জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে অব্যাহত সংঘাতের ফলে বিশ্ব একটি সংকটের দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সংঘাতের বিস্তার হলে যে আগুন জ্বলবে, তা কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

আজ শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উদ্বোধনী বক্তব্যে গুতেরেস এসব কথা বলেন। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে এই বৈঠক আহ্বান করা হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, এই সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে ‘পারমাণবিক প্রশ্ন’। তিনি বলেন, ‘ইরান বারবার বলেছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র চাইছে না। কিন্তু আসুন আমরা স্বীকার করি, এখানে আস্থার অভাব রয়েছে।’

সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ একটি সমাধানে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস বলেন, ‘আমি যুদ্ধ বন্ধের এবং আন্তরিকতাসহ আলোচনায় ফিরে আসার আবেদন জানাচ্ছি।’

এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পাশাপাশি জেনেভায় ইউরোপের তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। বৈঠকের আগে আলোচনার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

এর আগে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের জনগণের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান নিজেকে রক্ষা করছে।

চলমান কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই ইরানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্ভূত বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক চুক্তি করতে ১৫ জুন আমেরিকানদের সঙ্গে আমাদের দেখা করার কথা ছিল।’

এর আগেই হামলা চালানো হয় উল্লেখ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি ছিল কূটনীতির বিশ্বাসঘাতকতা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ ব্যবস্থার ভিত্তির ওপর এক নজিরবিহীন আঘাত।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অন্যথায় জাতিসংঘভিত্তিক সমগ্র আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

আরও পড়ুনইরানের জনগণের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পরর ষ ট রমন ত র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

পিআরেরও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে, কিন্তু অধিকাংশই ভালো দিক: ইসলামী আন্দোলন

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন প্রশ্নে গণভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না চায়, তাহলে ইসলামী আন্দোলন এ পদ্ধতির দাবি আর করবে না।

সৈয়দ ফয়জুল করিম আরও বলেন, ‘পিআরের বিপক্ষে কিছু নাই, তাই বলব না। কেউ ওষুধ যখন সেবন করে, সেখানে লেখা থাকে—এর সাইড এফেক্ট (পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) আছে। পিআরের ব্যাপারেও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে। কিন্তু এর অধিকাংশই ভালো দিক।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিলের আগে এক সমাবেশে এ কথাগুলো বলেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির। ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন।

মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে আজাদ প্রোডাক্টসের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় দাবি করে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, জনগণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের উপকারটা কী, তা জেনে গেছে। জরিপে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ জনগণ পিআরের পক্ষে।

পিআর সিস্টেম নির্বাচন নিয়ে বিএনপির আপত্তি থাকার কথা নয় মন্তব্য করে সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন, ৯০ শতাংশ ভোট নাকি তাদের। যদি ৯০ শতাংশ ভোট তাদের হয়, তাহলে তারা আসন পাবে ২৭০টির বেশি। তাতে তাদের সরকার গঠন করতে সমস্যা কোথায়? তারা ঝামেলামুক্ত সরকার গঠন করতে পারবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির বলেন, তিনি (তারেক রহমান) বলেছেন, তাঁরা জাতীয় সরকার গঠন করবেন। সবার সম্মিলিত যে সরকার, সেটাই তো জাতীয় সরকার। পিআর পদ্ধতিতেই সব দলের, মতের ও আদর্শের মানুষজন সংসদে যাবে। সুতরাং বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী তো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রয়োজন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কোনোভাবেই গানের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এ দেশের মুসলমানদের ট্যাক্সের (কর) পয়সা দিয়ে গানের শিক্ষকের প্রয়োজন নেই। সেখানে ইংরেজি শিক্ষক দেন, কম্পিউটার শিক্ষক দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মনের ভাষা বুজতে হবে: গয়েশ্বর রায়
  • যেকোনো মূল্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক 
  • পিআর পদ্ধতি চাইলে জনগণের কাছে যান: ডা. জাহিদ
  • বরগুনার পূর্বের তিনটি আসন পুনর্বহাল দাবি 
  • ‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’
  • ‘জনগণ এবারও তাদের পিআর বোঝাবে, পিআর ছাড়া নির্বাচন হবে না’
  • রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা জরুরি
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ কয়েকটি দাবিতে রাজধানীতে সাত দলের বিক্ষোভ-সমাবেশ
  • চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর যৌথ মহড়ায় ‘ইনক্যাপ সিরিমনি’
  • পিআরেরও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে, কিন্তু অধিকাংশই ভালো দিক: ইসলামী আন্দোলন