ইসলামি দলগুলোর একটি ভোটের বাক্সের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি: চরমোনাই পীর
Published: 29th, July 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘ইসলামি দলগুলোর যেন একটি ভোটের বাক্স হয়, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সেই কাজ অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে, ইনশা আল্লাহ।’
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এসব কথা বলেন।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৮৭ সালে দলটি প্রতিষ্ঠার পর হাতপাখা প্রতীকের কোনো প্রার্থী সংসদ সদস্য হতে পারেননি। কারণ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কারও স্বার্থে কখনো ব্যবহার হয়নি। তিনি বলেন, দুনিয়াতে শান্তি ও আখিরাতে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে ইসলাম। তাই আগামীতে ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অনর্থক হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সংস্কার কমিশনকে তিনি পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি জানান।
জেলা শাখার সভাপতি এইচ এম মোমতাজুল করীমের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আওয়াল, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মুফতি মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির আবু বকর মো.
সমাবেশে পার্শ্ববর্তী জেলা ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ ঘিরে দুপুর থেকেই শহরে নিরাপত্তা জোরদার করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে বেলা তিনটা থেকে লাগাতার বৃষ্টির কারণে সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হতে অনেক দেরি হয়ে যায়। কর্মী-সমর্থকেরা বৃষ্টিতে ভিজেই নেতাদের বক্তব্য শোনেন।
অনুষ্ঠান শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ঝিনাইদহ-৩ ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর) আসনে প্রার্থী মাওলানা সরোয়ার হোসেন এবং ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের আংশিক) আসনে মুফতি আবদুল জলিলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ ল কর ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার জুরাইন রেলগেট–সংলগ্ন বিক্রমপুর প্লাজা চত্বরে এক গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির এ কথা বলেন।
পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কদমতলী-শ্যামপুর থানা।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘নতুনভাবে আবার এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আপনি কী মেসেজ দিতে চান? আবার সেই স্বৈরাচার আসবে? আবার সেই চাঁদাবাজ আসবে? আবার সেই মায়ের কোলগুলো খালি হবে? দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে? আয়নাঘর তৈরি হবে? পিলখানা হত্যা হবে?’ তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মানুষ আমরা আর দেখতে চাই না। পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে।’
বিভিন্ন মৌলিক সংস্কারে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার (দ্বিমত পোষণ করার) বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, সরকার গঠনের পরে দুই বছরের ভেতরে সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে। অন্ধকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ নেই। হাইকোর্ট এখন সবাই চেনে।
একটি রাজনৈতিক দল জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা এখনো বুঝতে পারেনি উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলটির কলঙ্ক রচিত হয়েছে। সামনে নির্বাচনেও বাংলাদেশের মানুষ একই কলঙ্ক রচনা করবে। বাংলাদেশের ভেতরে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করে দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারছে না।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সবাই বলেছে, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একটি বড় দল বলেছে সংবিধানের সংশোধন, আইনি ভিত্তি দেওয়ার এই কাজগুলো এখন হবে না। নির্বাচনের পরে যে সংসদ আসবে, তারাই এসে নাকি সেই কাজগুলো করবে। তাহলে কেন জুলাই সনদের জন্য দুই মাস সময় নষ্ট করা হলো? এর পেছনে নিশ্চয়ই অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ দুটিতেই পিআর মানতে হবে, তা না হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। সঞ্চালনা করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।