সিন্ধু চুক্তি আর পুনর্বহাল নয়: অমিত শাহ
Published: 21st, June 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর পুনর্বহাল না করার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। গতকাল শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই ঘোষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক তিনটি নদীর পানিবণ্টনের এ চুক্তি পুনর্বহাল নিয়ে পাকিস্তানের আশাবাদ আরও ফিকে হয়ে গেল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অমিত শাহ বলেছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর কখনও পুনর্বহাল করা হবে না। পাকিস্তানে যে পানি যাচ্ছিল, তা অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য সরিয়ে নেওয়া হবে। দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে এই চুক্তির আওতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু নদী ব্যবস্থার পানি ব্যবহার করছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে এক হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর দিল্লি ওই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তানকে দায়ী করে চুক্তিতে নিজেদের অংশগ্রহণ ‘স্থগিত’ করে।
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় ভূখণ্ড হয়ে পাকিস্তানে প্রবাহিত তিনটি বড় নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত করেছিল ইসলামাবাদ। এই তিনটি নদীর অববাহিকাতেই পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ চাষাবাদ হয়ে থাকে। পাকিস্তান হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও চুক্তিটি এখন কার্যকর নয়। যদিও গত মাসে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের পর একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, ‘না, এটা আর কখনও পুনর্বহাল হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে পানি এতদিন পাকিস্তানে যাচ্ছিল, সেটি আমরা রাজস্থানে নেওয়ার জন্য একটি খাল নির্মাণ করব। পাকিস্তান যে পানি এত দিন অন্যায়ভাবে পাচ্ছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ক্ষমতাধর সদস্য অমিত শাহের এই মন্তব্যে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা এখন আরও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। রয়টার্সের অনুরোধের পরও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অতীতে তারা বলেছে, চুক্তিতে একতরফাভাবে কোনো পক্ষের সরে যাওয়ার সুযোগ নেই এবং পাকিস্তানের দিকে বয়ে চলা নদীর পানি আটকে দেওয়া হলে সেটিকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়া, চুক্তি স্থগিতের ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়েও ভাবছে ইসলামাবাদ।
ট্রাম্পের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছি: মোদি
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমন্ত্রণ জানালেও ওয়াশিংটন সফরে যাননি বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে এক জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে মোদি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে ফোন করে ওয়াশিংটনে আলোচনার ও মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানান। আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে নম্রভাবে তাঁর আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে বলেছি, ‘আমাকে উড়িষ্যায় প্রভু জগন্নাথের ভূমিতে ফিরতে হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যান্ড অ্যাবা’র গল্প নিয়ে বই
সুইডেনের স্টকহোমে অ্যাগনেথা ফাল্টস্কগ, বিয়র্ন উলভাউস, বেনি অ্যান্ডারসন এবং অ্যানি-ফ্রিড লিংস্ট্যাড ১৯৭২ সালে গড়ে তোলেন অনন্য এক সংগীত দল ‘অ্যাবা’। বিশ্বে সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সফল ব্যান্ডগুলোর একটি অ্যাবার অনবদ্য যাত্রার উত্থান, ছন্দপতন, বিশ্বজয় এবং আবার ফিরে আসার গল্প নিয়ে সুইডিশ সংগীত সাংবাদিক গ্র্যাডভাল লিখেছেন ‘দ্য স্টোরি অব অ্যাবা: মেলানকলি আনডিসকভার’।
সংগীত সাংবাদিক গ্র্যাডভাল বইটি সুইডিশ পপ ব্যান্ড অ্যাবার তারকাখ্যাতির উত্থানের ঘটনা অসাধারণভাবে বর্ণনা করেছেন। প্রাথমিকভাবে বিয়র্ন, বেনি জুটি ১৯৬৬ সালে সংগীতজগতে প্রবেশ করেন। পরে অ্যাগনেথা ও অ্যানি-ফ্রিডের সঙ্গে দল বেঁধে ১৯৭২ সালে অ্যাবা গঠন করেন। লেখক ১৯৭৩ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা ‘ওয়াটারলু’র মাধ্যমে ‘মাম্মা মিয়া’ এবং ‘ড্যান্সিং কুইন’-এর মাধ্যমে তাদের বিপর্যস্ত জয় থেকে এই দলের গতিপথের রেখাচিত্র নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। ১৯৭৬ সালের যুগান্তকারী অ্যালবাম ‘অ্যারাইভাল’-এর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছেন নিজ ভূমিতে দলটি কতটা প্রভাবশালী ছিল। লেখক এই শিল্পীদের সঙ্গে পরিচিত থাকায় বিষয়গুলো নানা গভীর বিশ্লেষণে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।
গ্র্যাডভাল তুলে ধরেন কীভাবে অ্যাবা এতটা জনপ্রিয়তা পেয়ে বিশ্বসংগীত ইতিহাসে যথাযোগ্য স্থান করে নিতে সক্ষম হয়। ব্যক্তিগত জীবনকে তাদের ক্যারিয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল, তা কখনও কখনও ‘উইনার টেইক অল’-এর মতো গানের মধ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিয়র্ন ও অ্যাগনেথার বিবাহ বিচ্ছেদ এবং গানে এর প্রভাব গভীর চেতনায় গ্র্যাডভাল তুলে ধরে দারুণভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এই দম্পতির সম্পর্কের অবনতির ফলে ১৯৮২ সালে বিশ্বখ্যাত ব্যান্ডটি অন্ধকারে পদার্পণ করে। যদিও তারা কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা দেননি। দীর্ঘ সময় পর ২০১৬ সালে আবার একসঙ্গে তারা বাজানো শুরু করেন।
কাঠামোগতভাবে প্রত্যেক সদস্যের জীবনী দিয়ে শুরু করার পরিবর্তে লেখক বইটি ১৯৮২ সালে গ্রুপের পতনের মাধ্যমে শুরু করেন। একক গান ‘দ্য ডে বিফোর ইউ কাম’, তারপর সুইডেনের ড্যান্সব্যান্ডভোকাল সংগীতের অন্বেষণে চলে যান লেখক। এবং মূল সংগীত মুহূর্ত এবং প্রভাবের বর্ণনা করেন। গ্র্যাডভাল অ্যাবার সাফল্যের মূলে বিষণ্ন, সিন্থ-মিশ্রিত সুর এবং আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ গানের মধ্যে একটি টান খুঁজে পান বলে বর্ণনা করেন। তিনি দাবি করেন, এটি তখন এমন একটি গভীরতা তৈরি করে, যা তাদের সংগীতকে একই রকম পপ ট্র্যাক থেকে আলাদা করে।’
lগ্রন্থনা :: আসাদুজ্জামান