পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার তিন দিনের মাথায় অবশেষে খুলনার পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মো. নাসিমুল গণি ওরফে নাসিমকে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (২২ জুন) ভোরে খুলনার খালিশপুর মুজ্গুনী পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবন থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় দিঘলিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। 

এর আগে সর্বশেষ গত ২০ জুন পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় তাকে প্রধান আসামি করা হয়। তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন। 

নাসিম দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা এলাকার বাসিন্দা মৃত আ.

গফুরের ছেলে। গণেশ হত্যা মামলায় আদালত তাকে ৩২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

পুলিশ জানায়- নাসিমের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, বাগেরহাটের ফকিরহাট, হরিণটানাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুলনার আলোচিত গণেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, ফকিরহাটের জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি, অস্ত্র কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। 

তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং অপর একটি হত্যা মামলায় ৩২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে। 

নাসিম ২০০২ সালে গণেশ হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নেন। খুলনার বিএল কলেজ গেটে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রিয়াজ শাহেদ হত্যা প্রচেষ্টা মামলারও আসামি তিনি। 

সর্বশেষ গত বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যার দিকে খুলনার দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এসআই তারেকের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি নাসিমকে গ্রেপ্তারের জন্য উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাট এলাকায় গেলে তার অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশের তিন জন সদস্য সামান্য আহত হন। 

এ ঘটনার পর দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযান শুরু করলেও নাসিমকে আটক করতে পারেনি। তবে রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিম বাহিনীর দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন বলেন, “উপজেলা ফরমাইশ খানা গ্রামে চরমপন্থী নেতা নাসিমকে আটক করতে গেলে তার বাহিনী পুলিশের উপর চড়াও হয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় নাসিমের বাহিনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ব্যাপারে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ১৯ জুন মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় নাসিমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়।” 

তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল ও আলামিনকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে, সর্বশেষ খুলনার খালিশপুর মুজগুন্নি এলাকার একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় নাসিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রবিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চরমপন্থী নেতা নাসিম দুই বছর আগে এলাকায় ফিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শিদী এবং শেখ পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন। তিনি দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বলেও এলাকায় প্রচার রয়েছে।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র কর উপজ ল সদস য র একট

এছাড়াও পড়ুন:

ছিনিয়ে নেওয়ার ৩ দিন পর চরমপন্থী নেতা নাসিম গ্রেপ্তার

পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার তিন দিনের মাথায় অবশেষে খুলনার পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মো. নাসিমুল গণি ওরফে নাসিমকে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (২২ জুন) ভোরে খুলনার খালিশপুর মুজ্গুনী পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবন থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় দিঘলিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। 

এর আগে সর্বশেষ গত ২০ জুন পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় তাকে প্রধান আসামি করা হয়। তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন। 

নাসিম দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা এলাকার বাসিন্দা মৃত আ. গফুরের ছেলে। গণেশ হত্যা মামলায় আদালত তাকে ৩২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

পুলিশ জানায়- নাসিমের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, বাগেরহাটের ফকিরহাট, হরিণটানাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুলনার আলোচিত গণেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, ফকিরহাটের জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি, অস্ত্র কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। 

তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং অপর একটি হত্যা মামলায় ৩২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে। 

নাসিম ২০০২ সালে গণেশ হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নেন। খুলনার বিএল কলেজ গেটে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রিয়াজ শাহেদ হত্যা প্রচেষ্টা মামলারও আসামি তিনি। 

সর্বশেষ গত বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যার দিকে খুলনার দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এসআই তারেকের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি নাসিমকে গ্রেপ্তারের জন্য উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাট এলাকায় গেলে তার অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশের তিন জন সদস্য সামান্য আহত হন। 

এ ঘটনার পর দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযান শুরু করলেও নাসিমকে আটক করতে পারেনি। তবে রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিম বাহিনীর দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন বলেন, “উপজেলা ফরমাইশ খানা গ্রামে চরমপন্থী নেতা নাসিমকে আটক করতে গেলে তার বাহিনী পুলিশের উপর চড়াও হয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় নাসিমের বাহিনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ব্যাপারে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ১৯ জুন মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় নাসিমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়।” 

তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল ও আলামিনকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে, সর্বশেষ খুলনার খালিশপুর মুজগুন্নি এলাকার একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় নাসিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রবিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চরমপন্থী নেতা নাসিম দুই বছর আগে এলাকায় ফিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শিদী এবং শেখ পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন। তিনি দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বলেও এলাকায় প্রচার রয়েছে।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছিনিয়ে নেওয়ার ৪ দিনের মাথায় চরমপন্থি নেতা নাসিম গ্রেপ্তার