আর্জেন্টিনা এখন লিওনেল মেসির অনুপস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখে গেছে বলে জানিয়েছেন দলটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। আগে মেসি না থাকলে দলের লাইনআপে পরিবর্তন আনতে হতো, এখন সেটির দরকার হয় না বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময় আগামীকাল বুধবার সকালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মেসির একাদশে থাকাবিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্কালোনি।

মেসি গত মার্চে চোটের কারণে আর্জেন্টিনার দুটি ম্যাচ মিস করেন। ওই দুই ম্যাচের মধ্যে উরুগুয়েকে ১-০ এবং ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলাও নিশ্চিত হয় তখনই। চলতি মাসে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দলে ফিরেছেন মেসি। গত সপ্তাহে চিলির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ১-০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে খেলেন বদলি হিসেবে।

মেসিনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসেছে আর্জেন্টিনা।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

আকস্মিক বন্যা, পানির নিচে চলনবিলের ১১৩ হেক্টর জমির ধান  

আকস্মিক বন্যায় সিরাজগঞ্জের চলনবিলাঞ্চলের কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বন্যায় নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় শত শত হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান তলিয়ে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

বুধবার (১১ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, উজানের ঢল ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ ও শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার শত শত বিঘা ফসলি জমি এখন পানি নিচে। কৃষকের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের অপেক্ষার ফসল তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অসময়ে এমন জলাবদ্ধতায় ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা যেমন রয়েছে, তেমন ধান কাটতে শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়ছে।

তাড়াশের মাগুড়াবিনোদ গ্রামের কৃষক সেলিম শেখ বলেন, “১০ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। ঈদের পরেই সে ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জমির পুরো ধান পানিতে ডুবে গেছে। যদিও কোমর সমান পানিতে উচ্চ মূল্যের পারিশ্রমিক দিয়ে কৃষি শ্রমিকরা কিছু ধান কাটতে পারলেও অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে পরিবারের বার্ষিক খোরাকির ধানও জুটবে না।”

ঘরগ্রাম এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক আলতাব শেখ বলেন, “তাড়াশ উপজেলার সগুনা, মাগুড়াবিনোদ ও নওগাঁ ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামের পাকা বোরো ধানের জমিতে এখন হাঁটু বা কোমর সমান পানি আছে। চলনবিলের আটটি উপজেলার একইরকম অবস্থা। বন্যায় সব ধান পানিতে ডুবে গেছে। আকস্মিক বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।”

উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া গ্রামের কৃষক আজগর আলী বলেন, “সরিষা আবাদ করার পর ব্রি-২৯ জাতের ধান লাগাই। এ কারণে ধান পাকতে সময় লাগে। কিন্তু আগাম বন্যার কারণে ফসলি জমি ডুবে যাচ্ছে। ১০ বিঘার মধ্যে ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকি জমির ধান এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। ফলন ভালো হলেও এবার লোকসান গুনতে হবে।”
 
শাহজাদপুরের পোতাজিয়া গ্রামের কৃষক আশরাফ বলেন, “ঋণ করে চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফসল কাটার আগেই সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন তা কাটতেও পারছি না। আমার সব শেষ হয়ে গেল। পরিবার নিয়ে সারা বছর কীভাবে চলবো? সেটাই এখন ভাবছি।”

চাটমোহরের নিমাইচড়া গ্রামের আয়নাল মন্ডতল বলেন, “চলনবিলের আট উপজেলার কৃষকরা ফাল্গুন মাসে রবিশস্য তুলে বোরো ধান রোপণ করেন। এগুলো সাধারণত ১১০-১২০ দিনে ঘরে তোলা যায়। ধান পাকতে দেরি হওয়ায় এ বছর জ্যেষ্ঠ মাসেই আকস্মিক বন্যা চলে এসেছে। এখন সেই ধান আর ঘরে তুলতে পারছি না।”

নাটোরের বিলসা গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন বলেন, “পানিতে ধানের শীষ জেগে আছে, এমন জমির ধান কাটতে বর্তমানে বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এরমধ্যে হারভেস্টরে বিঘাপ্রতি সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। দিন হাজিরায় শ্রমিক প্রতি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। পাশাপাশি চলমান এই দুর্যোগের মুহূর্তে যে পরিমাণ কৃষি শ্রমিক বা হারভেস্টর প্রয়োজন সেটাও মিলছে না।”

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই। ইতিমধ্যেই চলনবিল অঞ্চলে ৯৩ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া ও হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় বিলের নিম্নাঞ্চলের নাবি জাতের ধান কাটা নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান কাটা শেষ হবে।”

তিনি আরো বলেন, “চলনবিলের তাড়াশ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় ১১৩ হেক্টর ফসল পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর এলাকাতেও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।”

ঢাকা/অদিত্য/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ