যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানো ইরানের সেই ৩ পারমাণবিক স্থাপনা কোথায়, কী আছে সেগুলোতে
Published: 22nd, June 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করার পরপরই এই হামলা চালানো হলো।
যে তিন গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা হয়েছে, সেগুলো হলো নাতাঞ্জ, ফর্দো ও ইস্পাহান। এগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্রবিন্দু, যেগুলোর ওপর আগেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল।
নাতাঞ্জ
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংগঠন নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভ (এনটিআই) অনুযায়ী, নাতাঞ্জে ছয়টি ভূ–উপরিস্থ ভবন এবং তিনটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে ২টি স্থাপনায় ৫০ হাজার সেন্ট্রিফিউজ রাখার ক্ষমতা রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রথম হামলায় এই পারমাণবিক কেন্দ্রটি লক্ষ্যবস্তু ছিল। স্যাটেলাইট ছবি ও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নাতাঞ্জের ‘পাইলট ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট’–এর উপরিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে।
এই কেন্দ্র ২০০৩ সাল থেকে চালু রয়েছে। ইরান এখানে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছিল বলে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে। উল্লেখ্য, অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়ামকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করতে হয়।
ইসরায়েলের হামলার সময় দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওই হামলায় নিচের স্তরে যেখানে সেন্ট্রিফিউজ রাখা হয়, সেখানকার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যেহেতু স্থাপনাগুলোর বড় অংশই ভূগর্ভে, তাই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করাই সেখানে কার্যকর হামলার প্রধান কৌশল ছিল।
ফর্দো
ফর্দো স্থাপনাটি সম্পর্কে এখনো অনেক তথ্য অজানা। এটি কওম নামের একটি শহরের কাছাকাছি অবস্থিত। পাহাড়ের গভীরে নির্মিত একটি সুরক্ষিত ও গোপন স্থাপনা আছে এখানে।
ইসরায়েলি গোয়েন্দারা কয়েক বছর আগে ইরান থেকে যেসব গোপন নথি চুরি করেছিল, তার মাধ্যমেই মূলত এই সাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা গেছে।
মূল কক্ষগুলো মাটির ৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে অবস্থিত। বিমান হামলা করে একে ধ্বংস করা খুবই কঠিন। আগের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই এত গভীরে আঘাত হানার মতো বোমা রয়েছে। যদিও বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, সেগুলো দিয়ে এই সাইট ধ্বংস না–ও হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি (আইএসআইএস) বলেছে, ‘ফর্দো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট’-এ ৬০ শতাংশ শুদ্ধ ইউরেনিয়ামকে ২৩৩ কেজি অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়ামে রূপান্তর করতে ইরানের মাত্র তিন সপ্তাহ লাগতে পারে। এটি দিয়ে ৯টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার (আএইএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফর্দোতেও ইরান ৬০ শতাংশ শুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। এখানে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭০০টি সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে।
ইস্পাহান
ইস্পাহান ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় পারমাণবিক গবেষণা কমপ্লেক্স।
এনটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই স্থাপনা চীনের সহায়তায় নির্মাণ করা হয়। আর এটি চালু হয় ১৯৮৪ সালে। এনটিআই জানায়, ইস্পাহানে প্রায় তিন হাজার বিজ্ঞানী কাজ করেন। একে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘কেন্দ্রস্থল’ বলে ধারণা করা হয়।
এই কেন্দ্রে চীনের সরবরাহ করা তিনটি ছোট গবেষণা চুল্লি চালু রয়েছে। সেই সঙ্গে এখানে একটি কনভার্সন ফ্যাসিলিটি (পরিবর্তন কেন্দ্র), একটি জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র, একটি জিরকোনিয়াম ক্ল্যাডিং কারখানা এবং আরও কিছু প্রযুক্তি স্থাপনা ও গবেষণাগার রয়েছে বলে জানিয়েছে এনটিআই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউর ন য় ম ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরো পড়ুন: সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রীর ড্রাইভারের বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথি জব্দ
আরো পড়ুন:
রেলের সাবেক ডিজি তৌহিদুলসহ ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
সম্পদের পাহাড়: বিমানের পরিচালক মোমিনুলের দুর্নীতির খোঁজে দুদক
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ হাসানুল ইসলাম এ আদেশ দেন। দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিস্তারিত আসছে...
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ