১. ‘একমুখী’ বন্ধু

তাঁরা মূলত দুই ধরনের। এক. আপনার সুসময়ে পাশে থাকেন। দুই. নিজের দুঃসময়ে আপনাকে ‘স্মরণ করেন’। তাঁরা আপনাকে আবেগময় সমর্থনের জন্য কিংবা বন্ধু-ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেন। আপনার মাধ্যমে নানাভাবে উপকৃত হন। কিন্তু আপনার দুঃসময়ে তাঁরা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যান।

২. ফ্রেনিমি

বন্ধুরূপী শত্রুদের এককথায় বলা হয় ‘ফ্রেনিমি’—ফ্রেন্ড + এনিমি। বলা হয়, তাঁদের মতো বন্ধু থাকলে আলাদা করে শত্রুর প্রয়োজন নেই। তাঁরা আপনাকে তাঁদের কথা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ছোট/হীন/নীচু বোধ করাবেন। তাঁদের আশপাশে থাকলে আপনি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন বা আত্মবিশ্বাস জন্মাবেই না। তাঁরা ম্যানিপুলেটিভ অর্থাৎ তাঁদের সুবিধার্থে আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে আপনার মধ্যে একধরনের হীনম্মন্যতা ও অপরাধবোধ কাজ করবে। তাঁরা আপনার ইতিবাচক এনার্জি শোষণ করে নেন। আড়ালে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। এককথায় তাঁরা আপনার ভালো চান না।

৩.

নীরব তুলনা ও প্রতিযোগিতা

কিছু ‘বন্ধু’ আছেন, যাঁরা প্রতিনিয়ত আপনার পোশাক, জীবনযাপন, সম্পদ, সঙ্গী, অর্জন—সবকিছুর সঙ্গে নিজের তুলনা করতে থাকেন ও মনে মনে আপনার সঙ্গে এসব নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামেন। আর অবশ্যই সেই নীরব প্রতিযোগিতায় জিততে চান। তাঁদের কথা ও কাজে তা প্রকাশও হয়!

আরও পড়ুনবন্ধু কি আপনাকে ঈর্ষা করেন? যেভাবে বুঝবেন১৬ এপ্রিল ২০২৫৪. ক্ষতিকর আত্মপ্রেমী

তাঁরা নিজেকে নিয়ে ‘অবসেসড’ বা ‘টক্সিক নার্সিসিস্ট’। আপনার এসব ‘বন্ধু’র কথাবার্তা শুনলে মনে হবে পৃথিবীতে যা কিছু ঘটছে, সব তাঁকে ঘিরেই ঘটছে। তিনিই সেরা। তিনিই যোগ্য। তাঁরই ‘কপালটা খারাপ’। তিনি আপনাকে কেবল একটা ‘কান’ হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি এতটাই আত্মপ্রেমী যে নিজের ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে ভাবার তাঁর সময় নেই। আপনার কথা শোনার মতো ধৈর্য বা ইচ্ছা কোনোটাই নেই তাঁর।

আরও পড়ুনচিলমারী থেকে নৌকায় যেভাবে কক্সবাজার গেলেন দুই বন্ধু২৫ নভেম্বর ২০২৩৫. ঈর্ষান্বিত ‘বন্ধু’

বন্ধু তিনিই, যিনি আপনার সাফল্যকে ব্যক্তিগত সাফল্য হিসেবে উদ্‌যাপন করবেন। যাঁর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করলে আনন্দ বেড়ে যায়। তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুঃখ ভাগ করলে দুঃখ কমে যায়। হালকা হওয়া যায়। ঈর্ষান্বিত বন্ধুদের কীভাবে চিনবেন? তাঁরা আপনার খুঁত বের করতে ওস্তাদ। আপনি যতই ভালো পোশাক পরুন না কেন, ভালো কাজ করুন না কেন, তাঁরা একটা না একটা ভুল বের করবেনই। এটাই তাঁদের ‘ডিফেন্স মেকানিজম’। আপনার ভুল বের করে, দুর্বল দিক দেখিয়ে দিয়ে তাঁরা নিজেদের সান্ত্বনা দেন, মনে মনে তৃপ্ত হতে চান।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনআপনার বন্ধু মোটে এক বা দুজন? জেনে নিন আপনি মানুষ হিসেবে কেমন২১ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র স আপন ক

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ