৫৫ মাস! প্রায় পাঁচ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর আবার প্রাণ ফিরল ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে। ফিরল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এই ফিরে আসা শুধু মাঠে নামা নয়। এ যেন ইতিহাসের পাতায় এক নতুন সূচনা।

আর নতুন সূচনায় আজ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অভিষেক হচ্ছে ফাহামিদুল ইসলামের। ইতালি প্রবাসী এই ফুটবলারকে ভুটানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের একাদশে রেখেছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। একাদশে আছেন হামজা চৌধুরীও।

দীর্ঘ সংস্কারের পর নতুন সাজে সেজেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। নতুন ঘাস, নতুন আসন, উজ্জ্বল ফ্লাডলাইটের আলোয় যেন জেগে উঠেছে এক স্বপ্নের মঞ্চ। নতুন দিনে, নতুন প্রত্যয়ের গল্প শুরু হলো আজ ভুটানের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ দিয়ে। সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু। আর এই মাঠেই ১০ জুন হবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের লড়াই।

মাঠের বাইরে কিছুটা হলেও লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। গেটের সামনে লাইন, চোখে মুখে উৎসুক আলো। অনেকেই এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। কেউ কলেজ শেষ করেই ছুটে এসেছেন। নারায়ণগঞ্জের তরুণ সামিউল আবেগাপ্লুত গলায় বললেন, হামজার খেলা দেখতে এসেছি ভাই! ফাহামিদুলের দিকেও চোখ থাকবে। আশা করি আজ ২-৩ গোলে জিতব!

মিরপুরের শাখাওয়াত আলীর কণ্ঠে সেই পুরোনো দিনের উত্তেজনা, এই দিনটার জন্যই তো অপেক্ষা করছিলাম। মনে হচ্ছে, ফুটবল আবার বাঁচছে!

প্রেসবক্সে ফিরেছেন সাংবাদিকেরা। দীর্ঘদিন পর নিজের জায়গায় ফিরে যেন স্বস্তির নিশ্বাস। আগের ধূসর ও জরাজীর্ণ পরিবেশ এখন অতীত। আধুনিক চেয়ার, ঝকঝকে ডেস্ক, আলো-বাতাসে ভরপুর এক নতুন কর্মপরিবেশ। তবে লম্বা প্রেসবক্সের সামনে কয়েকটি স্তম্ভ থাকায় কিছু অংশে দৃষ্টির বাধা—একটু ঘাড় ঘোরাতে হয়। কিন্তু এই সামান্য অসুবিধা তুচ্ছ, কারণ পুরো স্টেডিয়ামটাই যেন এক স্বপ্নের রূপ নিয়েছে।

লাল-সবুজের পাশে ধূসর রঙের নতুন চেয়ার। এই প্রথম কোনো ফুটবল স্টেডিয়ামে গ্যালারির ওপর ছাদ। ঝলমলে এলইডি ফ্লাডলাইট, আধুনিক ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড, মাঠের পাশে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য ডিসপ্লে। তাজা ঘাসের মাঠ। সব মিলিয়ে যেন বাংলাদেশ ফুটবলের ঘরে ফেরার এক মহাকাব্যিক আয়োজন।

ম্যাচের আগেই স্লোগানে ফেটে পড়ল গ্যালারি। হামজা চৌধুরী যখন ওয়ার্মআপে মাঠে নামলেন, তখনই গর্জে উঠল দর্শক: ‘হামজা! হামজা! কেউ নিয়ে এসেছে প্ল্যাকার্ড: ‘আমরা বিশ্বাস করি তুমি জিতবে।’
ফুটবলের এই ফিরে আসা শুধু এক সন্ধ্যার ম্যাচ নয়, এ যেন এক নবজাগরণের ধ্বনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

আরো পড়ুন:

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।

বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।

বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।

৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ