১/১১ আর বলেকয়ে করা লাগবে না, অটোমেটিক্যালি হয়ে যাবে: রাশেদ খান
Published: 11th, June 2025 GMT
‘১/১১ আর বলেকয়ে করা লাগবে না, অটোমেটিক্যালি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে) হয়ে যাবে’—এমন মন্তব্য করে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, কোনোভাবেই রমজানের পর নির্বাচন হতে পারে না। অবশ্যই রমজানের আগেই নির্বাচন হতে হবে। রমজানের আগে প্রার্থীরা কোনোভাবেই প্রচারণা করতে পারবেন না।
আজ বুধবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের একটি রেস্তোরাঁয় তিনি এ মন্তব্য করেন। নির্বাচনী ভাবনা নিয়ে সেখানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি।
সরকারের উদ্দেশে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা আমাদের তিন মাস সময় দেবেন। এক মাস তো এই রমজানে চলে যাবে। ঈদের জন্য যাবে আরও ১৫ দিন। এর মধ্যে পরীক্ষা থাকে। সব মিলিয়ে কি প্রার্থীরা প্রচারণা করবে না? আমার মনে হয়, যেহেতু নির্বাচন সংস্কার কমিশন ৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতির কথা বলেছে এবং এর চেয়ে কম ভোট পড়লে পুনরায় ভোট হবে। কিন্তু গরমের মধ্যে অধিকাংশ আসনেই ৪০ শতাংশ ভোট পড়বে না। এ ক্ষেত্রে তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আবার থেকে যাবে। এভাবে ১/১১ আর বলেকয়ে করা লাগবে না, অটোমেটিক্যালি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে) হয়ে যাবে। সেই ধরনের ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত রয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
রাশেদ খান আরও বলেন, ‘সরকারকে বলব, জনগণ এ ধরনের সন্দেহ করছে। কয়েকজন উপদেষ্টা হয়তো চক্রান্তের মধ্যে রয়েছেন, যাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের জগাখিচুড়ি মার্কা সিদ্ধান্ত জাতির সামনে হাজির করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ সভাপতি আবদুল আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রিহান হোসেন, যুব অধিকার পরিষদ নেতা রকিবুল হাসান, পৌর গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সদর উপজেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি হালিম পারভেজ প্রমুখ।
গণ অধিকার পরিষদ নেতা রাশেদ খান আরও বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এসব নির্বাচনে ডামি এমপিদের অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। উপদেষ্টারা অনেক কষ্ট করেছেন, কিন্তু যাঁদের প্রাণের বিনিময়ে চেয়ারে বসেছেন, সেসব শহীদের তালিকা করতে পারেননি। অভ্যুত্থানে নিহত পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারেননি। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আহমেদাবাদে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ভারতের আহমেদাবাদে ২৪২ জন আরোহী নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এটিকে এক দশকের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুযায়ী, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমান পরিবহন খাতে জনপ্রিয় মডেলের এই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এভিয়েশন খাতের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, দুর্ঘটনার ভিডিওতে উড্ডয়নকালে (টেক–অফের সময়) উড়োজাহাজের ডানার পেছনের দিকের ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে নেওয়া অবস্থায় দেখা গেছে। এটা এ দুর্ঘটনার একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। ফ্ল্যাপ হলো উড়োজাহাজের ডানার পেছনের বর্ধিতাংশ। উড়োজাহাজ উড্ডয়নকালে ও অবতরণের সময় ফ্ল্যাপগুলো খুলে দেওয়া হয়।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জিওফ্রে টমাস বিবিসিকে বলেন, আমি যখন এটা দেখছিলাম, তখনো উড়োজাহাজের নিচের চাকা খোলা ছিল আর ফ্ল্যাপগুলো গুটানো ছিল। এর অর্থ ফ্ল্যাপগুলো ডানার সঙ্গে একই রেখায় অবস্থান করছিল, যেটা উড়োজাহাজ উড্ডয়নের পর এত দ্রুত এমন করাটা খুবই অস্বাভাবিক।সাধারণত উড্ডয়নের ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে নিচের চাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে নেওয়া হয়।
আরেকজন বিশেষজ্ঞ টেরি টোজার বিবিসিকে বলেন, ভিডিও দেখে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা কঠিন। তবে মনে হচ্ছে না ফ্ল্যাপগুলো বাইরে বেরোনো অবস্থায় ছিল এবং সেটা হলে তা একটি উড়োজাহাজ সঠিকভাবে উড্ডয়ন সম্পন্ন না করার ব্যাখ্যা হতে পারে।
সাবেক পাইলট ও বাকিংহামশায়ার নিউ ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মার্কো চ্যান বিবিসিকে বলেন, যদি ফ্ল্যাপগুলো সঠিকভাবে না রাখা হয়, তাহলে সেটা সম্ভাব্য মানুষের ভুলের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে। কিন্তু ভিডিওর রেজ্যুলেশন এতটাই কম যে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
কাতার এয়ারওয়েজের সাবেক পাইলট ক্যাপ্টেন মো. ইউনূস জানান, যখনই ফ্ল্যাপগুলো উন্মুক্ত করা হয়, সেই সঙ্গে ডানার সামনের দিকের বর্ধিতাংশ, যা স্ল্যাট নামে পরিচিত, সেগুলো খুলে যায়। ফলে উড়োজাহাজের ডানার পরিসর বেড়ে যায়। এতে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিতে উড়োজাহাজ ওপরের দিকে উঠতে পারে। সাধারণত উড়োজাহাজ এক হাজার ফুট ওপরে ওঠার পর ফ্ল্যাপগুলো বন্ধ করা হয়। অপর দিকে টেক–অফের পর উড়োজাহাজ ৫০ ফুট ওপরে উঠলেই ল্যান্ডিং গিয়ার বা নিচের চাকা (আন্ডারক্যারিজ) গুটিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার আগে ফুল লোড ছিল। অর্থাৎ ২৪২ জন আরোহী, তাঁদের মালামাল ছাড়াও অন্তত ৬০ টন জ্বালানি তেল ছিল। এ রকম অবস্থায় উড়োজাহাজটি টেক–অফের সময় ডানার ফ্ল্যাপগুলো বন্ধ থাকলে প্লেনটি উড়ে বেশি দূর যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
তিনি বলেন, তাঁরা খোঁজখবর করে যতটুকু জানতে পেরেছেন, ওই ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন একজন অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন, যিনি ইনস্ট্রাক্টর। তবে কো–পাইলট অনেকটাই নবিশ বৈমানিক ছিলেন। তাই এ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কতটা ‘হিউম্যান এরর’ (মানুষের ত্রুটি) আর কতটা যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তা পরবর্তী সময়ে তদন্ত সাপেক্ষে স্পষ্ট হওয়া যাবে।
বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি নিচের দিকে নামছিল এবং একটি ভবনের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।