ততা তাঁকে মক্কার মানুষের কাছে ‘আল-আমিন’ (বিশ্বস্ত) উপাধি এনে দেয়।সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।সুনানে তিরমিজি,...
    খাদ্যনিরাপত্তা কেবল পেট ভরানোর বিষয় নয়, এটি মানুষের মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম। ইসলামি নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের খাদ্যের উপযোগিতা নিশ্চিত করা একটি ঐশী দায়িত্ব, যা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। আজকাল জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্য খাদ্যসংকটকে তীব্র করে তুলেছে, ইসলামি নৈতিকতা এই সমস্যার সমাধানে একটি শক্তিশালী কাঠামো দিতে পারে।ইসলামে খাদ্যনিরাপত্তাইসলামে খাদ্যকে আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে গণ্য করা হয়, যা কেবল ব্যক্তিগত প্রয়োজন নয়, সমাজের সবার জন্য সুলভ হওয়া উচিত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করো এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত করো।’ (সুরা নাহল, আয়াত ১১৪)এই আয়াতে খাদ্যের পবিত্রতা ও কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি এর প্রাপ্যতার বিষয়টি উঠে আসে। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে...
    ঈদুল আজহা মুসলিম সমাজে একটি সর্বজনীন উৎসব, যা ধর্মীয় তাৎপর্যের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রকাশ ঘটায়। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়ে এই উৎসব সাধারণভাবে পালিত হলেও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল—আন্দালুস, মাগরিব, পারস্য, ভারত—নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রথার মাধ্যমে ঈদুল আজহাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ অঞ্চলগুলোয় কোরবানির অনুষ্ঠান, পোশাক, খাবার এবং সামাজিক রীতিনীতি স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে একটি অনন্য রূপ লাভ করেছে।ফেজ ও মারাকেশের মসজিদের আঙিনায় কোরবানির মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হতো। এই প্রক্রিয়ায় ফকিহগণ উপস্থিত থাকতেন এবং তাকবির ধ্বনির মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হতো।আন্দালুসিয়ায় ঈদুল আজহাআন্দালুসিয়া (৯২-৮৯৭ হি./৭১১-১৪৯২ খ্রি.), যা আজকের স্পেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, একসময় মুসলিম বিশ্বের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। ঈদুল আজহা এখানে সৌন্দর্য, পরিচ্ছন্নতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে পালিত হতো।ইবনে আজারি আল-মারাকুশি (মৃ. ৭১২ হি.) তাঁর আল-বায়ান আল-মুগরিব গ্রন্থে...
    মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়ে ঈদের উৎসব ছিল সাধারণ কিন্তু আধ্যাত্মিকভাবে গভীর। তবে পরবর্তী ইসলামি সাম্রাজ্যগুলোতে—উমাইয়া, আব্বাসি, ফাতেমি ও মামলুক যুগে ঈদুল আজহা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, বিশাল মিছিল এবং সমাজব্যাপী কোরবানির মাধ্যমে একটি গৌরবময় উৎসবে রূপান্তরিত হয়। এ প্রবন্ধে আমরা ইসলামি ইতিহাসে ঈদুল আজহার রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উদ্‌যাপন, কোরবানির অনুষ্ঠানের বিবর্তন ও এর সমাজে প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।উমাইয়া যুগ: রাষ্ট্রীয় প্রতীক হিসেবে উত্থানউমাইয়া খিলাফত (৪১-১৩২ হি./৬৬১-৭৫০ খ্রি.) ঈদুল আজহাকে রাষ্ট্রীয় মাত্রা প্রদান করে। ইবনে কাসির (মৃ. ৭৭৪ হি.) তাঁর ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, খলিফা মারওয়ান ইবনে হাকাম (মৃ. ৬৫ হি.) ঈদের নামাজের আগে খুতবা দেওয়ার প্রথা শুরু করেন। এ খুতবায় রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া হতো, যা খিলাফতের বৈধতা ও শক্তি প্রদর্শন করত। উমাইয়া খলিফারা নবীজি (সা.)-এর হারবা (বর্শা) ও বুরদা (চাদর)...
    ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মুসলমানদের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসব। ইসলামে উৎসব ও আনন্দের উপলক্ষ হিসেবেই দুই ঈদের প্রবর্তন ঘটেছে। আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে দেখেন মদিনাবাসী নির্দিষ্ট দুটি দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ করে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, এ দুটি দিন কিসের? সবাই বলল, জাহেলি যুগে আমরা এই দুই দিন খেলাধুলা করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মহান আল্লাহ তোমাদের এ দুই দিনের পরিবর্তে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। তা হলো, ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১১৩৪) দুই ঈদের ভেতর ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে থাকে। কেননা আদম (আ.) থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া...
    আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। তাঁর জীবন ছিল দাওয়াতের এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত। তিনি নিজের জ্ঞান, বাগ্মিতা এবং আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা দিয়ে ইসলামের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।নবীজি (সা.) যখন আরবের গোত্রগুলোর কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিচ্ছিলেন, তখন আবু বকর (রা.) ছায়ার মতো থাকতেন তাঁর সঙ্গী হয়ে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি যাদের দাওয়াত দিয়েছি, সবাই দ্বিধায় পড়েছে, কিন্তু আবু বকর বিনা দ্বিধায় আমাকে গ্রহণ করেছে (সিরাতে ইবনে হিশাম, পৃ. ১৪১)।’নবীজি (সা.)-এর উপস্থিতিতে ও অনুপস্থিতিতে তিনি তাঁর পক্ষে কথা বলতেন, তবে কখনো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আগে এগিয়ে যেতেন না।ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াআরব গোত্র সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানতিনি ছিলেন আরব গোত্রের বংশপরিচয় ও ইতিহাসের অগাধ পণ্ডিত। (ইমাম সুয়ুতি, তারিখুল খুলাফা, ১৯৯৭, পৃ. ১০০)।...
    বিক্রি হয়নি বগুড়ার আলোচিত ১১০০ কেজির ‘লাক্সারি প্রাডো’। মালিক ইবনুল রায়াত কাজী চেয়েছিলেন, খামার থেকে গরুটি বিক্রি করতে। কিন্তু, অনলাইন প্লাটফর্ম বা লাক্সারি প্র্যাডো সম্পর্কে জেনে যারা খামারে এসেছিলেন, তারা কেউই কাঙ্ক্ষিত দাম বলেননি বলে জানিয়েছেন খামারি। ইবনুল রায়াত কাজী বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান লাক্সারি প্রাডোর ওজন ১১০০ কেজি। এত বড় গরু হাটে তোলার মতো ঝামেলায় জড়াতে চাইনি। খামার থেকেই বিক্রি করা পরিকল্পনা ছিল।’’ ‘‘অনলাইনে গরুটি সম্পর্কে জেনে অনেকেই এসেছিলেন। তাদের কাছে ১০ লাখ টাকা দাম চাওয়া হয়েছিল। কিছু কমবেশি হলেও বিক্রি করে দিতাম। কিন্তু, কেউই আশানুরূপ দাম বলেনি। গরুটি এখনো খামারেই রয়েছে।’’- যোগ করেন তিনি। আরো পড়ুন: বৃষ্টিতে কোরবানির পশুর দাম কমার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি, ঈদের দিনেও সম্ভাবনা লাক্সারি প্রাডোকে নিজেরাই কোরবানি...
    কোরবানির মাংস সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়: এক ভাগ পরিবারের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-বন্ধুদের জন্য এবং এক ভাগ গরিব-দুস্থদের জন্য। কিন্তু একটি সাধারণ প্রশ্ন অনেকের মনে জাগে: কোরবানির মাংস কি মুসলমানদের বাইরে অন্য ধর্মাবলম্বী কাউকে দান করা বৈধ?ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী কিছু শর্ত সাপেক্ষে কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া যায়। প্রখ্যাত সৌদি আলেম শাইখ মুহাম্মদ ইবনে সালিহ আল-উসাইমিন (রহ.) বলেছেন, ‘যদি কোনো অমুসলিম মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িত না থাকে, তবে তাকে কোরবানির মাংস দান করা বৈধ।’তিনি এই মতামতের সমর্থনে কোরআনের একটি আয়াত উল্লেখ করেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে ধর্মের কারণে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের ঘর থেকে বিতাড়িত করেনি, তাদের সঙ্গে ন্যায় ও দয়ার সঙ্গে ব্যবহার করতে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন। কিন্তু যারা ধর্মের কারণে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ...
    ইসলামের প্রাথমিক যুগের মুসলমানদের সঙ্গে আজকের মুসলমানদের অন্যতম একটি পার্থক্য হলো তাঁদের দৃঢ়তা ও সাহসিকতায়। ইসলামের সূচনালগ্নে যে সমাজ গড়ে উঠেছিল, তা ছিল এমন কিছু মানুষের দ্বারা নির্মিত, যাঁরা ছিলেন আত্মত্যাগে প্রস্তুত, আল্লাহর নির্দেশে সমর্পিত, আদর্শে অটল, আর সাহসিকতায় অনন্য। এই সাহস কেবল বাহ্যিক দৃঢ়তা নয়, বরং ইমান ও তাওয়াক্কুল থেকে উৎসারিত এমন এক শক্তি, যা তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে, সত্য প্রতিষ্ঠায় উৎসর্গ করেছে এবং মৃত্যুর মুখেও ভীতসন্ত্রস্ত করেনি।কোরআনে সাহসিকতার শিক্ষাপবিত্র কোরআনে সাহসিকতা ও দৃঢ়তার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, ধৈর্য অবলম্বন করো, মোকাবিলার সময় অবিচলতা প্রদর্শন করো এবং সীমান্ত রক্ষায় স্থিত থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করে চলো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)তিনি বলেন, ‘তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য আর...
    জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার আগে প্রয়োজনীয় ক্ষৌরকর্ম করা, অর্থাৎ নখ কাটা, গোঁফ ছঁাটা, চুল কাটা ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা এবং জিলহজের চাঁদ ওঠার পর থেকে ১০ তারিখে কোরবানির পশু জবাইয়ের আগপর্যন্ত কোনো প্রকার ক্ষৌরকর্ম না করা ও কোরবানির পশু জবাইয়ের পর ওই দিনের মধ্যে ক্ষৌরকর্ম করা (অন্তত নখ কাটা) সুন্নত। এতে একটি কোরবানির সওয়াব পাওয়া যায়।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা কোরবানি করবে, তারা যেন (এই ১০ দিন) চুল ও নখ না কাটে।’ (মুসলিম: ৫২৩৩, ইবনে মাজাহ, পৃষ্ঠা: ২২৭) ‘যার কোরবানি করার সামর্থ্য নাই, সে যেন এই দিন তার মাথার চুল, নখ, গোঁফ কেটে ফেলে এবং নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করে। এ-ই আল্লাহর নিকট তার কোরবানি।’ (আবুদাউদ, নাসায়ি, ত্বহাবি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৩০৫)জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯...
    প্র্যাডো দেখতে ছোটখাটো হাতির মতো। প্রাডোর শরীরের সামনের অংশ কালো। মাথার মাঝখান দিয়ে এবং পেছন ও পেটের পুরো অংশ সাদা লোমে আবৃত। ১১শ’ কেজি ওজনের শরীর নিয়ে প্রাডো যখন হাঁটে, তখন মাটিতে ধপ ধপ শব্দ হয়। তার রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অপরিচিত কাউকে দেখলেই প্র্যাডো অস্থির হয়ে যায়। লাফালাফি শুরু করে দেয়।  এমনই একটি অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরু লালনপালন করছেন আইইউবি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ) এর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইবনুল রায়াত কাজী। তিনি বগুড়ার আরএসবি এগ্রো ফার্মের পরিচালকও। এবারের কোরবানিতে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান।  প্র্যাডোর মালিক ইবনুল রায়াত কাজী জানালেন, শুধু প্রাডো নয়; দেশী, শাহীওয়াল, অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের কোরবানিযোগ্য ২৪টি গরু তার খামারে ছিল। সবগুলোর মধ্যে প্র্যাডোর শরীরই দীর্ঘদেহী। এক বছর আগে ৪...
    হাদিসে আছে, মসজিদে কুবায় দুই রাকাত নামাজ পড়লে একটি ওমরাহ হজের সমান সওয়াব পাওয়া যায় (তিরিমিজি, হাদিস: ৩২৪)। এই মসজিদে এক ধরনের সাদা পাথর ব্যবহার করা হয়, যা অন্য কোনো মসজিদে সাধারণত দেখা যায় না। মদিনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত কুবা মসজিদের দূরত্ব মসজিদে নববি থেকে পাঁচ কিলোমিটার। কুবা একটি বিখ্যাত কূপের নাম। সময়ের পরিক্রমায় এ কূপকে কেন্দ্র করে যে জনবসতি গড়ে উঠেছে, তাকেও কুবা বলা হতো। এরই সূত্রে মসজিদের নাম হয়ে যায় মসজিদে কুবা। মসজিদে নববির অদূরে বেলাল মসজিদের কাছে নতুন করে করা হয়েছে কুবা স্কয়ার। ৪৫ মিনিট হেঁটে সরাসরি কুবা মসজিদে যাওয়া যায়। যারা হেঁটে যাবেন না, তারা ব্যাটারিচালিত গাড়িতে করে পৌঁছাতে পারেন। খরচ হবে ১০ রিয়াল। মসজিদে কুবা ইসলামের ইতিহাসের প্রথম নির্মিত মসজিদ। মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায়...
    আদালতে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি পাওয়ারকে সিজদা করি (উপরের দিকে আঙুল ইশারা করে)। আমার যদি টাকা থাকতো আমি নিজেই পত্রিকা খুলতাম। আপনারা হলুদ সাংবাদিক হইয়েন না। যেটা সত্য, তদন্ত করে আপনারা সেটাই লেখেন। সত্য কথা লিখবেন। ১৯৮৯ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে লিখতেছে। আমার নাম বিক্রি করে যারা চাঁদাবাজি করেন, তাদের আপনারা ধরতে পারেন না? নিজে বাঁচার জন্য আমি কাছে অস্ত্র রাখি। কেউ যদি বলে রাখি না, তাহলে সেটা মিথ্যা হবে।’  আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক আসার আগে কাটগাড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীকে (৬১)রিমান্ড আবেদনের জন্য  আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের...
    রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীকে (৬১) আট দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অন্য তিন জনের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ।  রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)।  রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করতো।...
    শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীসহ (৬১) চারজনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে এ রিমান্ড বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।  হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় আজ এ রিমান্ড আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ। রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)।  রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করত। সুব্রত বাইন তৎকালীন খুন-ডাকাতি সংঘটনের...
    মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতা ২১ বছর বয়সে হজ করার জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন জন্মভূমি তানজিয়ার থেকে। সেটা আজ থেকে ৭০০ বছর আগের কথা। ১৩২৫ সালের জুন মাসে সফর শুরু করেন হেঁটে। ফলে প্রায় এক বছর পর ১৩২৬ সালের নভেম্বর মাসে তিনি তাঁর প্রথম হজ সম্পন্ন করেন। হজ সেরে তিনি মধ্য এশিয়ার দিকে যাত্রা শুরু করেন। মোট আড়াই দশকের পথ পরিক্রমায় তিনি ১ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণকালে তিনি বাংলাদেশেও এসেছিলেন। তাঁর সফরনামা ‘রিহলা’য় উঠে এসেছে বিশ্বভ্রমণের বৈচিত্র্যময় বিবরণ।ইবনে বতুতা অন্তত তিনবার, আরেক বিবরণ অনুসারে পাঁচবার হজ করেছেন। দ্বিতীয়বার ১৩২৯ বা ১৩৩০ সালে আর তৃতীয়বার ১৩৪৭ বা ১৩৪৯ সালে। তৃতীয়বার হজ সেরে তিনি নিজ দেশে তানজিয়ারে ফিরে যান। এর মধ্য দিয়ে তাঁর পশ্চিম আফ্রিকা...
    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের পক্ষে একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন- পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান ও শেরেবাংলা নগর থানার ওসি ইমাউল হক। তারা হাসপাতালের ৪০২ ও ৪০৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন মারুফ হোসেন, আমির হামজা শিমুল, আবু তাহের এবং সাগর দে’র চিকিৎসার খোঁজ নেন। জুলাই আন্দোলনে আহতদের যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এই উদ্যোগের জন্য হাসপাতালের চিকিৎসকরা ডিএমপি কমিশনারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আহতদের হতাশা যেন অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হলে আহতরা ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার আশ্বাস দেন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালকসহ আহতদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে উপকমিশনার ইবনে মিজান...
    মাদারীপুরের শিবচরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে আহত ইবনে সামাদ নামে এক যুবক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে তিনি মারা যান। গত ২১ দিন তিনি ঢামেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নিহত ইবনে সামাদ জেলার শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়ন সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সর্দারের ছেলে। আরো পড়ুন: তিতুমীর কলেজে বৈষম্যবিরোধীসহ সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রদলের হামলা টাঙ্গাইলে সন্ত্রাসীদের হামলায় ঠিকাদার আহত, ফাঁকা গুলি এলাকাবাসী জানান, ইবনে সামাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। এসময় বিক্ষুব্ধরা প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গত ৬ মে মঙ্গলবার রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের বাড়িতে হামলা চালায় মাদবর বংশের...
    প্র্যাডো দেখতে ছোটখাটো হাতির মতো। প্রাডোর শরীরের সামনের অংশ কালো। মাথার মাঝখান দিয়ে এবং পেছন ও পেটের পুরো অংশ সাদা লোমে আবৃত। ১১শ’ কেজি ওজনের শরীর নিয়ে প্রাডো যখন হাঁটে, তখন মাটিতে ধপ ধপ শব্দ হয়। তার রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অপরিচিত কাউকে দেখলেই প্র্যাডো অস্থির হয়ে যায়। লাফালাফি শুরু করে দেয়।  এমনই একটি অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরু লালনপালন করছেন আইইউবি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ) এর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইবনুল রায়াত কাজী। তিনি বগুড়ার আরএসবি এগ্রো ফার্মের পরিচালকও। এবারের কোরবানিতে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান।  প্র্যাডোর মালিক ইবনুল রায়াত কাজী জানালেন, শুধু প্রাডো নয়; দেশী, শাহীওয়াল, অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের কোরবানিযোগ্য ২৪টি গরু তার খামারে ছিল। সবগুলোর মধ্যে প্র্যাডোর শরীরই দীর্ঘদেহী। এক বছর আগে ৪...
    মাদারীপুরের শিবচরে পূর্বশত্রুতার জেরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত তরুণ ইবনে সামাদ (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।৬ মে রাতে জমিজমার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে সংঘর্ষে ইবনে সামাদ আহত হয়েছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়। ইবনে সামাদ শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়ন সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে।এদিকে ইবনে সামাদের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুপক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আজ সকালে ইবনে সামাদের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকটি বাড়িতে হামলা করেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে চারটি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ মে রাতে জমিজমাকে...
    আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ‘‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা মানুষ হিসেবে মানুষকে সহযোগিতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষের মধ্যে সেই মানুষটিই উত্তম যিনি মানুষ ও মানবতার কাজ করেন। মানবতার জন্য ভালো কাজ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’’ সোমবার (২৬ মে) সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপকারভোগীদের মাঝে ঘরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তরের সময় তিনি এ কথাগুলো বলেন। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘‘সেই ধারাবাহিকতায় আজকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬০টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হলো। যারা এই মহান কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, আল্লাহ সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।’’ এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল, ‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মানবসেবা বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ জোবায়ের ইবনে কামাল, ‘রক্ত...
    লোকমান হাকিম—এক নামেই পৃথিবীব্যাপী পরিচিত। তাঁর প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা মানুষকে চুম্বকের মতো টানত। কোরআনে তাঁর নামে রয়েছে একটি পূর্ণ সুরা—সুরা লোকমান, ৩১তম সুরা, মক্কায় অবতীর্ণ। ৩৪টি আয়াত নিয়ে এই সুরা। তিনি ছিলেন আফ্রিকার নাওবা গোত্রের কৃষ্ণাঙ্গ, সুদান-মিসরীয় বংশোদ্ভূত, নাম লোকমান বিন আনকা বিন সাদুন। আরবে এসেছিলেন ক্রীতদাস হয়ে। জাবের (রা.) বলেন, তিনি ছিলেন খর্বাকৃতির, মোটা ঠোঁটের অধিকারী। পেশায় কাঠমিস্ত্রি হলেও তাঁর কথার জাদুতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসত।প্রজ্ঞার রহস্যএকবার এক বিশাল সমাবেশে লোকমান হাকিম জ্ঞানগর্ভ কথা বলছিলেন। একজন প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি কি সেই লোক, যিনি আমার সঙ্গে অমুক বনে ছাগল চরাতেন?’ লোকমান হাকিম হেসে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিই সে।’ লোকটি অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, ‘তাহলে এত সম্মান কীভাবে পেলেন? সবাই আপনার কথা শুনতে ছুটে আসে!’ লোকমান বললেন, ‘দুটি কাজ—সব সময় সত্য বলা...
    রাজনৈতিক সংঘাত, মহামারি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও আগ্রাসী আক্রমণ এবং হজযাত্রীদের লুণ্ঠন হজের আয়োজনকে ব্যাহত করেছে। এই তৃতীয় পর্বে আমরা মঙ্গোল ও ক্রুসেডারদের আক্রমণ, সামাজিক-অর্থনৈতিক কারণ এবং হজের পথে ডাকাতির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।মঙ্গোল ও ক্রুসেডারদের আক্রমণমঙ্গোল ও ক্রুসেডারদের আক্রমণ মুসলিম অঞ্চলগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে হজের পথকে বিপজ্জনক করে তুলেছিল। মঙ্গোলদের আক্রমণ ৬১৫ হিজরি (১২১৮ খ্রি.) সনে শুরু হয়, যখন তারা মঙ্গোলিয়া ও উত্তর চীন থেকে খোয়ারিজমীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এই আক্রমণ ইরান, ইরাক এবং মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস করে দেয়। আবু শামা মাকদিসি (মৃ. ৬৬৫ হি.) তাঁর আয-যাইল আলা আর-রাওযাতাইন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে ৬১৭ হিজরি (১২২০ খ্রি.) সনে খোরাসান ও পারস্য অঞ্চল থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি, কারণ মঙ্গোলদের ভয়ে পথ অনিরাপদ হয়ে পড়েছিল।৬৩০ হিজরি (১২৩৩...
    ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে হজ বন্ধ বা সীমিত হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক সংঘাত ও নিরাপত্তাহীনতা যেমন ছিল, তেমনি মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগও অনেকাংশে দায়ী হয়েছে। প্রথম পর্বে আমরা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এই দ্বিতীয় পর্বে আমরা অভাব ও বন্যার মতো মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব বিশ্লেষণ করব। মহামারির প্রতিবন্ধকতামহামারি মানব ইতিহাসে বারবার ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে। হজে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটায় তা মহামারির সময় বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেমন সাম্প্রতিক সময়ের কোভিড-১৯ মহামারি। ১৪৪১-১৪৪২ হিজরি (২০২০-২০২১ খ্রিষ্টাব্দ) সনে হজ অত্যন্ত সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি আরব সরকার হাজিদের সংখ্যা কয়েক হাজারে সীমাবদ্ধ করে, যা সাধারণত কয়েক মিলিয়ন হয়ে থাকে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ছিল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধের প্রয়োজন। সৌদি আরব সরকার মাস্ক পরা, সামাজিক...
    ইবনে সিনা ট্রাস্ট ২০২৫ সালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মেডিকেল কলেজের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও মেডিকেল টেকনোলজি পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা অসচ্ছল মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তি দেবে। জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির আওতায় ইবনে সিনা ট্রাস্ট এ বৃত্তি দেবে।শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদনের যোগ্য১. আবেদনকারী ২০২৩-২৪ সেশন এ স্নাতক/ফাজিল প্রথম বর্ষে নতুন ভর্তি হওয়া নিয়মিত শিক্ষার্থী ও পারিবারিকভাবে অসচ্ছল হতে হবে।২. অবশ্যই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়/ইঞ্জিনিয়ারিং/কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়/সরকারি মেডিকেল কলেজ/সরকারি মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সের/যেকোনো অনুমোদিত মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হতে হবে।৩. এসএসসি/দাখিল অথবা এইচএসসি/আলিম বা সমমান পরীক্ষায় কমপক্ষে একটিতে জিপিএ–৫ প্রাপ্ত হতে হবে।যাঁরা আবেদন করতে পারবেন না১. সমাজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথবা দেশের প্রচলিত আইনবিরোধী অথবা যেকোনো প্রকার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী।২. আর্থিকভাবে সচ্ছল অথবা অন্য কোনো সংস্থা/প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি গ্রহণকারী (সরকারি/বোর্ড বৃত্তি ব্যতীত) শিক্ষার্থী।আরও পড়ুনএসএসসি–এইচএসসির বোর্ডসেরাদের ১০ ও ২৫ হাজার টাকা দেবে...
    ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হজ। হজযাত্রা মুসলমানদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা, যা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতই নয়, বরং ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক। তবে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে হজের এই পবিত্র ইবাদত কখনো বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কখনো আংশিকভাবে পালন করা করা গেছে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল রাজনৈতিক সংঘাত, নিরাপত্তাহীনতা এবং শাসন ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বিঘ্নইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই হজের আয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভরশীল ছিল। মক্কা ও মদিনা, যেখানে হজের প্রধান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, সেগুলো ছিল রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্র। বিভিন্ন রাজবংশ ও শাসনকর্তারা এই পবিত্র ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিলেন। এই প্রতিযোগিতা প্রায়ই হজের পথে বাধা সৃষ্টি করত। ইতিহাসবিদ তাবারি (মৃত্যু: ৩১০ হিজরি/৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) উল্লেখ করেছেন যে ৭৩ হিজরি (৬৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) সনে উমাইয়া ও জুবাইরিদের মধ্যে সংঘাতের কারণে...
    আমরা অনেকেই শৈশবে ইসলামি মাসগুলোর নাম মুখস্থ করেছি বা আমাদের সন্তানদের সুর করে সেগুলো শিখিয়েছি। কিন্তু আজ কজন আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি বারোটি হিজরি মাসের নাম? বা চারটি পবিত্র মাস কোনগুলো বা এই মুহূর্তে কোন মাস চলছে? রমজান, ঈদ, আরাফা বা আশুরার মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিন ছাড়া হিজরি ক্যালেন্ডার এখন আমাদের জীবনে শুধু একটি সাংস্কৃতিক নিদর্শন ছাড়া কিছু নয়। অথচ এই ক্যালেন্ডার বা কালপঞ্জির সঙ্গে পুনঃ সংযোগ আমাদের ইমানকে গভীর করতে পারে, আমাদের জীবনকে আল্লাহর পথে নিয়ে যেতে পারে। হিজরি ক্যালেন্ডার শুধু সময় মাপার হাতিয়ার নয়, এটি আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করে। হিজরি কালপঞ্জি: ইবাদতের একটি রূপকোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল ও চাঁদকে আলোকিত করেছেন এবং এর জন্য নির্দিষ্ট পর্যায় নির্ধারণ করেছেন, যাতে তোমরা বছরের সংখ্যা ও সময়ের...
    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের বসার চেয়ার দিয়েছে ইবনে সিনা ট্রাস্ট। ট্রাস্টটির পক্ষ থেকে তিন আসনবিশিষ্ট ১৩ সেট চেয়ার প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একসঙ্গে ৩৯ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবেন। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে মেডিকেল সেন্টারের কাছে এসব চেয়ার হস্তান্তর করেন ইবনে সিনা ট্রাস্টের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রতিদিন অনেক শিক্ষার্থী সেবা নিতে আসে। এখানে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গার সংকট ছিল। এখন এই চেয়ারগুলো বসানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষার সময় আরামদায়কভাবে বসতে পারবে। আমরা ইবনে সিনা ট্রাস্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি, ভবিষ্যতেও তারা এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।” আরো পড়ুন: নোবিপ্রবিতে গবেষণা মেলা ২২ জুন ...
    হজরত বারাআ (রা.)-এর বরাতে বর্ণিত একটি হাদিসে এ ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আতিক (রা.)-কে দলনেতা নিযুক্ত করে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে প্রেরণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে কয়েকজন আনসার সাহাবিকে ইহুদি নেতা আবু রাফির বিরুদ্ধে পাঠানো হয়। আবু রাফি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে কষ্ট দিতেন এবং এ কাজে অন্যদের সহযোগিতা করতেন। তিনি হিজাজ অঞ্চলে (বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনা অঞ্চল) একটি দুর্গে বসবাস করতেন। মিশনের শুরুআবদুল্লাহ ইবনে আতিক (রা.) ও তাঁর সঙ্গীরা সূর্যাস্তের সময় আবু রাফির দুর্গের কাছে পৌঁছান। তখন দুর্গের আশপাশের লোকজন তাদের পশুপাল নিয়ে ঘরে ফিরছিল। আবদুল্লাহ ইবনে আতিক (রা.) তাঁর সঙ্গীদের অপেক্ষা করতে বলে একাই দুর্গের প্রবেশদ্বারের দিকে এগিয়ে যান। তিনি কৌশলে নিজেকে এমনভাবে ঢেকে নেন, যেন তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিচ্ছেন। দুর্গের দারোয়ান তাঁকে...
    সাবেক সেনা কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগে পলাশে ছাত্রদলের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে কক্সবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নরসিংদী র‍্যাব-১১ এর কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন, ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আরিফ। এর আগে ১০ এপ্রিল পলাশ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোজাম্মেল হক। তিনি পলাশ উপজেলার বালিয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে।  নরসিংদীর র‍্যাব-১১ এর কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে সোমবার রাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী, সেটা মুখ্য নয়; অপরাধী...
    রাঙামাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ চেয়ে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা। তারা ভাস্কর্য অপসারণে জেলা পরিষদকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় আগামী শুক্রবার জুমার পর তারাই এটি ভেঙে ফেলবেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভকারীরা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। তারা জেলা পরিষদের মূল ফটক বন্ধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রশিবিরের জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাফি। সংহতি বক্তব্য দেন মো. ইরফানুল হক, সর্বজিত চাকমা, মো. ইমাম হোসেন, মো. হারুন ইবনে আব্দুল খালেদ, মো. তানিম ইবনে ইয়ম, সায়েদা খাতুন, মো. ওয়াহিদুজ্জামান রোমন, মো. জুনায়েদুল ইসলাম. মো রাকিব উদ্দীন, মো আব্দুল্লাহ প্রমুখ। এর আগে শহরের বনরূপা পেট্রোল পাম্প থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা...
    পবিত্র কাবাঘরকে আবৃত করা কাপড়টি আরবিতে কিসওয়া নামে পরিচিত, যাকে বাংলায় আমরা গিলাফ বলি। এই কিসওয়া কাবাঘরের পবিত্রতা ও মর্যাদার প্রতীক। ইতিহাসের পাতায় কিসওয়ার উৎপত্তি ও বিবর্তন একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য বহন করে, যা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যে ভরপুর। কিসওয়ার ঐতিহাসিক উৎপত্তিইবনে ইসহাক ও ইবনে হিশামের বর্ণনা অনুযায়ী, পঞ্চম শতাব্দীতে ইয়েমেনের রাজা তুব্বা আবু কারিব আসাদ প্রথম কাবাঘরে কিসওয়া প্রদান করেন। তিনি ছিলেন হিমিয়ার রাজবংশের শাসক এবং তাঁর রাজত্বকাল ৩৮৮-৪২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ধরা হয়। তিনি প্রথমে পৌত্তলিক ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তাঁর পুত্রকে মদিনায় হত্যা করা হলে প্রতিশোধ নিতে তিনি মদিনা শহর ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মদিনার দুই ইহুদি র‍্যাবাই তাঁকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখেন এবং তাঁর প্রভাবে তিনি ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেন। মদিনা থেকে ইয়েমেন ফেরার পথে তিনি মক্কায় পৌঁছান। পথে একটি...
    পবিত্র কাবাঘরের দক্ষিণ–পূর্ব কোণে, মাতাফ থেকে প্রায় চার ফুট উচ্চতায়, রুপার ফ্রেমে বাঁধাই করা কালো রঙের আটটি ছোট পাথরের টুকরা রয়েছে। এগুলো একসময় একটি অখণ্ড পাথরের অংশ ছিল, যা বিভিন্ন ঘটনায় ভেঙে বর্তমানে আটটি খণ্ডে বিভক্ত। এই পাথর হাজরে আসওয়াদ নামে পরিচিত, যা পবিত্র কাবাঘরের একটি অতি পবিত্র ও মূল্যবান উপাদান। হাজরে আসওয়াদের তাৎপর্যপবিত্র কাবা শরিফের তাওয়াফ (সাত চক্কর প্রদক্ষিণ) শুরু হয় এই হাজরে আসওয়াদের অবস্থান থেকে। প্রতিটি চক্করের সময় হজযাত্রীরা এই পাথর চুম্বন করেন। ভিড়ের কারণে চুম্বন সম্ভব না হলে ইশারায় চুম্বনের নিয়মও পালন করা যায়। হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি জানি এটি একটি সাধারণ পাথর, যা কারও ক্ষতি বা উপকার করতে পারে না। কিন্তু আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে এটি চুম্বন করতে দেখেছি,...
    মক্কার পবিত্র ভূমিতে হজের ভিড়। হাজার হাজার মানুষ তাওয়াফ করছেন, তাঁদের কণ্ঠে লাব্বাইকের ধ্বনি। কিন্তু এই ভিড়ের মধ্যে একটি ছোট দল মিনায় জড়ো হয়েছে। তারা শাসকের অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাদের হাতে কোরআন, চোখে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা। এই দৃশ্য ইসলামের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের একটি অনন্য রূপ। হজ ও ঈদুল আজহা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং মুসলিমদের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি উত্থাপনের একটি পবিত্র প্ল্যাটফর্ম ছিল তখন। এই প্রবন্ধে আমরা ঈদুল আজহা ও হজের প্রেক্ষাপটে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, ধর্মীয় আচারের সঙ্গে এর সম্পর্ক এবং মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে এর বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করব। হজের প্রেক্ষাপটে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদহজ মুসলিমদের জন্য একটি বিশাল সমাবেশ, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একত্র হয়। এই সমাবেশ শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং সামাজিক ও রাজনৈতিক অভিযোগ উত্থাপনের একটি মঞ্চ হয়ে...
    মহানবী (সা.) এসেছেন সত্যের বার্তাবহ হয়ে, অমুসলিমদের ইসলামের ছায়াতলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যারা তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি, তাদের সঙ্গেও তিনি ন্যায়সংগত আচরণ করেছেন। তাঁর সময়ে তিনজন অমুসলিমের প্রশংসা করেছেন তিনি। কী ছিল এমন তাঁদের মধ্যে, যা নবীজির কাছে প্রশংসনীয় মনে হয়েছিল? আসুন, পর্যালোচনা করে দেখা যাক।১. কুরাইশ নেতা মুত’ইম ইবনে আদিতায়েফ থেকে নবীজি (সা.) ফিরে আসছিলেন আহত ও অপমানিত হয়ে। চাচা আবু তালিব সম্প্রতি মারা গেছেন, ফলে মক্কায় তিনি পুরোপুরি সহায়হীন। এমন পরিস্থিতিতে মক্কায় প্রবেশ করা ছিল আত্মঘাতী। তাই তিনি মক্কার বিভিন্ন নেতৃস্থানীয়দের কাছে বার্তা পাঠালেন নিরাপত্তা চেয়ে। একমাত্র কুরাইশ নেতা মুত’ইম ইবনে আদি ছাড়া কেউ তাঁর আহ্বানে সাড়া দেননি।মুত’ইম ছিলেন তাঁদের একজন, যাঁরা কুরাইশের বয়কট ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন। বয়কটে মহানবী (সা.) সমগোত্রীয় সবার সঙ্গে তিন বছর অনাহারে...
    জীবনে কঠিন সময় আসা অবশ্যম্ভাবী। এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য পরীক্ষার অংশ। কঠিন মুহূর্তে আমরা যদি পাপের পথ পরিহার করে আল্লাহর বিধানের দিকে অগ্রসর হই, তবে তাঁর নৈকট্য লাভ করতে পারি। এই পরীক্ষায় সর্বোত্তম উদাহরণ হলেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর জীবন ছিল দুর্যোগ, চ্যালেঞ্জ এবং অন্ধকার সময়ের এক অবিচলিত সংগ্রাম। অজ্ঞ সমাজকে আলোকিত করতে গিয়ে তিনি ঘরে-বাইরে অসংখ্য দুর্লঙ্ঘ বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা, সপরিবার গিরিখাতে বন্দিজীবন, অপবাদ, যুদ্ধের ভয়াবহতা, বিষাক্ত খাবারের মুখোমুখি হওয়া—তাঁর জীবনে এমন কোনো কষ্ট ছিল না, যা তিনি পাননি। তবু তিনি কখনো হতাশ হননি, হারিয়ে যাননি। প্রতিটি সংকটে তিনি অবিচল থেকে জয়ী হয়েছেন। এই আর্টিকেলে আমরা তাঁর জীবনের কিছু কঠিন মুহূর্ত এবং সেগুলো জয়ের কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।  মহানবী (সা.)-এর জীবনে কঠিন...
    মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর মুসলমানরা আশা করেছিলেন, মক্কার কুরাইশরা তাদের বিরুদ্ধে বৈরিতা পরিত্যাগ করবে। কিন্তু কুরাইশ নেতৃবৃন্দ মদিনায় ইসলাম ও মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে নিজেদের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে। এই পরিস্থিতিতে মদিনায় গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর অসাধারণ দূরদর্শিতা, কূটনৈতিক দক্ষতা এবং নাগরিকত্বের চেতনার মাধ্যমে এই সংকট নিরসন করেন, মদিনাকে একটি শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ সমাজে রূপান্তরিত করেন।  মক্কার উদ্বেগের কারণ মুসলমানদের মদিনায় হিজরত মক্কার কুরাইশদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তাদের আশঙ্কার প্রধান কারণগুলো ছিল এ রকম। মদিনার কৌশলগত অবস্থান: মদিনা সিরিয়া অঞ্চলের বাণিজ্যিক কাফেলার পথে অবস্থিত ছিল। মুসলমানদের শক্তিশালী হওয়া মক্কার বাণিজ্যিক প্রাধান্যের জন্য হুমকি ছিল। (সিরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা: ২৫২-২৫৪) প্রতিশোধ ও সম্পদের ভয়: কুরাইশরা আশঙ্কা করত, মুসলমানরা মক্কায় ফিরে তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং...
    কায়রোর বাজারে হঠাৎ স্তব্ধতা। দোকানিরা তাঁদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন, রাস্তায় জনতার গুঞ্জন। তাঁরা শাসকের অত্যধিক করের বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডেকেছেন। এই দৃশ্য মধ্যযুগীয় মুসলিম সমাজের একটি পরিচিত চিত্র। ইসলামের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুধু ন্যায়বিচারের দাবি ছিল না, বরং এটি সমাজের গতিশীলতা ও জনগণের ঐক্যের প্রতীক ছিল। এই পর্বে আমরা প্রতিবাদের বিভিন্ন কারণ—অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক এবং এর ধরন—মিছিল, ধর্মঘট, প্রতীকী প্রতিবাদ, সমাবেশ নিয়ে আলোচনা করব। দেখব কীভাবে এই প্রতিবাদগুলো মুসলিম সমাজকে গড়ে তুলেছিল। প্রতিবাদের কারণইসলামের ইতিহাসে প্রতিবাদের কারণগুলো ছিল বৈচিত্র্যময়। জনগণ শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেনি, বরং তাদের জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো রক্ষার জন্যও রাস্তায় নেমেছে। এখানে প্রধান কারণগুলো আলোচনা করা হলো।অর্থনৈতিক কারণ: অত্যধিক কর, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বা খাদ্যসংকট মুসলিম সমাজে প্রতিবাদের অন্যতম কারণ ছিল। ৩৯৮ হিজরি সনে (১০০৭-০৮ খ্রি.) ফাতেমীয়রা...
    নাসর মানে সাহায্য। সুরা নাসর পবিত্র কোরআনের ১১০তম সুরা। রাসুল (সা.)-এর বিদায় হজের সময় সুরাটি অবতীর্ণ হয়। আল্লাহর সহায়তায় ইসলামের পরিপূর্ণ জয়ে পৌত্তলিকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আল্লাহর প্রশংসাকীর্তন ও তাঁর ক্ষমা ভিক্ষা করা উচিত। এই সুরা নাজিল হওয়ার কিছুদিন পরেই রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন। সুরা নাসরের অর্থ আবার দেখে নিই: পরম করুণাময় পরম দয়াময় আল্লাহর নামে। ১. যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়। ২. আর তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর ধর্ম গ্রহণ করতে দেখবে, ৩. তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসায় তাঁর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করো ও তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি তো ক্ষমাপরবশ। সুরা নাসরের সারকথা:সুরা নাসর ৩ আয়াতের একটি ছোট্ট সুরা। প্রথম অংশে বিজয়ের জন্য যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিজয়, দ্বিতীয় অংশে বিজয়ের ফলাফল এবং তৃতীয়...
    তওবা মানে অনুতাপ বা প্রত্যাবর্তন। সুরা তওবা পবিত্র কোরআনের নবম সুরা। এই সুরা মদিনায় অবতীর্ণ হয়। এতে রয়েছে ১৬ রুকু, ১২৯ আয়াত। এই সুরাকে ‘তওবা’র পাশাপাশি ‘বারাআত’ (দায়মুক্তি) নামেও ডাকা হয়। এ সুরায় বিশ্বাসীদের তওবা কবুল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য এটিকে সুরা তওবা বলা হয়। বারাআত বলার কারণ হলো, বারাআত অর্থ সম্পর্ক ছিন্ন করা। এতে অবিশ্বাসীদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়মুক্তির কথা উল্লেখ রয়েছে। পবিত্র কোরআনে শুধু এই সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লিপিবদ্ধ হয়নি। অনেকের মতে, এটি স্বতন্ত্র সুরা নয়, সুরা আনফালের শেষাংশ মাত্র। হজরত আলী (রা.)–এর মতে, এটি স্বতন্ত্র সুরা। কাফিরদের সঙ্গে তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা রয়েছে। অনেকের মতে, এ রকম ব্যাপারে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ব্যবহৃত হয় না। ইসলাম যে জয়যুক্ত...
    এই কুয়ার নামকরণের পেছনে রয়েছে একটি অলৌকিক ঘটনা আছে। কুয়াটি খনন করা হয়েছিল প্রাক্‌-ইসলামি যুগে। সে সময় এক ইহুদি কৃষককে বলা হতো আরিস। আরিস শব্দের অর্থ কৃষক। কুয়াটির নাম যদিও আরিস, তবে এটি ‘আংটির কুয়া’ নামে বেশি পরিচিত। কারণ, এই কুয়ার সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর আংটির একটি ঘটনা জড়িয়ে আছে।মহানবী (সা.) একটি রুপার আংটি ব্যবহার করতেন, যাতে নিচের দিক থেকে ওপরে তিনটি শব্দ লেখা ছিল, ‘মুহাম্মদ-রাসুল-আল্লাহ’। আংটিটি পরবর্তী সময়ে খলিফা আবু বকর (রা.), উমর ইবনে আল-খাত্তাব (রা.) এবং উসমান ইবনে আফফান (রা.) ব্যবহার করেন।আরও পড়ুনমদিনার ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখছেন হজযাত্রীরা২৬ জুন ২০২৪উসমান (রা.)-এর শাসনামলে একদিন আংটিটা কুয়ায় পড়ে যায়। তিন দিন ধরে আংটিটি খোঁজার পরও তা পাওয়া যায়নি। নবীজির মোহরাঙ্কিত আংটিটি চিরতরে হারিয়ে যায়। এরপর থেকে কুয়াটি ‘বিরে আরিস’ বা ‘আংটির...
    ইমাম মালিক (রহ.) ইসলামি জ্ঞানচর্চার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর জীবন ও শিক্ষা জ্ঞানানুরাগীদের জন্য চিরকালীন প্রেরণার উৎস। মাত্র ১০ বছর বয়সে জ্ঞান অর্জন শুরু করে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই অসাধারণ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। ১৮ বছর বয়সের আগেই তিনি ফতোয়া দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন এবং ২১ বছর বয়সে জনসমক্ষে শিক্ষাদান শুরু করেন। তাঁর জ্ঞানের প্রতি নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধা এতটাই গভীর ছিল যে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁর পাঠশালায় ভিড় জমাতেন। ইমাম শাফিয়ি (রহ.) তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, ‘ইমাম মালিকের মধ্যে যে সম্মান ও শ্রদ্ধার ভাব দেখেছি, তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তাঁর পাঠশালায় কাগজ তুলতে গেলে শ্রদ্ধার কারণে আমি নীরবে তা করতাম।’জ্ঞানচর্চার সহায়ক পরিবেশইমাম মালিকের সময় মদিনায় জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ বিদ্যমান ছিল। মসজিদের দরজা সর্বদা উন্মুক্ত...
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যানজট নিরসন, কার্বনমুক্ত শাটল সার্ভিস চালু, পরিবেশবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা এবং ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ কয়েকটি দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। রোববার দুপুরে প্রক্টর অফিসে এই স্মারকলিপি দেন তাঁরা।তাঁদের দাবিগুলো হলো যানজট নিরসন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাস এলাকায় শুধু রেজিস্টার্ড, নির্ধারিত, অধূমপায়ী রিকশাচালকদের চলাচল নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের চলাচলে দুর্ভোগ লাঘব, পরিবেশ রক্ষায় একটি কার্বনমুক্ত, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শাটল সেবা চালু করা।স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আপনারা জানেন ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি বিতর্কিত একটি শব্দ, যা সম্পূর্ণ জোরপূর্বকভাবে আমাদের ক্যাম্পাসসহ সারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। যখন এই কোটাটি আমদানি হয়, তখনই আমরা এই কোটা বাতিল করার জন্য আন্দোলন করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়...
    সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি মারা যান। আবদুর রাজ্জাক একসময় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। পরে এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শিশির মনির তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুর কথা জানান। তিনি লিখেছেন, ‘আমার সিনিয়র জনাব ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক স্যার ইবনে সিনা হাসপাতালে আজ বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’জামায়াতের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেন। ২০১৯ সালে তিনি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন। পরে আত্মপ্রকাশ করা এবি পার্টির...
    মসজিদটি মদিনা শহরের পশ্চিম প্রান্তে খালিদ বিন ওয়ালিদ সড়কে অবস্থিত কিবলাতাঈন মসজিদ, মানে দুই কেবলার মসজিদ। বনু সালামা অঞ্চলে হওয়ার সুবাদে এই মসজিদের প্রথম নাম ছিল ‘মসজিদে বনু সালামা’।মসজিদে কিবলাতাইন ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। এই মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় কেবলা বদলের আদেশ দেওয়া হয়। নামাজ পড়তে দাঁড়িয়ে ওহি পাওয়ার পর নবীজি (সা.) মসজিদে আকসার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে কাবামুখী হন এবং বাকি নামাজ শেষ করেন। প্রথমে কিবলা ছিল মসজিদে আকসা, সবাই সেদিকে ফিরে নামাজ পড়তেন। এ সময় পরে কাবা শরিফকে কিবলা নির্ধারণ করা হয়। তাই এই মসজিদকে দুই কেবলার মসজিদ বলে।মসজিদের ভেতরের মূল অংশ অক্ষত রেখে চারদিকে দালান করে মসজিদটি বাড়ানো হয়েছে। স্মৃতিস্বরূপ মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকের কেবলার জায়গাটি দুইতলা বরাবর রেখে দেওয়া হয়েছে।আরও পড়ুন মসজিদে নববি...
    মদিনায় হিজরতের পর একটি মসজিদ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়ে। কুবা পল্লীতে একটি মসজিদের জায়গা পাওয়া যায়। কুবা মসজিদ নির্মাণকাজে সবার সঙ্গে মহানবী (সা.) নিজে অংশগ্রহণ করেন। কুলসুম (রা.)-এর নিজস্ব একখণ্ড জমিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা তাওবায় এই মসজিদের উল্লেখ আছে। হিজরতের সময় মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় আসার পথে কুবা নামক স্থানে এসে ১৪ দিন অবস্থান করেন। এখানে মসজিদটি নির্মাণ করেন। এটি নবীজির (সা.) হাতে নির্মিত প্রথম মসজিদ। কোরআনে আছে, ‘মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই ধর্মকর্মের জন্য স্থাপিত হয়েছে, ওখানেই নামাজের জন্য তোমার দাঁড়ানো উচিত। ওখানে পবিত্র হতে চায় এমন লোক তুমি পাবে, আর যারা পবিত্র হয় আল্লাহ্ তাদের পছন্দ করেন।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ১০৮)এ মসজিদে নামাজ আদায়ের ফজিলত প্রসঙ্গে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘মসজিদে কুবায় দুই রাকাত নামাজ...
    নোয়াখালীর সদর উপজেলার একটি মাদ্রাসায় জোবায়ের ইবনে জিদান (১২) নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটি মাদ্রাসার একটি শৌচাগারে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরিবার বলছে, মাদ্রাসার মোহতামিম (পরিচালক) শিশুটিকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।পুলিশ জানায়, নিহত জোবায়ের ইবনে জিদান সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের মধ্য চর উরিয়া গ্রামের ওমানপ্রবাসী আমিরুল ইসলামের ছেলে। সে নোয়াখালী পৌরসভার সোনাপুর এলাকার তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।নিহত জিদানের মা সাবরিনা খাতুন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তাঁর দাদা মো. নুরুল হক নাতিকে দেখতে মাদ্রাসায় যান। সেখানে তিনি দেখেন, তাঁর নাতি একটি বেঞ্চের ওপর উপুড় হয়ে শোয়া। মেঝেতে বমি পড়ে আছে। তখন মাদ্রাসার...
    ইয়েমেনের রাজধানী সানআ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে মাআরিব শহর। মাআরিবে ছিল সাবা সম্প্রদায়ের বসতি। কোরআনে একটি সুরা আছে, সুরা সাবা। রানি বিলকিস ছিলেন সাবা সম্রাজ্যের সাম্রাজ্ঞী। তারা ছিল বণিক জাতি। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ১১০০ সাল থেকে ৩০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ-অঞ্চলে তাদের বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের শহরের অবস্থান ছিল দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী উপত্যকায়। নদী-নালা, খাল-বিল কিছুই ছিল না। বাগান ও কৃষিজমিগুলো বড় আকালে পড়ে যেত সময়ে অসময়ে। বৃষ্টির পানি কিংবা পাহাড়ি ঝর্নার ওপর ভরসা করতে হতো। কিন্তু অনেক পানি মরুভূমিতে মিশে গিয়ে নষ্ট হয়ে যেত। কখনো উভয় পাহাড় থেকে বৃষ্টির পানি বন্যার মতো নেমে শহর ভাসিয়ে দিত। দেশের সম্রাটরা উত্তরণের পথ খুঁজতে লাগলেন। আল্লাহ তাদের সহায় হলেন। ইয়েমেনের আশপাশের শহর ও বসতিগুলোতে নির্মাণ তারা করলেন একশোটির বেশি বাঁধ। মাআরিব শহরের দক্ষিণ...