ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় গতকাল শনিবার মধ্যরাতের পর বোমা হামলায় চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলার প্রেক্ষাপটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, ৪৫ মিনিটের এই ফোনালাপের উদ্যোগ এসেছিল ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের কাছ থেকে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরেই তিনি এই উদ্যোগ নেন।

নরেন্দ্র মোদি সাম্প্রতিক এই অস্থিরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অবিলম্বে উত্তেজনা কমানো এবং সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন মোদি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন এবং ভারতকে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন।

এদিকে এই হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। বলেছে, ইরানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র অপরাধ করেছে। মার্কিন সরকার অতীতের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধগুলো থেকে শিক্ষা নেয়নি। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আজকের বোমা হামলার জন্য পরিণতি ভোগ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বিবৃতিতে আইআরজিসি বলছে, বারবারের ব্যর্থ হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্র শিক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে। এবারের হামলায় অংশ নিয়ে ওয়াশিংটন আগ্রাসনের সামনের সারিতে এসে দাঁড়িয়েছে।

সতর্ক করে আইআরজিসি বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির সংখ্যা, বিস্তার এবং আকার কোনো শক্তি নয়। বরং এর ফলে এই অঞ্চলে তাদের দুর্বলতা দ্বিগুণ করেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা করে। এর জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করছে ইরান। ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন,সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র অগ্রভাবে থাকলেও গত ১৮টি হামলায় অগ্রভাগে ছিল ড্রোন। আর ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেই ড্রোন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ শনিবারও একটি ড্রোন উত্তর ইসরায়েলে আঘাত হানে। 

ইরানের আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার শাসনের বিরুদ্ধে সবশেষ পাল্টা হামলায় আত্মঘাতী ও যুদ্ধ ড্রোনের পাশাপাশি নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র।

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’—এর অংশ হিসেবে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৮ দফা হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থল, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রসদ ও পরিচালনা কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে তারা 'শাহেদ-১৩৬' নামের যুদ্ধ ও আত্মঘাতী ড্রোনের ঝাঁক ব্যবহার করেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরানের এই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক হামলা চালিয়েছে। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি বিরল ঘটনা, যেখানে ইরানের একমুখী আক্রমণাত্মক ড্রোন সফলভাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।

তাসনিম নিউজের তথ্যমতে, আইআরজিসি জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতভর দখলদার ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে একাধিক স্কোয়াডে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন টানা অভিযান চালিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, আজ শনিবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন বেইত শেইন শহরে একটি ড্রোন আঘাত হানে। এতে একটি দুইতলা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিস্ফোরণে বাড়িটির পাশে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, জানালা ও দরজা উড়ে গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তারা ধ্বংসস্তূপের ভেতর তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। হতাহত কারও খোঁজ পায়নি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, ইরানের দ্বিতীয় ড্রোনটি ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি খোলা এলাকায় আঘাত হানে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান যে বিপুলসংখ্যক ড্রোন ছুড়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করা হয় বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান আজ শনিবারের হামলায় অন্তত ছয়টি ড্রোন ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ড্রোন আরাভা মরুভূমি ও গোলান মালভূমিসহ অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছানোর আগেই ঠেকানো হয়।

ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তার মতে, গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান হামলার জন্য হাজারের বেশি ড্রোন পাঠায়। যা লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই নিষ্ক্রিয় করা হয়।

আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের এই ড্রোনগুলো আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দখলদাররা আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে পালাতে বাধ্য হয়েছে। 

এলিট বাহিনী জানিয়েছে, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে ইরানের এই ‘হাইব্রিড অপারেশন’ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে চালানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামলার জন্য পরিণতি ভোগ করবে যুক্তরাষ্ট্র: ইরানের বিপ্লবী গার্ড
  • আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল
  • এবার আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল
  • সরাসরি: আইআরজিসির আরেক কমান্ডারদের হত্যার দাবি ইসরায়েলের
  • ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার কাছে ভূমিকম্প, আইআরজিসির ‘পরীক্ষা চালানোর’ গুঞ্জন
  • ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার কাছে ভূমিকম্প, ‘পরীক্ষা চালানোর’ গুঞ্জন আইআরজিসির
  • আইআরজিসির ড্রোন ইউনিটের দ্বিতীয় শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
  • সরাসরি: ইরানে গ্রেপ্তার ইসরায়েলের ২২ গুপ্তচর
  • ইরানে নতুন সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগ