গুগল অ্যাকাউন্ট এখন কেবল একটি ই–মেইল ঠিকানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। অনলাইনে ফাইল সংরক্ষণ, ম্যাপ ব্যবহার বা ছবি রাখার মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজে গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হয়। ফলে গুগল অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, যোগাযোগ, আর্থিক লেনদেন—সবই ঝুঁকির মুখে পড়ে। তবে কিছু নিরাপত্তাব্যবস্থা মেনে চললে এ ধরনের ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। গুগল অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে যে ছয় বিষয় মেনে চলতে হবে, সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

১.

শক্তিশালী ও আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার

গুগল অ্যাকাউন্টের সুরক্ষায় সবার আগে কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। তাই নাম, জন্মতারিখ বা সহজ শব্দের বদলে ছোট–বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন মিলিয়ে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাই নিরাপদ। তবে একাধিক জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখা কঠিন হলে কোনো নির্ভরযোগ্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

২. দুই স্তরের যাচাইকরণ সুবিধা চালু

শুধু শক্তিশালী পাসওয়ার্ড অ্যাকাউন্টের সুরক্ষায় যথেষ্ট নয়। এ জন্য বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা হিসেবে গুগল অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বা দুই স্তরের যাচাইকরণ সুবিধা চালু করতে হবে। এ সুবিধা চালু থাকলে নতুন কোনো যন্ত্র থেকে গুগল অ্যাকাউন্টে প্রবেশের সময় পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়। ফলে গুগল অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকে।

৩. অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র থেকে সাইন আউট

অনেকেই পুরোনো ফোন, ট্যাবলেট বা অন্য কারও কম্পিউটার থেকে গুগল অ্যাকাউন্টে লগইন করেন, কিন্তু কাজ শেষে সাইন আউট করেন না। এতে নিজের অজান্তেই অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মাসে অন্তত একবার লগইন করা যন্ত্রগুলো যাচাই করে অপ্রয়োজনীয় বা অচেনা যন্ত্র থেকে গুগল অ্যাকাউন্ট সাইন আউট করতে হবে। গুগল অ্যাকাউন্টে লগইন করা প্রতিটি যন্ত্রের তালিকা গুগল নিজেই সংরক্ষণ করে। তাই ‘ইউর ডিভাইসেস’ অপশন থেকে অ্যাকাউন্টে লগইন করে অচেনা যন্ত্র থেকে গুগল অ্যাকাউন্ট সাইন আউট করতে হবে।

৪. অ্যাপের অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বাতিল

অনেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপে ‘সাইন ইন উইথ গুগল’ অপশন ব্যবহার করেন। কিন্তু কিছুদিন পর এসব অ্যাপ আর ব্যবহার করা হয় না। ফলে গোপনে সেই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারে হ্যাকাররা। এ সমস্যা সমাধানে গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাইন ইন করা অ্যাপের অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বাতিল করতে হবে।

৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভিপিএন ব্যবহার

পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএনের সাহায্যে তথ্য নিরাপদ রাখা সম্ভব। কারণ, ভালো মানের ভিপিএনে ব্যবহারকারীদের তথ্য কোড যুক্ত বা এনক্রিপ্ট করে বিনিময় করা হয়। এ কারণে সহজে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে না হ্যাকাররা। তাই গুগল অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভিপিএন ব্যবহার করতে হবে।

৬. অচেনা লিংকে ক্লিক থেকে বিরত থাকা

ফিশিং বা প্রতারণামূলক লিংক হলো হ্যাকারদের সবচেয়ে পুরোনো কিন্তু কার্যকর অস্ত্র। তাই কোনো সন্দেহজনক ই–মেইল বা বার্তায় লিংক দেওয়া থাকলে তাতে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য ক উন ট র ব যবহ র কর ন র পদ র খ প সওয় র ড স রক ষ ভ প এন র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াটসঅ্যাপে নতুন নিরাপত্তা সুবিধা

আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন পাসকি এনক্রিপশন সুবিধা চালু করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। নতুন এই নিরাপত্তা সুবিধা চালুর ফলে ব্যবহারকারীরা পাসওয়ার্ড মনে রাখার ঝামেলা ছাড়াই আঙুলের ছাপ, মুখাবয়ব বা ফোনের স্ক্রিন লকের সাহায্যে তাদের চ্যাট ব্যাকআপ সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। ফলে আকারে বড় জটিল এনক্রিপশন কোড সংরক্ষণের প্রয়োজন হবে না।

২০২১ সালে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ব্যাকআপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা চালু করে, যা কোনো বড় মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তবে এ সুবিধা ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের হয় একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হতো, নয়তো ৬৪ অঙ্কের ‘এনক্রিপশন কী’ সংরক্ষণ করতে হতো। এর ফলে স্মার্টফোন হারালে বা নতুন স্মার্টফোনে পুরোনো তথ্য স্থানান্তর করতে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতেন ব্যবহারকারীরা। নতুন পাসকি ব্যবস্থায় সেই জটিলতা দূর করা হয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপের তথ্যমতে, স্মার্টফোনে আগে থেকেই থাকা বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন ব্যবস্থা যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেস আইডি বা স্ক্রিন লক ব্যবহার করে এখন ব্যাকআপ এনক্রিপশন সক্রিয় করা যাবে। সেটিংস থেকে নতুন সুবিধাটি চালুর জন্য প্রথমে চ্যাটস অপশনে গিয়ে চ্যাট ব্যাকআপে ক্লিক করতে হবে। এরপর এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড ব্যাকআপ অপশনে প্রবেশ করে এনক্রিপশন চালু করতে হবে।

পাসকি এনক্রিপশন সুবিধায় ব্যবহারকারীদের চ্যাট ব্যাকআপের কোনো তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ বা ব্যাকআপ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল ড্রাইভ বা আইক্লাউড দেখতে পারবে না। অর্থাৎ চ্যাট ইতিহাস, ছবি বা ভয়েস নোট সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুবিধাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াটসঅ্যাপে নতুন নিরাপত্তা সুবিধা