যে সিরিজে কে খেলবে, কেমন খেলবের চেয়েও বড় প্রশ্ন—ট্রফিটা কার নামে
Published: 19th, June 2025 GMT
১১ বছর পর এই প্রথম ভারতের টেস্ট দলে বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মার কেউ নেই। ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু হতে চলেছে নতুন অধিনায়ক শুবমান গিল-যুগ। ওদিকে আছে বাজবল ক্রিকেটের টিকে থাকা না–থাকা নিয়ে কৌতূহল। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ড-ভারত পাঁচ টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে আলোচনার বিষয়ের কমতি নেই।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে বারবার আলোচনায় আসছে ট্রফির নাম। আর সেই আলোচনায় কখনো সাবেক ক্রিকেটার, কখনো ধারাভাষ্যকার, কখনোবা আবার স্বয়ং নামের সঙ্গে জড়িত পক্ষই উপস্থিত। যা এখন থেকে অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি নামে পরিচিত হবে।
ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট খেলছে সেই ১৯৩২ সাল থেকে। প্রথম দিকে দুই দলের সিরিজের আলাদা কোনো নাম ছিল না। ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ড দল ভারতে খেলতে গেলে সিরিজের নাম দেওয়া হয় অ্যান্থনি ডি মেলো ট্রফি। বিসিসিআইয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ ছিল সেটি। এরপর ইংল্যান্ড দল যতবারই ভারতে গেছে, দুই দলের টেস্ট সিরিজের নাম ছিল অ্যান্থনি ডি মেলো ট্রফি।
ভারতের বোর্ড ‘হোম’ সিরিজের একটি নাম রাখলেও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এমন কোনো উদ্যোগ নেয় বেশ দেরিতে। ২০০৭ সালে রাহুল দ্রাবিড়ের দল ইংল্যান্ডে গেলে ইসিবি সিরিজের নাম করে পতৌদি ট্রফি। সেবার ট্রফি নামকরণের কারণ ছিল দুই দেশের প্রথম টেস্টের ৭৫ বছর পূর্তিকে স্মরণ। ১৯৩২ সালে প্রথমবার টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-ভারত।
আরও পড়ুনভারতের আগ্রহে রাজি নয় আইসিসি১৪ জুন ২০২৫নামকরণে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটে পতৌদিদের অবদানকে স্মরণ করা। ভারতের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া নবাব ইফতিখার আলী খান পতৌদি ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি এবং ভারতের হয়ে তিনটি টেস্ট খেলেছিলেন। তাঁর ছেলে ইংল্যান্ডে বেড়ে ওঠা নবাব মনসুর আলী খান ভারতের হয়ে খেলেছেন ৪৬ টেস্ট। বাবা-ছেলে দুজনই ছিলেন ভারতের অধিনায়ক। ‘টাইগার পতৌদি’ নামে খ্যাত মনসুর আলী খান তো নেতৃত্ব পেয়েছিলেন মাত্র ২১ বছর বয়সেই।
২০০৭ সালের পর ২০১১, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২১ সালে ইংল্যান্ডে হওয়া ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজের নাম ‘পতৌদি ট্রফি’ হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে এবার সেটি বদলে ফেলার উদ্যোগ নেয় ইসিবি ও বিসিসিআই। আগামীকাল হেডিংলি টেস্টের মাধ্যমে ২০২৫ সিরিজ শুরুর আগে আজ নতুন নামের ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। উন্মোচন করেছেন যাঁদের নামে ট্রফি, সেই শচীন টেন্ডুলকার আর জিমি অ্যান্ডারসনই। ইসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে ইংল্যান্ড-ভারত সব সিরিজই ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার’ ট্রফি নামে পরিচিত হবে।
অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফি।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ট ন ড লক র
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজ খাতে প্রতিযোগিতায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য বিলোপের তাগিদ ইইউ রাষ্ট্রদূতের
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে হঠাৎ এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিল। আর চলতি বছর পাল্টা শুল্কের দর–কষাকষির ইস্যুতে বোয়িং অন্যতম শর্ত হিসেবে সামনে এসেছে।
এমন এক প্রেক্ষাপটে ঢাকায় এক আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার উড়োজাহাজ খাতে ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন। এই খাতে ‘অন্য অংশীদারদের’ তুলনায় ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে কম গুরুত্ব দেওয়া না হয়, সে বিষয়টি বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে বলেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকায় ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন গ্রোথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ অভিমত দেন। আলোচনায় মাইকেল মিলার ছাড়াও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ এবং এয়ারবাসের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ, বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া অংশ নেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এ দেশে এয়ারবাসের উপস্থিতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিতে জোর দিচ্ছি। আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্বচ্ছতা এবং বৈষম্যহীনতার দীর্ঘদিনের আশ্বাস পূরণ করে এটিকে যেন বিমানের বহরকে আধুনিকীকরণ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দেশের উড়োজাহাজ খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিত।’
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের উড়োজাহাজ শিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই এটিকে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই খাতে বাংলাদেশের বিকাশ পর্বে এয়ারবাস হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর মতে, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগ ও ভৌগোলিক অবস্থান এই দেশকে আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিমান বাংলাদেশের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে এর স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও বাড়বে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যেখানে এয়ারবাস শক্ত অবস্থানে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে থাকবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাণিজ্যিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ইইউর অর্থনৈতিক উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রত্যাশা করি। এর অর্থ হলো বাংলাদেশকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেটরদের অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের তুলনায় কম সুবিধা দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, বোয়িং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২৫টি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, আর এয়ারবাস দিয়েছে ১৪টির। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি এ৩৫০ ও ৪টি এ৩২০ নিও।