প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানিতে বাংলাদেশের একক নির্ভরতা রয়েছে চীনের ওপর। তাই এ ধরনের চামড়া বিক্রিতে খুব বেশি প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই। অনেকটা বাধ্য হয়েই চীনের কাছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বাংলাদেশকে চামড়া রপ্তানি করতে হয়। নতুন বাজার বৃদ্ধি না পাওয়ায় চামড়ার চাহিদা তেমন বাড়ছে না। এ কারণে আড়তদারদের কাছ থেকে নির্ধারিত দাম দিয়ে লবণযুক্ত চামড়া কেনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ট্যানারিমালিকেরা।

আড়তদারদের অভিযোগ, ট্যানারিমালিকদের কারণে সরকারিভাবে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ এবং বিনা মূল্যে লবণ বিতরণের মাধ্যমে বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফেরানোর উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হচ্ছে।

অন্যদিকে সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়াশিল্প নগরের ট্যানারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনা ক্রেতাদের কাছে ভালো মানের প্রতি বর্গফুট চামড়া তাঁদের বিক্রি করতে হয় ৫০ থেকে ৬০ সেন্টে। আর মাঝারি মানের হলে চামড়ার দাম ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টে নেমে আসে। অর্থাৎ দেশি মুদ্রায় প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম পড়ে ৬০–৭০ টাকা। কিন্তু সরকার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০–৬৫ টাকা, যা বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়াশিল্প নগরের মদিনা ট্যানারির স্বত্বাধিকারী রিয়াদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাঁচা চামড়া কেনার লক্ষ্য ছিল ১০ হাজার পিস। আমরা তার অর্ধেক কিনেছি। গড়ে প্রতিটি চামড়ার দাম পড়েছে ৭০০ টাকা। এখন লবণযুক্ত চামড়া কিনতে হবে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে। চীনের কাছে আমাদের ৩৫–৪০ সেন্ট দরে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি করতে হবে। দাম নির্ধারণের আগে সরকারের উচিত ব্যবসার কাঠামো ঠিক করা। এ ব্যবসাটা এখন চীনের হাতে। আমরা হয়ে গেছি তাদের কর্মচারী।’

এবার সরকার ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০-৬৫ টাকা। সাধারণত মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১ থেকে ৩০ বর্গফুট ও ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬ থেকে ২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের একটি গরুর ২৫ বর্গফুটের লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা।

কিন্তু সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে সেই দামে নাকি রপ্তানিও করা যায় না বলে দাবি ট্যানারি ব্যবসায়ীদের। তাঁদের মতে, ইউরোপের বাজার চালু করা গেলে চামড়ার দাম বেড়ে যাবে। চামড়ার সোনালি দিনের কথা স্মরণ করে এবিএস ট্যানারির হিসাব কর্মকর্তা আহমদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৫ সালের আগেও আমরা বিভিন্ন দেশে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি করতাম তিন ডলারে। এখন তা ৫০ থেকে ৭০ সেন্টে নেমে এসেছে। তখন আমরা প্রতিটি চামড়া ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েও কিনেছি। কিন্তু এবার সরকার নির্ধারিত দাম কোন দিকে যায়, এটা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাই আমরা আগ বাড়িয়ে বেশি চামড়া কিনিনি।’ এবিএস ট্যানারি মাত্র ১ হাজার ২০০টির মতো কাঁচা চামড়া কিনেছে বলে জানান আহমদুল্লাহ।

ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) পরিবেশগত সনদ না পাওয়ায় এক দশক ধরে বিশ্ববাজার থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ। একসময় ইতালি, আমেরিকা ও কোরিয়ান বায়ার তথা ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া নিলেও এখন তাঁরা চীনমুখী হয়ে গেছেন। আর চীনা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আবাসিক অফিস খুলে ট্যানারি থেকে আড়ত পর্যন্ত নিয়মিত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের একচেটিয়া কারবারে অসহায় অবস্থা এখানকার ব্যবসায়ীদের।

জানতে চাইলে চুক্তিভিক্তিক চামড়া ব্যবসায়ী শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চীনা ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দাম নির্ধারণ করে দেন। একজন আরেকজনকে বলে দেন আমি ৪০ সেন্ট বলে এসেছি, তোমরা কেউ এর বেশি বলবা না বা সেখানে যাবা না। তাঁদের অনেক এজেন্ট প্রতিষ্ঠানও এখানকার ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করছে।’

চামড়ার খরচের হিসাব দিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, লবণযুক্ত চামড়া কেনার পর তা পশমমুক্ত করে শুকিয়ে রং করা পর্যন্ত ৭০ টাকার বেশি খরচ আছে। সবকিছুর পর ৫০ সেন্ট পাওয়া যায়। ফলে শতভাগ রপ্তানি করা হলেও সরকারের নির্ধারিত দাম ঠিক রাখা সম্ভব নয়। তিনি কৃত্রিম চামড়া আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরামর্শ দেন সরকারকে। এ ছাড়া দেশি অনেক জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইউরোপ থেকেও চামড়া আমদানি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

দামের বিষয়টি আমরা দেখি না। এটা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১০ হাজার চামড়া আমাদের এখানে এসেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটা পাঁচ লাখ হয়ে যাবেমো.

মেহরাজুল মাঈয়ান, নির্বাহী প্রকৌশলী, বিসিক চামড়াশিল্প নগর, হেমায়েতপুর, সাভার

সরকার এবার চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিনা মূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করেছে। বড় বড় এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে এসব লবণ দেওয়া হয়। এদিকে অনেকে সরকারের কাছ থেকে বিনা মূল্যের লবণ নিয়ে তা বাজারে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ট্যানারিমালিকেরাও একই অভিযোগ তুলেছেন।

লবণ বিতরণের পাশাপাশি এটি ব্যবহারের বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেন ট্যানারি ব্যবসায়ী হাসান। তিনি বলেন, ব্যবহার না জানলে চামড়া পচে যাবে, যা হয়েছেও। আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে ইউরোপের বাজার ধরা যাবে না। বিসিক দিয়ে এত বড় কাজ হচ্ছে না। এটার দায়িত্ব বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) বা শিল্প মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে।

সাভারের বিসিক চামড়াশিল্প নগরে ২০৫টি বাণিজ্যিক প্লট রয়েছে। সেখানে অনুমোদিত ট্যানারির সংখ্যা ১৬২টি। বর্তমানে চালু রয়েছে ১৪২টি। আবার এর সব কটি নিজেরা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে না। চুক্তিভিত্তিক পদ্ধতিতে অনেকে ব্যবসা করছে। বাজার সংকুচিত হয়ে মুনাফা কমায় অনেকেই এ ব্যবসায় আগ্রহ হারাচ্ছে। একদিকে অনেক পুরোনো প্রতিষ্ঠান ঝিমিয়ে পড়েছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম এ ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে না।

এদিকে মৌসুমি চামড়ার ব্যবসায়ীরা এবারও কাঁচা চামড়ার প্রত্যাশিত দাম পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

জানতে চাইলে হেমায়েতপুর বিসিক চামড়াশিল্প নগরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহরাজুল মাঈয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দামের বিষয়টি আমরা দেখি না। এটা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১০ হাজার চামড়া আমাদের এখানে এসেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটা পাঁচ লাখ হয়ে যাবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ব যবস য় র র ব যবস আম দ র ইউর প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘চামড়ার ব্যবসাটা এখন চীনের হাতে, আর আমরা হয়ে গেছি তাদের কর্মচারী’

প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানিতে বাংলাদেশের একক নির্ভরতা রয়েছে চীনের ওপর। তাই এ ধরনের চামড়া বিক্রিতে খুব বেশি প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই। অনেকটা বাধ্য হয়েই চীনের কাছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বাংলাদেশকে চামড়া রপ্তানি করতে হয়। নতুন বাজার বৃদ্ধি না পাওয়ায় চামড়ার চাহিদা তেমন বাড়ছে না। এ কারণে আড়তদারদের কাছ থেকে নির্ধারিত দাম দিয়ে লবণযুক্ত চামড়া কেনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ট্যানারিমালিকেরা।

আড়তদারদের অভিযোগ, ট্যানারিমালিকদের কারণে সরকারিভাবে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ এবং বিনা মূল্যে লবণ বিতরণের মাধ্যমে বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফেরানোর উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হচ্ছে।

অন্যদিকে সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়াশিল্প নগরের ট্যানারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনা ক্রেতাদের কাছে ভালো মানের প্রতি বর্গফুট চামড়া তাঁদের বিক্রি করতে হয় ৫০ থেকে ৬০ সেন্টে। আর মাঝারি মানের হলে চামড়ার দাম ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টে নেমে আসে। অর্থাৎ দেশি মুদ্রায় প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম পড়ে ৬০–৭০ টাকা। কিন্তু সরকার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০–৬৫ টাকা, যা বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়াশিল্প নগরের মদিনা ট্যানারির স্বত্বাধিকারী রিয়াদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাঁচা চামড়া কেনার লক্ষ্য ছিল ১০ হাজার পিস। আমরা তার অর্ধেক কিনেছি। গড়ে প্রতিটি চামড়ার দাম পড়েছে ৭০০ টাকা। এখন লবণযুক্ত চামড়া কিনতে হবে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে। চীনের কাছে আমাদের ৩৫–৪০ সেন্ট দরে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি করতে হবে। দাম নির্ধারণের আগে সরকারের উচিত ব্যবসার কাঠামো ঠিক করা। এ ব্যবসাটা এখন চীনের হাতে। আমরা হয়ে গেছি তাদের কর্মচারী।’

এবার সরকার ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০-৬৫ টাকা। সাধারণত মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১ থেকে ৩০ বর্গফুট ও ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬ থেকে ২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের একটি গরুর ২৫ বর্গফুটের লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা।

কিন্তু সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে সেই দামে নাকি রপ্তানিও করা যায় না বলে দাবি ট্যানারি ব্যবসায়ীদের। তাঁদের মতে, ইউরোপের বাজার চালু করা গেলে চামড়ার দাম বেড়ে যাবে। চামড়ার সোনালি দিনের কথা স্মরণ করে এবিএস ট্যানারির হিসাব কর্মকর্তা আহমদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৫ সালের আগেও আমরা বিভিন্ন দেশে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি করতাম তিন ডলারে। এখন তা ৫০ থেকে ৭০ সেন্টে নেমে এসেছে। তখন আমরা প্রতিটি চামড়া ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েও কিনেছি। কিন্তু এবার সরকার নির্ধারিত দাম কোন দিকে যায়, এটা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তাই আমরা আগ বাড়িয়ে বেশি চামড়া কিনিনি।’ এবিএস ট্যানারি মাত্র ১ হাজার ২০০টির মতো কাঁচা চামড়া কিনেছে বলে জানান আহমদুল্লাহ।

ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) পরিবেশগত সনদ না পাওয়ায় এক দশক ধরে বিশ্ববাজার থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ। একসময় ইতালি, আমেরিকা ও কোরিয়ান বায়ার তথা ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া নিলেও এখন তাঁরা চীনমুখী হয়ে গেছেন। আর চীনা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আবাসিক অফিস খুলে ট্যানারি থেকে আড়ত পর্যন্ত নিয়মিত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের একচেটিয়া কারবারে অসহায় অবস্থা এখানকার ব্যবসায়ীদের।

জানতে চাইলে চুক্তিভিক্তিক চামড়া ব্যবসায়ী শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চীনা ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দাম নির্ধারণ করে দেন। একজন আরেকজনকে বলে দেন আমি ৪০ সেন্ট বলে এসেছি, তোমরা কেউ এর বেশি বলবা না বা সেখানে যাবা না। তাঁদের অনেক এজেন্ট প্রতিষ্ঠানও এখানকার ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করছে।’

চামড়ার খরচের হিসাব দিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, লবণযুক্ত চামড়া কেনার পর তা পশমমুক্ত করে শুকিয়ে রং করা পর্যন্ত ৭০ টাকার বেশি খরচ আছে। সবকিছুর পর ৫০ সেন্ট পাওয়া যায়। ফলে শতভাগ রপ্তানি করা হলেও সরকারের নির্ধারিত দাম ঠিক রাখা সম্ভব নয়। তিনি কৃত্রিম চামড়া আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরামর্শ দেন সরকারকে। এ ছাড়া দেশি অনেক জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইউরোপ থেকেও চামড়া আমদানি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

দামের বিষয়টি আমরা দেখি না। এটা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১০ হাজার চামড়া আমাদের এখানে এসেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটা পাঁচ লাখ হয়ে যাবেমো. মেহরাজুল মাঈয়ান, নির্বাহী প্রকৌশলী, বিসিক চামড়াশিল্প নগর, হেমায়েতপুর, সাভার

সরকার এবার চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিনা মূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করেছে। বড় বড় এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে এসব লবণ দেওয়া হয়। এদিকে অনেকে সরকারের কাছ থেকে বিনা মূল্যের লবণ নিয়ে তা বাজারে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ট্যানারিমালিকেরাও একই অভিযোগ তুলেছেন।

লবণ বিতরণের পাশাপাশি এটি ব্যবহারের বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেন ট্যানারি ব্যবসায়ী হাসান। তিনি বলেন, ব্যবহার না জানলে চামড়া পচে যাবে, যা হয়েছেও। আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে ইউরোপের বাজার ধরা যাবে না। বিসিক দিয়ে এত বড় কাজ হচ্ছে না। এটার দায়িত্ব বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) বা শিল্প মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে।

সাভারের বিসিক চামড়াশিল্প নগরে ২০৫টি বাণিজ্যিক প্লট রয়েছে। সেখানে অনুমোদিত ট্যানারির সংখ্যা ১৬২টি। বর্তমানে চালু রয়েছে ১৪২টি। আবার এর সব কটি নিজেরা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে না। চুক্তিভিত্তিক পদ্ধতিতে অনেকে ব্যবসা করছে। বাজার সংকুচিত হয়ে মুনাফা কমায় অনেকেই এ ব্যবসায় আগ্রহ হারাচ্ছে। একদিকে অনেক পুরোনো প্রতিষ্ঠান ঝিমিয়ে পড়েছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম এ ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে না।

এদিকে মৌসুমি চামড়ার ব্যবসায়ীরা এবারও কাঁচা চামড়ার প্রত্যাশিত দাম পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

জানতে চাইলে হেমায়েতপুর বিসিক চামড়াশিল্প নগরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহরাজুল মাঈয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দামের বিষয়টি আমরা দেখি না। এটা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১০ হাজার চামড়া আমাদের এখানে এসেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটা পাঁচ লাখ হয়ে যাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ