বাংলাদেশে বাজেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদি চিন্তার অভাব এবং নীতির সমন্বয়হীনতা জাতীয় অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। বাজেট তৈরি হয়, কিন্তু যথাযথ উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয় না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় এমন মত দিয়েছেন। 

সোমবার মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাজেট বিষয়ক উপলব্ধি: চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ’ শীর্ষক এ আলোচনায় তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। 

ড.

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা জানতে হবে। পরিকল্পনা কত বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে এবং কীভাবে অর্থায়ন করবে– এসব প্রশ্ন তাদের করতে হবে। এগুলো ছাড়া বাজেট শুধু কিছু টুকরোর সমন্বয় হিসেবে থাকবে। 

রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজায় এমসিসিআইর নিজস্ব কার্যালয়ে আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি কামরান টি. রহমান। পিআরআইর চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার সূচনা বক্তব্য দেন। পিআরআইর গবেষণা পরিচালক ড. বজলুল হক খন্দকার এবং এমসিসিআইয়ের শুল্ক ও কর বিষয়ক কমিটির সদস্য আদীব এইচ খান আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

ড. আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠী বিশাল। কিন্তু তাদের জন্য সুদূরপ্রসারী কোনো পরিকল্পনা নেই। ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সী মানুষ দেশের ৩০ শতাংশ। জাতীয় নেতৃত্বের গড় বয়স ৭৫ বছর। তারা তরুণদের আকাঙ্ক্ষা ঠিকমতো অনুধাবন করতে পারেন? 

তিনি তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য একক জাতীয় সেবা চালুর ধারণা দেন। যেখানে তরুণদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ, আইটি প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক হবে। এতে মাদকাসক্তি কমবে, শ্রম উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং জাতীয় বাজেটের ওপর চাপও তুলনামূলকভাবে কমবে।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের ছেলেমেয়েরা যখন আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যার বানাতে পারে, তখন বিদেশি সফটওয়্যার কেন লাগবে? সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের শর্ত থাকে, যার ফলে দেশীয় সক্ষমতা উপেক্ষিত হয়। আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়। জাতীয় তথ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ে। 

তিনি বলেন, কোরিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের সময় তাদের সাধারণ মানুষ স্বর্ণ দান করেছে। কারণ তারা বিশ্বাস করতো যে, জাতি আগে। আমাদের সমস্যা হলো, আমরা আশা হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের কোনো লক্ষ্য নেই, ঐক্য নেই। নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না করে বিদেশে চিকিৎসা, শিক্ষা এবং টাকা পাচারকেই সমাধান ভাবী। অথচ থাইল্যান্ডের রাজা বিদেশে চিকিৎসা না নিয়ে নিজ দেশে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল গড়েছেন, যার ফল তারা পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা কমিশন, এনবিআর– সবার গবেষণা বিভাগ আছে। কিন্তু কেউ কারও সঙ্গে সমন্বয় করে না। এক মন্ত্রণালয় যে রাস্তা বানায়, পরদিন আরেক মন্ত্রণালয় তা  কেটে ফেলে। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হয়। নীতির সংহতি ও সমন্বয় ছাড়া কোনো কার্যকর পরিকল্পনা সম্ভব নয়।  

আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, এটি নিখুঁত না হলেও ব্যবসাবান্ধব। সবাই কর ছাড় চায়। কিন্তু নিজে থেকে কর দিতে চায় না। অনেকে মনে করেন, বিদেশিরা ঋণ দিয়ে আমাদের উন্নয়ন করবে।  কিন্তু প্রকৃত অংশীদারিত্ব তখনই হয়, যখন কেউ এসে বিনিয়োগ করে এবং  প্রযুক্তি দেয়। বিদেশি সহায়তা নয়, বিদেশি বিনিয়োগ চাইতে হবে।

এমসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটে টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করায় যেসব প্রতিষ্ঠানের মুনাফার হার কম, তাদের টিকে থাকা কঠিন হবে।

পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার বলেন, আমাদের  যথাযথ ট্যারিফ নীতি নেই। তাহলে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা কী করে হবে?

বজলুল হক খন্দকার বলেন, কম রাজস্ব দুর্বল বাস্তবায়ন- এই হলো দেশের বাজেটের চরিত্র। এমন বাজেট দিয়ে বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান হয় না। 

আদিব এইচ খান বলেন, অতিরিক্ত কর পরিশোধ করলে পরের বছরে তা সমন্বয়ের সুযোগ এবারের বাজেটে রাখা হয়েছে। তবে কম মুনাফার কোম্পানি এ সুবিধা নিতে পারবে বলে মনে হয় না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র এমস স

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল এন্ট্রি ও বিল বিবরণী, ৯টি নিয়ম প্রকাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা-২০২৩–এর বিল সফটওয়ারের মাধ্যমে প্রধান পরীক্ষক কর্তৃক উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল এন্ট্রি ও বিল বিবরণী পাঠানোর দরকারি ৯টি নিয়ম প্রকাশ করেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর।

বিল বিবরণী পাঠানোর নিয়ম

১. শুধু প্রধান পরীক্ষকেরা নিচের লিংকের মাধ্যমে সফটওয়ারে প্রবেশ করে প্রধান পরীক্ষকসহ তাঁর অধীনে নিরীক্ষক ও পরীক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল দাখিল করবেন।

২. প্রধান পরীক্ষক কর্তৃক বিল এন্ট্রি ও বিল বিবরণীর তথ্য পাঠানোর জন্য কলেজের নিবন্ধিত ই-মেইল Address ব্যবহার করে সফটওয়ারে প্রবেশ করতে হবে।

৩. URL Web Address:http://103.113.200.36/PAMS/CollegeLogin.aspx ব্যবহার করুন।

আরও পড়ুনপ্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে পাচ্ছেন উচ্চতর স্কেল ২২ ঘণ্টা আগে

8. Login করার পর মেনু অপশন থেকে Head Examiner Bill Submission select করে Head Examiner & Examiner এর বিলের তথ্যাবলি Update করতে হবে। Scrutinizer-এর বিল Add new-এ গিয়ে Entry করতে হবে। কোনো তথ্য ভুল হলে Confirm করার আগ পর্যন্ত Update করা যাবে।

৫. সব তথ্য সন্নিবেশিত হওয়ার পর Confirm করতে হবে। Confirm করার পর কোনো তথ্য পরিবর্তন করা যাবে না।

৬. সব তথ্য Confirm করার পর বিল বিবরণী Download করে প্রিন্ট করে প্রধান পরীক্ষকের স্বাক্ষরিত কপি উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ডিগ্রি (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষ শাখায় ডাকযোগে বা হাতে হাতে পাঠাতে হবে।

৭. বিল এন্ট্রি–সংক্রান্ত যেকোনো সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখায় বিষয়ভিত্তিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সমাধান না হলে প্রয়োজনে উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ০১৭১১৫৬২১২৪ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন‘রাজার অতিথি’ হওয়ার সুযোগ কমনওয়েলথ স্কলারশিপে, আবেদন কীভাবে ২ ঘণ্টা আগে

৮. বিল পাঠানোর পর কোন প্রকার সংশোধন, সংযোজন বা পরিবর্তন করা যাবে না। ২৫ সেপ্টেম্বর হতে ২৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল সফটওয়ারের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। নির্ধারিত তারিখের পর বিল এন্ট্রি সফটওয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

৯.অবশ্যই সোনালী ব্যাংক হিসাব নম্বর (১৩ সংখ্যার) সচল থাকতে হবে।

# বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, দিনে ২০০ টাকা ভাতা, সুযোগ পেতে করুন আবেদন৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি নয়, দক্ষতাই এনে দিচ্ছে ছয় অঙ্কের বেতন
  • পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লাখ আনসার-ভিডিপি
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল এন্ট্রি ও বিল বিবরণী, ৯টি নিয়ম প্রকাশ