জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় জুলাই ‘বিপ্লবীদের’ প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘৫ আগস্টের পরিবর্তন বা বিপ্লব না হলে হয়তোবা আজকেও আমরা আমাদের এ অধিকার ফেরত পেতাম না। এ জন্য আমি বিশেষভাবে জুলাই ও আগস্টের বিপ্লবীদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জামায়াতের আমির। এতে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মী ছাড়াও কয়েকজন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকারের ইঙ্গিতে একটি বিশেষ মহল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করার জন্য অন্যায্যভাবে-বেআইনিভাবে আদালতে যায়। আদালতও এখতিয়ার–বহির্ভূতভাবে এ মামলাকে আমলে নিয়ে একটা মিস কেস অব জাস্টিস উপহার দিয়েছেন। ন্যায়ভ্রষ্ট রায় উপহার দিয়েছেন।’

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রায়ের ভিত্তিতে আমাদের নিবন্ধনটি বাতিলের পর্যায়ে চলে যায়। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করি। সেই আপিল অনেক চড়াই-উতরাই, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জুন ২০২৫ সালে আপিল সেটেল হয় এবং আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ২০১৩ সালে এ রায় প্রকাশ হওয়ার আগে জামায়াতে ইসলামীর যে অবস্থা ছিল তার নিবন্ধন তার প্রতীক। সেই বিষয় সমাধান করার জন্য দ্রুত সমাধান করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে তারা নির্দেশ প্রদান করেন।’

দেশের মানুষ জীবনবাজি রেখে একটা পরিবর্তনের জন্য জুলাই–আগস্টে লড়াই করেছিলেন উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘তারা শুধু ফ্যাসিজমকে বিদায় করার জন্য লড়াই করেনি; বরং ফ্যাসিবাদমুক্ত একটা দেশ গোড়ার জন্য লড়াই করেছিল। আনফরচুনেটলি (দুঃখজনকভাবে) ফ্যাসিবাদীরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিজম বাংলাদেশ থেকে এখনো বিদায় নেয়নি। তার কালো ছায়া ও ভূত এখনো জাতির ঘাড়ে রয়ে গিয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের, যার মধ্য দিয়ে একটি ন্যায্য সরকার গঠিত হবে। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’

দীর্ঘ বক্তব্যে শফিকুর রহমান জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, দলীয় প্রতীক এবং দেশের বিচারব্যবস্থা, প্রবাসীদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ও তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ