শিশু সন্তানকে হত্যার পর মেঝেতে পুঁতে রাখে বাবা
Published: 19th, June 2025 GMT
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় দুই বছরের শিশু আইয়ু্ব আলীকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর নিজ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা। এ ঘটনার পর বাবা নুরুল আমিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার পশ্চিম ধুরাইল এলাকায় শিশুকে হত্যা করা হয়। নিহত শিশু আইয়ুব আলী ওই এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে। নুরুল আমিন ফজলু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, অভিযুক্ত নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বুধবার (১৮ জুন) বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ করে তিনি স্ত্রী জেসমিনকে মারধর করলে তিনি পালিয়ে যান। এ সময় শিশু আইয়ুব আলী ঘরের ভিতরে ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর নুরুল আমিন ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর নুরুল আমিন আবারও ফিরে এসে ঘরে শুয়ে ছিলেন। এদিকে শিশুর দাদা বাজার থেকে এসে শিশু আইয়ুব আলীকে খুঁজতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শ্বশুরকে হত্যা: গৃহবধূর যাবজ্জীবন
ক্ষেতে গরু যাওয়ায় মাকে মারধর, ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় নুরুল আমিনের কাছে জানতে চান আইয়ুব আলী কোথায়? পরে নুরুল আমিন বলেন, ‘‘আইয়ুব ঘুমাচ্ছিল। পরে আমি শাবল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করি। এতে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে কোদাল দিয়ে ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুতে রাখি।’’ এ সময় তার দুটি ছাগল মেরে ঘরের মেঝের অন্য একটি জায়গায় পুতে রাখে নুরুল আমিন। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১১টার দিকে ঘরের মেঝে খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জানান, অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ঢাকা/মিলন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ন র ল আম ন ঘর র ম ঝ
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন
ভালোবেসে বিয়ে, পরিবারের সম্মতি না থাকায় কিছুটা গোপনে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর ময়মনসিংহ শহরে ভাড়া বাসায় সংসার পাতেন তারা। বছর যেতে না যেতে বেজে ওঠে ভাঙনের সুর। কনের দাবি, তার স্বামী আরেজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করতে চান এবং তাদের বিয়ে অস্বীকার করেন। তাই পারিবারিক স্বীকৃতির দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভুক্তভোগী তার স্বামীর বাড়িতে এসে ওঠেন।
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ছোছাউড়া গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সমাধান করতে শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উভয় পরিবার আলোচনায় বসার কথা ছিল। বিকেল পর্যন্ত আলোচনায় বসেনি।
আলাল মিয়ার ছেলে হানিফ মিয়ার সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর উপস্থিতি টের পেয়ে হানিফ মিয়া বসত ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। উপায় না পেয়ে ওই মেয়ে ঘরের বারান্দায় অনশনে বসেন স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে। ভুক্তভোগী নারী একই উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ময়মনসিংহ একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেবিকার চাকরি করেন।
আরো পড়ুন:
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
সেশনজট নিরসনের দাবিতে চবির শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন
ওই নারী জানান, কলেজ জীবনের লেখাপড়া করার সময় হানিফ মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা গোপনে বিয়ে করেন। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘারকান্দা এলাকার কাজী মো. নাদিরুজ্জামান আলম ২০২৩ সালের ২১ জুন তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করান। তারপর হানিফ মিয়ার ফুপাত বোন ময়মনসিংহে বসবাসকারী রিনা আক্তারের বাসায় তারা ভাড়ায় ওঠেন। সেখানে তাদের প্রায় এক বছর সংসার চলে। এরই মধ্যে হানিফ মিয়া তার এক নিকটাত্মীয়ের মেয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়ান। এতে তাদের সংসারে ভাঙন সৃষ্টি হয়। বিষয়টি পরিবারের লোকজনের মাঝে জানাজানি হলে তাদের আলাপ আলোচনায় সমাধান হয়নি। উল্টো ওই মেয়ের ওই সঙ্গে হানিফের পরিবারে লোকজন তাদের বিয়ের কথা পাকাপাকি করতে থাকে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘‘এই অবস্থায় আমার আর কোনো উপায় না থাকায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে শ্বশুর বাড়িতে এসেছি। এখানে তারা আমাকে গ্রহণ না করে উল্টো মারধর করেছেন। এখানে অবস্থান নেয়ার পর তারা ঘরে তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। তারপরও আমি আমার দাবি আদায় ছাড়া যাবো না।’’
ময়মনসিংহে ভাড়া বাসার মালিক হানিফের ফুফাত বোন রিনা আক্তার জানান, প্রায় দুই বছর আগে হানিফের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। এখন হানিফ তার সঙ্গে সংসার করতে চাচ্ছে না। এতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হানিফের মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
হানিফ মিয়ার বাবা আলাল মিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে হানিফের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। তার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’’
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ নূরে আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে দুই পক্ষের পরিবারের লোকজন সমাধান করতে আলোচনায় বসার কথা তিনি শুনেছেন।
ঢাকা/কামাল/বকুল