বাগমারার নিমাই বিলে ফের পুকুর খনন, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
Published: 22nd, June 2025 GMT
কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষি জমিতে জোর জবরদস্তিতে পুকুরখনন শুরু হয়েছে। এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে শনিবার (২১ জুন) সংবাদ সম্মেলন করেছে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি, রাজশাহী মহানগর।
এদিন বেলা ১১টায় নগরের গণকপাড়ার একটি ক্যাফেতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বাগমারা উপজেলার আহ্বায়ক প্রভাষক আমজাদ হোসেন।
এসময় নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, আইনজীবি হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, ভুক্তভোগী ঈশিতা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোর জবরদস্তি অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষি জমি রক্ষায় এ বিষয়টি নিয়ে ৪-৫ মাস যাবৎ প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার জন্য মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এর পরেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ১৯ মার্চ আদালতে একটি মামলা করা হয়। বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামলাটির তদন্ত করছেন।
এ বিষয়ে কোন অগ্রগতি না হলে গত ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট করা হয়। উচ্চ আদালত বাগমারা উপজেলায় পুকুর খননে স্থগিতাদেশসহ জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এরই মধ্যে সম্প্রতি এই পুকুর খনন নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে কিছু দিনের জন্য কাজ বন্ধ হয়। কিন্তু এখন আবার পুকুর খনন শুরু হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসামিরা আইন, উচ্চ আদালতের রিট পিটিশনসহ সকল কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিমাই বিলের প্রায় ৬০ বিঘা কৃষি জমিতে ঈদের ছুটিতে আবারো জোরেশোরে খনন শুরু করেছে। কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ভূমিদস্যুরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৭টি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খনন কাজ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খেকোরা। বাগমারা থানা, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন তারা। অবৈধ খননের কারণে কৃষকদের আবাদ নষ্ট হয়েছে এবং জমি আবাদের অনুপযোগী হওয়ায় কৃষকরা অনিশ্চিত ভবিষতের মধ্যে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হলো- অবিলম্বে কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, পুকুর খননে সহতায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, এসি-ল্যান্ড, ইউএনওকে অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা; জোরপূর্বক পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং সমগ্র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত কর ও রাজশহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের যে মহোৎসব চলছে তা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করা।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিমাই বিলে পুকুর খনন বন্ধ করতে ঈদের আগে আমি অন্তত সাতবার গিয়েছি। এসি-ল্যান্ড তিন-চারবার গেছেন। তখন পুকুর খনন বন্ধ হয়েছিল। তারপর ঈদের ছুটিতে দুইদিন কাজ চলেছে। আমি খবর পেয়ে পরে গিয়ে আর পাইনি। এখন রাতে যদি রাতে পুকুর কাটে, তাহলে তখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।’’
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ক র খনন ব ন বন ধ ব গম র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিকাশ অ্যাপে এখন পাওয়া যাচ্ছে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ব্যবস্থাপনা আরও সহজ ও স্বচ্ছ করতে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে নতুন ‘রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট’ সেবা। এই সুবিধার মাধ্যমে গ্রাহকেরা যেকোনো সময় তাঁদের অ্যাকাউন্ট বা হিসাবে গ্রহণ করা রেমিট্যান্সের বিস্তারিত বিবরণ বা স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে তাঁদের আর্থিক হিসাব রাখা সহজ, দ্রুত ও সুশৃঙ্খল হবে।
এই স্টেটমেন্ট তথা রেমিট্যান্স হিসাবের বিস্তারিত বিবরণ শুধু ব্যয় পরিকল্পনার জন্যই নয়, আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে। প্রবাসীদের প্রিয়জনদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে বিকাশ এই সেবা চালু করেছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। এতে বলা হয়, গ্রাহকবান্ধব এই নতুন ফিচারটি বিকাশ অ্যাপের ‘রেমিট্যান্স’ আইকনের অধীন পাওয়া যাবে, যেখানে তিনটি আলাদা ট্যাব রয়েছে—দেশ অনুযায়ী অপারেটর, রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট ও রিসিট। এর মধ্যে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট ট্যাবে ট্যাপ (ক্লিক) করে গ্রাহকেরা খুব সহজেই রেমিট্যান্সের বিস্তারিত বিবরণ (স্টেটমেন্ট) জানতে পারবেন।
স্টেটমেন্টের সময়সীমা নির্বাচনেও রয়েছে নমনীয়তা। ব্যবহারকারী চাইলে সর্বশেষ ৩০ দিন, ১৮০ দিন এবং সম্পূর্ণ কর-বছর অথবা নিজের পছন্দ অনুযায়ী দেওয়া তারিখের ভিত্তিতে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ দুবার এবং মাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার স্টেটমেন্ট রিকোয়েস্ট করতে পারবেন। রিকোয়েস্ট করার পর সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাপে নোটিফিকেশন চলে আসবে। তখন স্টেটমেন্টটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্টেটমেন্টটি পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। আর এই পুরো সেবাটি গ্রাহকেরা একেবারেই বিনামূল্যে পাবেন।
স্টেটমেন্টের ওপরের অংশে থাকবে গ্রহীতার নাম, বিকাশ নম্বর, গ্রহীতার ধরন, স্টেটমেন্টের সময়সীমা ও ইস্যুর তারিখ। নিচের অংশে দেখা যাবে মোট কতটি রেমিট্যান্স লেনদেন হয়েছে এবং সে অনুযায়ী মোট কত ডলার গ্রহণ করা হয়েছে।
এই স্টেটমেন্টে শুধু রেমিট্যান্সের মোট পরিমাণ ছাড়াও প্রতিটি লেনদেনের বিস্তারিত তথ্যও অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে থাকছে। অর্থাৎ অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের মতো রেমিট্যান্স গ্রহণের তারিখ ও সময়, পাঠানোর দেশ, সংশ্লিষ্ট সেটেলমেন্ট ব্যাংকের নাম, মানি ট্রান্সফার অপারেটরের (এমটিও) নাম এবং পাঠানো রেমিট্যান্সের বাংলাদেশি টাকায় সমপরিমাণ মূল্য স্পষ্টভাবে দেখানো হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসা সব রেমিট্যান্সেরই বিস্তারিত তারিখ অনুসারে স্টেটমেন্টে যুক্ত থাকবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিকাশ জানায়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সকে সহজ, সুরক্ষিত ও কার্যকরভাবে প্রিয়জনের হাতে পৌঁছে দিতে বিকাশ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স সবচেয়ে সহজে তাঁর প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিতে ধারাবাহিকভাবে নানা সুবিধা যুক্ত করে চলেছে বিকাশ। দেশে থাকা পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে দেশের অর্থনীতিকেও গতিশীল করছে।
বিকাশ জানায়, এখন পর্যন্ত দেশে থাকা প্রিয়জনদের ৪০ লাখের বেশি বিকাশ অ্যাকাউন্টে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমানে বিশ্বের ১৪০টির বেশি দেশ থেকে ১১০টি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরের (এমটিও) মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৫টি শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকে রেমিট্যান্স সেটেলমেন্ট হয়ে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে প্রাপকের বিকাশ অ্যাকাউন্টে।