রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে তিনবার ফাইনালে তুলে শিরোপা জেতাতে পারেননি বিরাট কোহলি। ফাইনালে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। নিজেকে অপয়া ভেবে নেতৃত্বই ছেড়ে দিয়েছিলেন। কারণ জাতীয় দলেও তার নেতৃত্ব হৃদয় ভাঙছিল দলের।

অবশেষে ১৮ বছর একই ক্লাবে খেলে প্রথমবার আইপিএলের শিরোপা জিতলেন বিরাট কোহলি। শিরোপা উঠল বেঙ্গালুরুর ঘরে। এই শিরোপা কোহলির কাছে বিশ্বকাপের চেয়ে কোন অংশে কম নই। তিনি ধরেই নিয়েছিলেন আইপিএল শিরোপা জেতা হবে না। ওই শিরোপা জিতে এবার শিশুর মতো চাপহীন, নির্বিকার একটা ঘুম দিতে চান কিংবদন্তি ক্রিকেটার কোহলি।

এই ক্লাবে তারুণ্য, দম্ভ ও অভিজ্ঞতা দিয়েছি: এই শিরোপা যতটা দলের ঠিক ততটাই ভক্তদের। ১৮ বছরের একটা দীর্ঘ যাত্রার ফল। এই দলকে আমি আমার যৌবন, দম্ভ ও অভিজ্ঞতা দিয়েছি। প্রতি বছর আমি এটা জিততে চেয়েছি। নিজের যা কিছু ছিল উজাড় করে দিয়েছি। অবশেষে এই মুহূর্ত আলিঙ্গন করতে পারা অবিশ্বাস্য অনুভূতি। আমি ভাবিনি, এইদিনটা আসবে। শেষ বল হওয়ার আগ পর্যন্ত মোহবদ্ধ ছিলাম। এটার মূল্য আমার কাছে কম নয়। আমি আমার শক্তির শেষ বিন্দু পর্যন্ত উৎসর্গ করেছি এই দলের জন্য। এটা অসাধারণ অনুভূতি।

এবি ডি ভিলিয়ার্সের উপস্থিতি: তিনি এই ক্লাবের জন্য যা করেছেন তা অসাধারণ। ম্যাচের আগে আমি ওকে তা বলেওছিলাম, ‘এই শিরোপা জিতলে তা যতটা আমাদের হবে ততটাই তোমার। এবং আমরা চাই এই শিরোপা আমরা জিতলে উদযাপনে তুমিও থাকবে।’ কারণ আরসিবিতে তার অবদান খুবই বিশেষ। সে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ জেতা ক্রিকেটার। এই ক্লাব, ভক্তদের কাছে তিনি যে কী তা ভাষার প্রকাশ করতে পারবো না। সুতরাং চ্যাম্পিয়নের পোডিয়ামে থাকাটা তার প্রাপ্য।

এই শিরোপার গুরুত্ব: গত ১৮ বছর এই ক্লাবে সবই দিয়েছি। আমি ক্লাবের প্রতি আনুগত্য থাকতে চেয়েছি, যাই ঘটুক। আমি তাদের পাশে ছিলাম, তারা আমার পাশে ছিলেন। সব সময় এই শিরোপা জিততে চেয়েছি। কারণ আমার মনে, প্রাণে বেঙ্গালুরু। আমি শেষ পর্যন্ত এই ক্লাবে খেলতে চাই। ক্রীড়াবিদ হিসেবে যখন আপনি কোন শিরোপার জন্য কাঁদবেন এর অর্থ ওটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই টুর্নামেন্টের মর্যাদা, গুরুত্বও বোঝা যায় এতে। আমি বড় টুর্নামেন্ট জিততেও চাই। এটাই কেবল মিসিং ছিল। আমি এবার শিশুর মতো একটা ঘুম দেব।

এতো বছর উৎসাহ ধরে রাখার উপায়: আমি এখনো মনে করি, অনেক বছর খেলে ফেলিনি। জুতো জোড়া একদিন তুলে রেখে নিজেই বলতে চাই, আমার এবার শেষ হলো। আমি ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে খেলতে চাই না। কারণ ২০ ওভারের টুর্নামেন্টে মাঠে থেকে ইমপ্যাক্ট রাখার সামর্থ্য আমার আছে। খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে আমি এভাবেই দেখি। এই জয়টা আমার একার নয়, এটা বেঙ্গালুরুর। খেলোয়াড়, স্টাফ, ফ্রাঞ্জাইজি, তাদের পরিবার সকলের। এটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি। আমি তরুণদের টেস্টে মনোযোগ দিতে বলবো। আমি মনে করি, টেস্টে ভালো করলে সব জায়গায় ভালো করা সম্ভব। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল আরস ব এই ক ল ব এই শ র প

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ